সংবাদমাধ্যমের সমস্যা থেকে বৈদ্যুতিন অসাধুতা— ভারতের ব্যধি পোল্যান্ডেও
অশোক সেনগুপ্ত কলকাতা, ১২ নভেম্বর (হি.স.): “মানুষ কাগজ পড়ছে না। পড়ার অভ্যেস কমে যাচ্ছে! সামাজিক মাধ্যমে ঝুঁকছে সবাই! আমরা কিছুটা চিন্তিত তো বটেই!” প্রায় ৬,৫১৩ কিলোমিটার দূর থেকে কলকাতায় এসে অস্বস্তির সঙ্গে কথাটা বললেন পোলান্ডের বিশিষ্ট অধ্যাপিকা, আ
সংবাদমাধ্যমের সমস্যা থেকে বৈদ্যুতিন অসাধুতা—


অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ১২ নভেম্বর (হি.স.): “মানুষ কাগজ পড়ছে না। পড়ার অভ্যেস কমে যাচ্ছে! সামাজিক মাধ্যমে ঝুঁকছে সবাই! আমরা কিছুটা চিন্তিত তো বটেই!” প্রায় ৬,৫১৩ কিলোমিটার দূর থেকে কলকাতায় এসে অস্বস্তির সঙ্গে কথাটা বললেন পোলান্ডের বিশিষ্ট অধ্যাপিকা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ ডঃ মালগোরজাটা বনিকোওস্কা।

ডঃ বনিকোওস্কা ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস’-এর প্রেসিডেন্ট, ‘ফরেন ইন্টারন্যাশনাল ম্যানিপুলেশন ইন্টারফারেন্স’ (ফিমি)-র কর্ত্রী। কলকাতা প্রেস ক্লাবে এসেছিলেন ইন্ডিয়া নিউজ অ্যান্ড ফিচার অ্যালায়েন্সের ব্যুরো চিফ সাবিনা ইন্দ্রজিৎ-এর সঙ্গে। সাবিনা ভারতের সাংবাদিক সংগঠন আইজেইউ-এর এবং ফেডারেশন অফ এশিয়া প্যাসেফিক জার্নালিস্টস-এর প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টস-এর প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

৮ নভেম্বর এই দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বর প্রাথমিক পরিচয় করিয়ে দিয়ে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ডঃ স্নেহাশিস সুর সাম্প্রতিক ওই আলোচনায় বললেন, দুটি ভিন্ন দেশ-পরিবেশের মধ্যেও সংবাদ পরিবেশন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের মধ্যে কিছু সাযূজ্য আছে। সেগুলোর ওপর একটা সম্যক ধারণা হতে পারে এই আলোচনায়।

শুরুতেই ডঃ বনিকোওস্কা জানতে চান,

আলোচনায় উপস্থিত কেউ কি পোল্যান্ড গিয়েছিলেন? এই প্রতিবেদক হাত তুলে বলেন, ‘আমি’। প্রশ্ন করেন ‘কবে’? বললাম, “তা তো বছর পঁচিশ হবেই। ভালো লেগেছে ওয়ারশ”। যে উক্তি দিয়ে এই লেখা শুরু করেছি, তার খেই ধরে এর পর ডঃ বনিকোওস্কা বললেন, বদলে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমের চালচিত্র। দৈনিক/সাপ্তাহিক/মাসিক পত্রিকার চেয়েও আগের তুলনায় বেশি আকর্ষণ হারিয়েছে টিভি।

গভীর শঙ্কা ডঃ বনিকোওস্কার। ওদেশে ভেজাল খবরে ভরে যাচ্ছে সংবাদজগৎ। ভারতের সংশ্লিষ্ট সমস্যার চরিত্রও জানতে চাইলেন। কিন্তু সমাধানের পথ? পোল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ বললেন, “বিচ্ছিন্নভাবে নয়, সামগ্রিকভাবে আমরা এর বিরুদ্ধে মোকাবিলার চেষ্টা করছি। ইওরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্যরাষ্ট্র নিরাপদ, সুরক্ষিত, কার্যকর এবং বিশ্বাসযোগ্য, বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের মাধ্যমে কৌশলগত আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য তৈরি হয়েছে ‘স্ট্র্যাটকম’।

জালিয়াতি, সাইবার অপরাধ বিষবৃক্ষর মত প্রসারিত হয়েছে এবং হচ্ছে, সে কথা জানিয়ে ডঃ বনিকোওস্কা বলেন, “কে বা কারা, কোন উদ্দেশ্যে এসব করছে, কোন ‘অ্যালগোরিদম’-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আমরা সে সব গভীর নিরীক্ষণের চেষ্টা করি। ‘লে মঁদ’, দি গার্ডিয়ান’-এর মত বিখ্যাত ক্লাসিক্যাল মিডিয়াগুলো পর্যন্ত জড়িয়ে পড়ছিল এই ফাঁদে। এসবের সঙ্গে যুক্ত আছে অর্থপ্রাপ্ত দক্ষ হ্যাকাররা। ইংরেজি, স্পেনীয়, ইতালিয়— সব ভাষায়।”

সমাধানের সম্ভাব্য পথ? ডঃ বনিকোওস্কার কথায়, “নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে ইওরোপ খুব শক্তিশালী। আমরা সব রকম চেষ্টা করছি। ‘ম্যাসিভ এডুকেশন প্রোগ্রাম’, ‘মিডিয়া লিটারেসি’ এ সবের উল্লেখ করে বললেন, “প্রবীনদের সচেতন করতে অনেক ক্ষেত্রে নবীনদের নিয়োগ করছি— “ইট ইজ অলওয়েজ আ বন্ডিং, এক্সচেঞ্জ অফ আইডিয়াজ।”

ডঃ বনিকোওস্কা আলোকপাত করেন কৃত্রিম মেধা (এআই)-এর বিস্তার ও সংবাদমাধ্যম, রাজনীতি-সহ বিভিন্ন স্তরে তার প্রভাবের ওপর। ভুয়া তথ্য ও ছবির ক্রমবিস্তার সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন, “জার্নালিজম বাই প্রফেশন উইল বি রিপ্লেসড বাই এআই সুন। বাট উই নিড হেলদি মিডিয়া। উই আর ট্রাইং টু ব্যালেন্স দি নিউ টেকনিক, লাইক এআই।

....উই আর ফেসিং আ হিউজ থ্রেট ইন ইওরোপ ইন ২০২৫। ইট অ্যাফেক্ট ভেরি মাচ অন আওয়ার ইলেকশন অলসো”। বলেন, সমস্যাটা গত এক দশকে বেড়েছে।

রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান ডঃ দেবজ্যোতি চন্দ, আনন্দবাজার পত্রিকার প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী প্রমুখের নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেন ডঃ বনিকোওস্কা। ইওরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধির হার, পরিযায়ী শ্রমিক প্রভৃতি বিষয়ও উঠে আসে তাঁর আলোচনায়।

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত




 

 rajesh pande