
কলকাতা, ১৪ নভেম্বর (হি.স.): পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের ডাক বিভাগ আয়োজিত দশম রাজ্যস্তরের ডাকটিকিট প্রদর্শনী “BONGOPEX–2025”–এর উদ্বোধন কলকাতার সায়েন্স সিটিতে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ড. সি. ভি. আনন্দ বোস, মুখ্য পোস্টমাস্টার জেনারেল অশোক কুমার (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ), পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী মমতা শংকর, নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর ডিরেক্টর ড. সুমন্ত্র বোস, ফিলাটেলিক কংগ্রেস অফ ইন্ডিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল রাজেশ বাগরি, পিসিআই–এর অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট মধূকর দেওগাঁওকর-সহ একাধিক বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ। এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)।
পিআইবি-র তরফে জানানো হয়েছে, ছয় বছর পর রাজ্যস্তরের এই প্রদর্শনীর প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে BONGOPEX–2025 ফিলাটেলিস্ট, সংগ্রাহক, ছাত্রছাত্রী ও উৎসাহীদের একত্রিত করছে, ডাকটিকিটের মাধ্যমে শিল্প, ইতিহাস ও ঐতিহ্য উদযাপন করতে।
শুক্রবার থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এই প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে বিরল সংগ্রহ, থিম্যাটিক ডিসপ্লে ও সূচিবদ্ধ প্রদর্শন, যেখানে বাংলার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক অবদানকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল ড. বোস তাঁর মাতা–স্মৃতি থেকে ‘পদ্মাবতী অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা করেন, যা তাঁর গভর্নর’স অ্যাওয়ার্ড অফ এক্সিলেন্স–এর অংশ। এই সম্মান তিন জন বিশিষ্ট ফিলাটেলিস্টকে প্রদান করা হবে, যার আওতায় শংসাপত্র, ট্রফি এবং যথাক্রমে ₹১,০০,০০০, ₹৫০,০০০ ও ₹২৫,০০০ টাকা। ড. বোস বলেন, “ডাকটিকিট ছোট জিনিস, কিন্তু এগুলি গর্বের প্রতীক। প্রতিটি ডাকটিকিটকে সম্মান করা উচিত। কিছু ডাকটিকিট গান্ধীকে চেনায়, কিছু নেহরুকে, কিছু হিমালয়ের কথা বলে… একটি ডাকটিকিট সকলের জন্যই মহান শিক্ষক।”
নিজের বক্তব্যে অশোক কুমার ফিলাটেলির গুরুত্ব এবং জননীতি, শিক্ষা ও গবেষণার সঙ্গে তার গভীর সংযোগ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ফিলাটেলি বহু প্রজন্মের প্রিয় শখ, যা জননীতি, শিক্ষা ও গবেষণার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। BONGOPEX এই জগতকে জীবন্ত করে তোলে, জায়গা করে দেয় ফিলাটেলিস্টদের ভাব–বিনিময়ে এবং তরুণদের অনুসন্ধানের সুযোগ দেয়।”
অশোক কুমার আরও বলেন, ভারতীয় ডাক বিভাগ এখন ঐতিহ্যবাহী পরিষেবার বাইরে গিয়ে নাগরিক–কেন্দ্রিক ও সরকারি পরিষেবার এক অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, “আজ পোস্ট অফিস এই সবকিছু সম্ভব করছে। এটি সরকারের বিভিন্ন পরিষেবার এক–স্টপ সলিউশন হিসেবে গড়ে উঠছে। ঐতিহ্যগত পরিষেবার পাশাপাশি আধার আপডেট করার সুবিধা দিচ্ছে। দেশের ১.৬৫ লক্ষেরও বেশি পোস্ট অফিসের সুবিশাল নেটওয়ার্ক ভারতীয় ডাক বিভাগকে এক শক্তিশালী চালিকাশক্তিতে পরিণত করেছে।”
উদ্বোধনী দিনে বাংলার ঐতিহ্য উদযাপনকে কেন্দ্র করে একাধিক স্মারক সামগ্রী প্রকাশ করা হয় - এর মধ্যে ছিল নেতাজির মাণ্ডালে জেলে দুর্গাপুজো (১৯২৫)–কে কেন্দ্র করে বিশেষ কভার, বাংলার কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক–দের উপর বিশেষ কভার, এবং সুকুমার রায়ের আবল তাবল”–ভিত্তিক আটটি পিকচার পোস্টকার্ড।
প্রদর্শনীতে ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে আয়োজন করা হয় রচনা লেখা, আঁকা প্রতিযোগিতা এবং আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক ও সঙ্গীতানুষ্ঠান।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ