ত্রিপুরায় বিজেপি কাজ করছে, তাই ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে : বিপ্লব
আগরতলা, ৩০ নভেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় বিজেপি কাজ করছে, তাই ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে।
ত্রিপুরায় বিজেপি কাজ করছে, তাই ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে : বিপ্লব


আগরতলা, ৩০ নভেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় বিজেপি কাজ করছে, তাই ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ভীষণ ডকুমেন্টের ১০০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আজ বিজেপি শান্তির বাজার মন্ডলের উদ্যোগে প্রকাশ্য জনসভায় দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে একথা বলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব।

তাঁর কথায়, বর্তমান সরকারের বহুমুখী বিকাশ ধারায় উন্নয়নের প্রশ্নে দীর্ঘ উপেক্ষিত জনজাতিদের অত্যাধুনিক পরিষেবা সহ সমস্ত অধিকার সুনিশ্চিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এদিন বিপ্লব কুমার দেব ত্রিপুরার উন্নয়নের প্রশ্নে দীর্ঘ বাম জমানায় চরম অব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেছেন। আজ জনসমাবেশে তিপ্রা মথা শান্তির বাজার ব্লক সভাপতি পারেন্দ্র রিয়াং সহ নবাগতদের দলীয় পতাকা হাতে তুলে দিয়ে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ কমিউনিস্ট শাসনকে নিশানা করে বিপ্লব কুমার দেব অভিযোগ করেন, বিজেপি কাজ করে বলেই, ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ রয়েছে। বর্তমান সরকার মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরী করতে পেরেছে। কিন্তু কমিউনিস্টরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতো না বলেই তাঁদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রতি মানুষের কোনো উৎসাহ ও প্রাপ্তির প্রত্যাশা থাকতো না। তাঁর কটাক্ষ, রাজনৈতিক স্বার্থে ত্রিপুরায় বসবাসরত রিয়াং উদ্বাস্তুদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। এই রিয়াংরা আমাদেরই ভাই বোন। ফলে তাঁরা এরাজ্যেই থাকবেন।

তিনি জোর গলায় বলেন, বর্তমান ত্রিপুরা সরকারের সময়ে দীর্ঘ ২৩ বছর পর তাঁদের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর আন্তরিকতায় এক সমৃদ্ধতর নিশ্চিত ভবিষ্যতের সন্ধান তাঁরা পেয়েছেন। কিন্তু বিগত সরকার তাঁদের বিষয়টি নিয়ে ছিল সম্পূর্ণ উদাসীন। ত্রিপুরার জনজাতিদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করলেও, রিয়াং উদ্বাস্তুদের ভাগ্যের সর্বাঙ্গিক উন্নয়নে আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল বামেদের।

বামেদের নিশানা করে বিপ্লব কুমার দেব বলেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘ সময় রিয়াং উদ্বাস্তুদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিকতা এবং সুযোগ্য দিশা নির্দেশনায় তাঁদের সর্বাঙ্গীন বিকাশে গতি ত্বরান্বিত হয়েছে। উন্নততর ভবিষ্যতের স্বার্থে ভারতীয় জনতা পার্টিই জনতার আস্থার কেন্দ্র স্থল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

এদিন তিনি অভিযোগ করেন, বিগত দিনে সংকীর্ণ স্বার্থে রাজনৈতিক রং ভেদে মানুষকে প্রাপ্য অধিকার থেকে দীর্ঘ সময় বঞ্চিত করে রাখা হতো। চাঁদার নামে জুলুম করা হতো। কিন্তু দীর্ঘ সময় মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখা যায় না তার উদাহরণ ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে দেখা গেছে।

বিপ্লবের কথায়, ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে পানিসাগর খামতাই পাড়া রিয়াংদের স্থায়ী বসবাস কেন্দ্রের অদূরেই জনজাতি এলাকায় ওয়াটার ট্যাংক বসানো হচ্ছে। যার সুফল পাবেন বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ সহ এই রিয়াং ভাই-বোনেরাও। ২৫ বছরে অন্যতম অত্যাবশ্যকীয় পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছাতে পর্যন্ত ব্যর্থ ছিল বামেরা। বর্তমান সরকারের সময়কালের মধ্যে ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় ৫৫ শতাংশ এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, ত্রিপুরার সর্বাঙ্গীন বিকাশ ধারায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে এই কুঁচক্রিরা চক্রান্তে লিপ্ত হচ্ছেন। তাঁরা নানা ভাবে উস্কানি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। এই বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের মানুষ গণতান্ত্রিক পথে সমীচীন জবাব দেবেন বলে আশা ব্যাক্ত করেন।

এদিন জনসমাবেশে অংশ নেওয়ার পূর্বে লোকপ্রিয় জনজাতি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজ প্রসাদ চৌধুরী যিনি তসলামফা নামে পরিচিত ছিলেন তাঁর দ্বারা নির্মিত সত্যনারায়ণ মন্দির দর্শন ও প্রার্থনা করেন বিপ্লব কুমার দেব। স্থানীয়দের আবেগ মিশ্রিত ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিজড়িত শান্তির বাজার রায়পাড়া মধ্য কাঠালিয়াস্থিত সত্যনারায়ণ মন্দিরটি আধ্যাত্মিক চর্চা ও প্রসারের অন্যতম পিঠস্থান বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। কিন্তু বিগত দিনে এর গরিমাময় ইতিহাস প্রচার ও প্রসারে অনাগ্রহ ও অনাদরে উপেক্ষিত ছিল। বিপ্লব কুমার দেবের পরিদর্শন ঘিরে জনসাধারণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গেছে।

এর পর শান্তির বাজার মহামুনি এলাকায় ৪৪ নম্বর বুথের ৩৫ পরিবারের ৯৭ জন ভোটার বিপ্লব কুমার দেবের হাত ধরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে সামিল হয়েছেন। সেখানে আরো নিবিড় জন সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে অধিক নাগরিক আস্থা অর্জনে গুরুত্বারোপ করেন তিনি। হিন্দুস্থান সমাচার/সন্দীপ


 rajesh pande