
পটনা, ১৪ নভেম্বর (হি.স.): বিহার ভোট নিয়ে প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী শুধু মুখ থুবড়ে পড়েছে বললেও কম বলা হবে। ভোটের আগে তিনি বলেছিলেন, “বিহারে পঁচিশের বেশি আসন পাবে না জেডিইউ। নীতীশ কুমার আর মুখ্যমন্ত্রী হবেন না।”
সেই পূর্বাভাস একেবারেই মেলেনি। বিহারের ভোটের ফল বলছে, প্রশান্তর দল জন সুরাজ পার্টি কোনওরকম কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেনি। নিজের জয় তো নয়ই, অন্য দলের যাত্রাভঙ্গ করার মতো জায়গাতেও পৌঁছতে পারেনি জন সুরাজ। ভোটকুশলী হিসাবে সাফল্য পেলেও রাজনীতির ময়দানে সরাসরি নেমে প্রশান্ত কিশোর রীতিমতো জলহীন মাছের মতো খাবি খাচ্ছেন।
রাজনীতিতে প্রশান্ত কিশোর পা রেখেছিলেন রীতিমতো ধুমধাম করে। ভোটকুশলী হিসাবে প্রায় সব রাজ্যে সাফল্য। বিহারে তৃণমূল স্তরে নেমে কাজ করার লক্ষ্যে পদযাত্রা। প্রায় ৩ বছর বিহারের গ্রামে গ্রামে ঘোরা। রীতিমতো কর্পোরেট ভঙ্গিমায় দল ঘোষণা। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সভা-সমিতি করা। প্রচারে আলাদা করে পেশাদারদের ব্যবহার। ভিনরাজ্যের পরিযায়ী বিহারীদের জন্যও আলাদা করে কর্পোরেট দল তৈরি করে প্রচার করা। এবং সর্বোপরি সামাজিক মাধ্যমে হইচই।
এনডিএ বনাম মহাজোটের চিরাচারিত লড়াইয়ে বিহারের রাজনীতিতে তৃতীয় বিকল্প হিসাবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন পিকে। তাঁর জন সুরাজ পার্টি জাতপাতের রাজনীতিতে ক্লিষ্ট বিহারে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু সেই সবটাই সামাজিক মাধ্যম এবং সংবাদ মাধ্যমে।
যে প্রশান্ত কিশোরে পদযাত্রায় দেখা গিয়েছিল জনসমুদ্র। ভোটের ব্যালটে সেই পিকের দলে সাক্ষী থাকল হাহাকারের। এ যেন নির্বাচনী-দুর্ভিক্ষ। বিকল্প হওয়ার স্বপ্নপূরণ হল না প্রশান্ত কিশোরের। প্রচার পর্বে একটা কথা বেশ শোনা যেত তাঁর মুখে। তা হল, মানুষ তাঁর কথা বুঝলে, ভোটের লড়াইয়ে তিনি ‘টপ’ করবেন। তা হলে কি সেই বোঝা এবং বোঝানোর জায়গাতেই কোনও খামতি থেকে গেল?
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত