
কলকাতা, ৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : কলকাতায় সংঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠনের আয়োজিত ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আসরে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস রবিবার উপস্থিত হয়ে মঞ্চে গীতাপাঠে অংশগ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি হিন্দিকে ‘রাষ্ট্রভাষা’ হিসেবে মন্তব্য করেন। এর সঙ্গে মা ও ধাত্রী মায়ের তুলনাও করেন। সোমবার এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, “হিন্দি রাষ্ট্রভাষা নয়। ভারতের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। উনি ভুল বলেছেন। প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে সেই ভুল সংশোধন করবেন, এটা আমরা আশা করি।”
ব্রিগেডের ওই আসর থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ ঘোষ বলেছিলেন, “আমি হিন্দিতে কথা বলার চেষ্টা করব। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। হিন্দি আমাদের রাষ্ট্রভাষা। রাষ্ট্রভাষা মা হয়। ইংরেজি দাইমা বা ধাত্রী মা। দাইমা কখনওই মায়ের মতো হয় না।” তাঁর এহেন মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন কুণাল ঘোষ। ভাষাকে মা ও ধাত্রী মায়ের সঙ্গে তুলনা করে তিনি কাকে অপমান করলেন? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার এক ভিডিও বার্তায় কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ”গতকাল (রবিবার) গীতাপাঠের আসরে বিজেপি নেতাদের সামনে রাজ্যপাল বলেছেন যে হিন্দি রাষ্ট্রভাষা। আমি তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। মাননীয় রাজ্যপালের জানা উচিত, ভারতবর্ষে কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। সংবিধানের অষ্টম তফসিলে ২২ টি ভাষা আছে, যাদের সমান সম্মান ও গুরুত্ব আছে। তার মধ্যে কোনওটা রাষ্ট্রভাষা নয়, সরকারের কাজ চালানোর ভাষা। তার মধ্যে হিন্দি আছে। দেবনাগরী অক্ষরে লেখা। কিন্তু তা কোনওভাবেই রাষ্ট্রভাষা নয়। বড়জোর কাজ চালাতে ব্যবহার হতে পারে। সে তো ইংরাজিও ব্যবহার হয়। কিন্তু হিন্দি ভারতবর্ষের রাষ্ট্রভাষা – এটা কখনও বলা যাবে না।
কুণাল বলেন, “বাংলার রাজ্যপাল, প্রাক্তন আইএএস – এত বড় একজন, তাঁর কাছ থেকে এই ভুল প্রত্যাশিত নয়। এনিয়ে একটা সংশয় তৈরি হতে পারে – কোনটা রাষ্ট্রভাষা আর কোনটা সরকারি কাজের জন্য স্বীকৃত ভাষা। আবার বলছি, ভারতের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। এগুলো সবই কাজের ভাষা, স্বীকৃত ভাষা। সব ভাষার সমান মর্যাদা আছে। আমি আশা করি, উনি যে এত বড় ভুল বললেন, প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে এই ভুল সংশোধন করে নেবেন।”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত