ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে না'পাক' ড্রোন ষড়যন্ত্র, বিএসএফ উপযুক্ত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে
–এবছর এপর্যন্ত ১১০টি পাকিস্তানি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছে, মাত্র ছয়টি গুলি করে নামান হয়েছে - বিএসএফের
ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে না'পাক' ড্রোন ষড়যন্ত্র, বিএসএফ উপযুক্ত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে


–এবছর এপর্যন্ত ১১০টি পাকিস্তানি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছে, মাত্র ছয়টি গুলি করে নামান হয়েছে

- বিএসএফের গুলিতে শতাধিক অনুপ্রবেশকারী ড্রোন নিজেরাই ফিরে যায়

চণ্ডীগড়/নয়াদিল্লি, ৩০ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : পাঞ্জাব, দেশের সীমান্ত প্রদেশ, তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং প্রফুল্লতার জন্য পরিচিত। পাঞ্জাবের এই সমৃদ্ধ ঐতিহ্য নষ্ট করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে না'পাক' প্রতিবেশী দেশ । এর মধ্যে প্রধানত সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসবাদী বা ড্রোনের অনুপ্রবেশ জড়িত। এ বছর এ পর্যন্ত ১১০টি পাকিস্তানি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছে, যার মধ্যে মাত্র ছয়টিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। অন্য সবাইকে হয় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অথবা অনুপ্রবেশের পর সে নিজে থেকেই ফিরে গিয়েছিল।

পাঞ্জাবে না'পাক' বিদ্বেষ বাড়ছে

গুরুদাসপুর জেলার ডেরা বাবা নানক এলাকায় ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে পাকিস্তানের দিক থেকে ভেসে আসে ড্রোনের শব্দ। শুধু তাই নয়, এই ড্রোনটি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় পাঁচ মিনিট ঘোরাফেরা করে। এ প্রসঙ্গে বিএসএফ গুরুদাসপুর সেক্টরের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) প্রভাকর যোশি বলেন, পাকিস্তানের দিক থেকে ড্রোন আসতে দেখে বিএসএফ জওয়ানরা সঙ্গে সঙ্গে ৪৪ রাউন্ড গুলি চালায় এবং ২টি হালকা বোমা নিক্ষেপ করে। তিনি বলেন, পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার পর ড্রোনটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে বিএসএফ স্থানীয় পুলিশ ও স্নিফার ডগদের সহায়তায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালালেও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। জোশি ব্যাখ্যা করেছেন যে তার পোস্টের সামনে পাকিস্তানের নতুন জাফনা পোস্ট রয়েছে। সেখান থেকে ড্রোন পাঠানোর ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড চালানো হয়।

এ বছর এ পর্যন্ত ১১০ বার ড্রোন অনুপ্রবেশ ঘটেছে-

বিএসএফের একজন সিনিয়র কর্মকর্তার মতে, পাকিস্তান পাঞ্জাবে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদক পাচারের জন্য ড্রোন ব্যবহার করে। এ বছর এ পর্যন্ত পাকিস্তান ১১০টি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি ড্রোন ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে। অন্য সবকটি হয় তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল অথবা অনুপ্রবেশের পর সে নিজে থেকেই ফিরে গিয়েছিল। বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরেকজন সিনিয়র বিএসএফ অফিসার বলেছেন যে, সঠিক অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির অভাবের কারণে, এই বছর পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবে আসা ১১০টি ড্রোনের মধ্যে মাত্র ছয়টিই গুলি করে নামানো সম্ভব হয়েছে । তিনি বলেন, মানুষের অনুপ্রবেশের চেয়ে বেশি ড্রোন অনুপ্রবেশ রোধ করা বিএসএফের সামনে চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেছিলেন যে, আমাদের কাছে কিছু কার্যকর অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি না থাকলে ড্রোন গুলি করার সম্ভাবনা খুব কম থাকবে।

জম্মু ও কাশ্মীরের চেয়ে পাঞ্জাবের দিকে বেশি নজর দিন-

আধিকারিকদের ধারণা, পাকিস্তান এই সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরের চেয়ে পাঞ্জাবে বেশি ড্রোন অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। জম্মু ও কাশ্মীরের তুলনায় এ বছর পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবে আসা ড্রোনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মতে, এই বছরের জুলাই পর্যন্ত সীমান্তের ওপার থেকে মোট ১১০টি ড্রোন ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে দেখা গেছে, গত বছর ৯৭টি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছিল। বিএসএফ কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে সবচেয়ে বড় হুমকি ইউএভি (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকল)। ড্রোনের মাধ্যমে, পাকিস্তান ক্রমাগত অস্ত্রের মজুদ ভারতে পাঠাচ্ছে এবং এখন ড্রোনের সাহায্যে যে কোনও জায়গায় আক্রমণ শুরু করেছে।

ড্রোন বিরোধী প্রযুক্তি প্রস্তুত-

প্রতিবেশী দেশের এসব অপতৎপরতা কাটিয়ে উঠতে বিএসএফ শিগগিরই সীমান্তে অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি সজ্জিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু এলাকায় বিএসএফ এই প্রযুক্তি পরীক্ষা করছে। শীঘ্রই অন্যান্য আন্তর্জাতিক সীমান্তও এতে সজ্জিত হবে। 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র আওতায় একটি ভারতীয় কোম্পানি বিএসএফের জন্য এই প্রযুক্তি প্রস্তুত করেছে। এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী ড্রোন-বিরোধী প্রযুক্তির জন্য পদক্ষেপ করছে ।

অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম কীভাবে কাজ করবে?

এই অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির সাহায্যে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে শত্রুদের ড্রোন খুঁজে পাওয়া যাবে। এই প্রযুক্তিতে ৫০ ডিগ্রি বা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রায়ও একই সাথে অনেক শত্রু ইউএভি খুঁজে বের করার ক্ষমতা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রযুক্তি মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে শত্রুর ড্রোন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জ্যাম করতে পারে। প্রায় এক বছর ধরে অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির পরীক্ষা চলছে, তবে নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করা এই কৌশলটি আশানুরূপ ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়নি, তবে বিএসএফ পূর্ণ আশাবাদী যে এটি শীঘ্রই সফল হবে।

হিন্দুস্থান সমাচার / কাকলি


 rajesh pande