পশ্চিম দিল্লির বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে মৃত ২৭; নিখোঁজ অনেকেই
নয়াদিল্লি, ১৪ মে (হি.স.): পশ্চিম দিল্লির বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে ঝলসে ও দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষ
তদন্তে পুলিশ


নয়াদিল্লি, ১৪ মে (হি.স.): পশ্চিম দিল্লির বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে ঝলসে ও দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২৭ জন। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে ওই তিন-তলা বাণিজ্যিক ভবন থেকে মোট ২৭ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, দগ্ধ ও আহত হয়েছেন ১২ জন। এছাড়াও অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি, আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন সঞ্জয় গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে। আউটার ডিস্ট্রিক্ট ডিসিপি এস শর্মা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ও ১২ জন আহত হয়েছেন। দেহগুলি চিহ্নিত করার জন্য ফরেনসিক টিমের সাহায্য নেওয়া হবে। এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভবনের মালিকদের আটক করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৮, ১২০ ও ৩৪ নম্বর ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বিভাগীয় দমকল অফিসার সতপাল ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় কেউ হয়তো বেরোতে পারেননি। আমি মনে করি বিল্ডিংটির যথাযথ এনওসি ছিল না (দমকল থেকে)।

শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ ভবনের দোতলায় অবস্থিত সিসিটিভি ক্যামেরা ও রাউটার নির্মাতা সংস্থার অফিসে প্রথম আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে ভবনটিতে। ভিতরে যাঁরা ছিলেন, কিছু লোক বেরিয়ে আসেন। কেউ দড়ি ধরে দেওয়াল বেয়ে নামেন। কেউ আগুন থেকে বাঁচতে ঝাঁপ দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানলার কাচ ভেঙে উদ্ধারকাজ শুরু করে। সারা সন্ধে আগুনের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যায় দমকলের ৩০টি ইঞ্জিন। সিসিটিভি নির্মাতা সংস্থাটির পঞ্চাশেরও বেশি কর্মীকে উদ্ধার করা হয়। এই অগ্নিকাণ্ডে ভবনের মালিক মালিক হরিশ গোয়েল এবং বরুণ গোয়েলকে আটক করেছে পুলিশ। আগুনে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের ও ১২ জন আহত হয়েছেন। তবে, নিখোঁজ অনেকেই। শনিবার সকালে সঞ্জয় গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে সুনীল কুমার জানিয়েছেন, আমরা ২৮ জনের নিখোঁজ থাকার বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমরা অভিযোগকারীদের বিবরণ এবং নিখোঁজ ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের তথ্য সংগ্রহ করছি। আমরা কোনও তথ্য পেলেই তাদের জানানো হবে। পরিজনদের না পেয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কেউ খুঁজে পাচ্ছেন না নিজের বোনকে, কেউ আবার স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না। শুক্রবার বিকেলেই শেষবার কথা হয়েছিল তাঁদের।

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী টুইট করে জানান, ‘‘দিল্লির অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় আমি অত্যন্ত দুঃখিত। শোকাহত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’’ টুইটারে শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইটারে লেখেন, ‘‘আমি সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রশাসন উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী শীঘ্রই পৌঁছচ্ছে। মানুষগুলিকে ওখান থেকে বার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটাই এখন অগ্রাধিকার।’’ প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

হিন্দুস্থান সমাচার। রাকেশ।


 rajesh pande