
গুয়াহাটি, ১২ নভেম্বর (হি.স.) : দিল্লি বিস্ফোরণের পর সোশাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে অসমের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গতকাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরপাকড়ের সংখ্যা আরও বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
১০ নভেম্বর সন্ধ্যারাতে দিল্লিতে সংগঠিত বিস্ফোরণের পর-পরই সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফৰ্মে এক আপত্তিকর মন্তব্য করার দায়ে শিলচর সদর থানার অন্তর্গত রংপুরের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা বাঁশকান্দি এনএম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম বড়ভুইয়াঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর পর একই অভিযোগে দরং থেকে মতিউর রহমান, গোয়ালপাড়া থেকে হাসান আলি মণ্ডল, চিরাঙের আবদুল লতিফ, কামরূপের ওয়াজহুল কামাল এবং বঙাইগাঁও থেকে নুর আমিন আহমেদকে গ্রেফতার করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ।
অসম পুলিশের সদর দফতরের আধিকারিক সূত্র এ খবর দিয়ে জানিয়েছে, সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদান রোধ করতে সোশাল মিডিয়ায় নিবিড় নজরদারি চলিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে কোনও সামাজিক মাধ্যমে প্ররোচনামূলক বা উত্তেজক বা সবেদনশীল বা দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য ছড়ানোর দায়ে আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও পুলিশের আধিকারিক সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে গতকালের মতো আজও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘দিল্লিতে যে বিস্ফোরণ হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’ ঘটনার কঠোর ভাষায় নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, ‘অবশ্যই এর পেছনে একটি বড় ব্লু-প্রিন্ট ছিল। এটা সন্ত্ৰাসবাদীদের পূর্বপরিকল্পিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর অনলাইনে বেশ কিছু বিরক্তিকর প্রবণতা শনাক্ত করা হয়েছে। একাংশ মানুষ ফেসবুকে দিল্লির ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং খুশির ইমোজি পোস্ট করছে। এ বছরের শুরুর দিকে পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পরও এই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের আচরণ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার সমান। অন্যের মৃত্যুতে কেউ যদি খুশি হয়, তা-হলে ধরে নিতে হবে তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে। আমি ডিজিপিকে বলেছি, এই সব মানুষ কারা এবং তারা যদি আমাদের রাজ্যের হয়, তবে প্রয়োজনে আমরা অবশ্যই তাদের গ্রেফতার করব। এই সব ব্যক্তির ব্যাকগ্ৰাউন্ড পরীক্ষা করা হবে।’
ড. শর্মা বলেন, ‘ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ আরও গ্রেফতারের ইঙ্গিত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিবিড় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন তাদের পোস্ট ডিলিট করেছেন। তা তারা করতে পারেন, তবে আমাদের কাছে সে সব আপত্তিকর পোস্টের স্ক্রিনশট আছে। গ্রেফতার তাদের করা হবেই। অসমে এ ধরনের মানুষকে মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।’ড. শৰ্মা এই সময়ে জনগণের ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘জনগণকে একত্রিত হতে হবে যাতে সন্ত্রাস আবার মাথাচাড়া দিতে না পারে।’
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস