বক্সনগর (ত্রিপুরা), ১৯ জুলাই (হি.স.) : গ্রিনল্যাণ্ড অংশীদারী বনায়ন সমিতির রিজার্ভ ফরেস্টে চলছে নির্বিচার বন ধ্বংস। প্রায় ৯০০ কানি (প্রায় ৩৬০ হেক্টর) বনাঞ্চল কেটে উজাড় করে দিচ্ছে দুলাল পালের নেতৃত্বাধীন একদল প্রভাবশালী। অথচ এই ভয়াবহ ঘটনায় বন দফতরের কোনও হস্তক্ষেপ নেই। স্থানীয়দের বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও দফতরের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
১৯৯২ সালে বন দফতরের উদ্যোগে এই এলাকায় প্রথম ৫০ হেক্টর সেগুন বাগান করা হয়। পরে ২০০২ সালে এই বনাঞ্চলকে জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির আওতায় এনে আরও ৩০ হেক্টর সেগুন বাগান করা হয়। ২০১৬ সালে এখানে ২০ হেক্টর ‘কোনাক কাইশ’ বাঁশ বাগান তৈরি হয় এবং মাছ চাষের জন্য খনন করা হয় ৩টি জলাশয়। দীর্ঘ তিন দশকের যত্নে গড়ে ওঠা এই বনভূমি সিপাহীজলা জেলার বেজিমারা গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বাঞ্চলে সবুজে আচ্ছাদিত প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে, যা স্থানীয়দের জীবিকার বড় ভরসা ছিল।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দুলাল পালের নেতৃত্বে সক্রিয় একটি চক্র গোপনে এই বনাঞ্চল ধ্বংসের কাজে নেমেছে। অভিযোগ, ইতিমধ্যেই অসংখ্য মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সমিতির সদস্যরা তৎপর হয়ে কাটা গাছগুলি উদ্ধার করে রাখলেও বন দফতরের উদাসীনতার কারণে সেগুলি এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, “আমরা বন দফতরকে বারবার জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এইভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যেই গোটা বনভূমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”
একসময় ঘন সবুজে ভরা এই বনাঞ্চল আজ প্রায় বৃক্ষশূন্য বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর ধরে গোপনে বন উজাড় চলছিল, আর সম্প্রতি তা তীব্র আকার নিয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, অবিলম্বে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি তো হবেই, সঙ্গে সমিতির সদস্যদের জীবিকা ও এলাকার অর্থনৈতিক ভরসা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। তারা বন দফতরের নিষ্ক্রিয়তার তীব্র সমালোচনা করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার এবং বন রক্ষার দাবিতে সরব হয়েছেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ