
হাফলং (অসম), ১৪ নভেম্বর (হি.স.) : বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের বিশাল জয়ে মোটেও চিন্তিত নন অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (এপিসিসি)-র সভাপতি তথা সাংসদ গৌরব গগৈ। অসমে বিহার নির্বাচনের কোনও প্রভাব পড়বে না। আজ শুক্রবার মাইবাঙে ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেসের কর্মীসভায় দলীয় কর্মীদের এভাবেই চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন গৌরব।
এপিসিসি-র সভাপতি গৌরব গগৈ বলেন, বিহারে বিহারের জনতা ভোট দিয়েছেন, আর অসমে অসমের জনগণ ভোট দান করবেন। তাই বিহার বিধানসভা ভোটের সঙ্গে অসম বিধানসভার ভোটের তুলনা হয় না। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন গৌরব। তাঁর ব্যাখ্যা, অসমে ডিমাসা, বড়ো, কারবি, রাভা, মরান, মটক, গোর্খা, বাঙালিরা ভোট দেবেন। এই সব ভোটাররা এবার অসম বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার একনায়কত্ববাদ শেষ করবেন, জোর গলায় দাবি করেছেন গৌরব গগৈ।
অসমে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় বিধানসভা নির্বাচনের রণডঙ্কা বাজিয়ে অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বলেন, ২০২৬-এ রাজ্যে কংগ্রেস সরকার গঠন হবে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিমা হাসাও জেলায় কংগ্রেসের বুথ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। ওই বুথ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অসম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি গগৈ বলেন, ২০২৬ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দিশপুর দখল করবে। তার পর উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদ দখল করবে কংগ্রেস, এই দাবি করে গৌরব গগৈ বলেন, বিজেপি সরকারের আমলে রাজ্যে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ সুরক্ষিত নন। বিজেপি সরকার জনজাতি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বিজেপি সরকার জনজাতি সম্প্রদায়ের ৪০ হাজার বিঘা জমি আদানি, আম্বানি এবং ডালমিয়ার হাতে তুলে দিয়েছে। এমতাবস্থায় হিমন্তবিশ্ব শর্মা অসমের মুখ্যমন্ত্রী থাকলে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ কোনও দিন সুরক্ষিত হবে না। এমন-কি জনজাতি সম্প্রদায়ের ভূমির অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে।
গৌরব বলেন, সর্বানন্দ সনোয়ালকে সরিয়ে হিমন্তবিশ্ব শর্মা মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এমন-কি বড়োল্যান্ডে প্রমোদ বড়োর দলকে সম্পূর্ণ শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তার আগে একইভাবে হাগ্রামা মহিলারিকে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সরকার উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ক্ষমতা হ্রাস করতে চাইছে।
এপিসিসি সভাপতির আরও অভিযোগ, ‘অসমের মুখ্যমন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ তুলে আমার মুখ বন্ধ করার কথা চিন্তা করছেন, তা সম্ভব নয়। আমি হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে ভয় করি না। এমন-কি রাজ্যের মানুষ এখন আর হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে ভয় করে না। কারণ তিনি যখন কথা বলেন তখন ছোট বাচ্চার মতো কথা বলেন। এছাড়া দিল্লির বিজেপি নেতারাও এখন আর হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে বিশ্বাস করেন না। এমন-কি অসমের জনগণও এখন হিমন্তবিশ্ব শর্মার কথা বিশ্বাস করে না।’
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুদিনের সফরে ডিমা হাসাও জেলায় এসে হাফলং আবর্ত ভবনে রাত কাটিয়ে আজ শুক্রবার সকালে হাফলং সিভিল হাসপাতাল পরিদর্শন করে গৌরব গগৈ মাইবাং গিয়ে প্রথমে ‘ভোট চোর গদি চোর গণস্বাক্ষর’ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। এর পর ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেসের কর্মীসভায় অংশগ্রহণ করে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের ‘জনতার দুয়ারে’ গিয়ে জনগণের সহ্গে সংযোগ স্থাপন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ।
আজকের কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল লাংথাসা, ডিমা হাসাও জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি হাইজেরাংবে জেমি, জেলা কংগ্রেস, ব্লক কংগ্রেস এবং মণ্ডল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব