‘সিএম-ফ্লাইট’ রাজ্যের যুবসমাজকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক পেশাদারে পরিণত করতে পারে : মুখ্যমন্ত্রী
গুয়াহাটি, ১২ অক্টোবর (হি.স.) : গ্লোবাল হিউম্যান ট্যালেন্ট নির্ধারণ করতে ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার হাত ধরে অসমে প্রবর্তন হয়েছে ‘মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশি ভাষা উদ্যোগ’ (চিফ মিনিস্টাৰ্স ফরেইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইনিশিয়েটিভ, সংক্ষেপে সিএম-ফ্লাইট)। রাজ্যের ৫০ হাজার যুবক-যুবতীকে জাপানি ভাষায় প্রশিক্ষণ এবং জাপানে তাঁদের কর্মসংস্থানের সুবিধা দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা। এই উদ্যোগটি প্রার্থীদের প্রতি মাসে দুই (২) লক্ষ টাকা করে বেতন সহ পাঁচ বছরের জন্য কাজের ভিসা পাওয়ার সুযোগ দেবে।
আজ রবিবার গুয়াহাটিতে নর্থ-ইস্ট স্কিল সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিএম-ফ্লাইট-এর সূচনা করেছেন মুক্যমন্ত্রী। শিক্ষাৰ্থীদের জন্য সরকারি ভরতুকির পর এই উদ্যোগের ফি কমিয়ে ৩০ হাজার টাকা করায় জাপানের নিশিকাওয়াকে কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যাডভান্টেজ আসাম ২.০-এর সময় আমরা জাপানে ভাষা প্রশিক্ষণ এবং স্থান নির্ধারণের জন্য জাপানের সঙ্গে তিনটি সমঝোতাপত্ৰে (মউ)স্বাক্ষর করেছিলাম।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই স্কিমের অধীনে প্রথম ব্যাচে ১৮০ জন প্রার্থীকে জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ (জেএফটি বেসিক / জেএলপিটি এন৪) দেবে আসিয়ান ওয়ান কোম্পানি লিমিটেড এবং অন্য দুটি সংস্থা যথাক্রমে জাসিক্স ভেঞ্চারস এলএলপি ও মেইকো ক্যারিয়ার পার্টনার্স কোম্পানি লিমিটেড-এর মতো এজেন্সি। তারা জাপানের নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী (জাপানস্ স্পেসিফাইড স্কিলড্ ওয়ার্কার, বা এসএসডব্লিউ) ভিসা প্রোগ্রামের অধীনে প্লেসমেন্টে প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা করবে৷ যে সকল শিক্ষার্থী জাপানি ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, জাপানি কর্তৃপক্ষ তাঁদের দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে জাপানে চাকরির ব্যবস্থা করবেন। প্রশিক্ষিত যুবক-যুবতীরা চাকরির জন্য ৫ বছরের জন্য ভিসা পাবেন।’
ড. শৰ্মা জানান, প্রশিক্ষণ কোর্সের মোট খরচ ১.৮ লক্ষ টাকা। অসম সরকার ১ লক্ষ, জাপান ৫০ হাজার এবং শিক্ষার্থীদের ৩০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, অনুরূপ সুযোগ বাড়ানোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়া এবং জার্মানির সাথে আলোচনা চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের জন্য সফল প্রার্থীদের সরকার ১.৫ লক্ষ টাকা ভরতুকি দেবে।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, সিএম-ফ্লাইট প্রথম ঘোষিত হয়েছিল গত ২৩ জুলাই। এতে জাপানি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা (জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিশিয়েন্সি টেস্ট, বা জেএলপিটি) এন২ স্তরের জন্য কাঠামোগত প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা বলেন, এটি বিদেশি প্লেসমেন্টের সুবিধার মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জন্য উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে অসমের বেকারত্ব সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই উদ্যোগ অসমের বৃহত্তর কৌশলের অংশ যা যুব সমাজের বিশ্বব্যাপী প্রাসঙ্গিক দক্ষতার সাথে সজ্জিত করতে এবং রাজ্যকে আন্তর্জাতিক শ্রমশক্তি বিকাশের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অসম সরকারের গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজয় তিওয়ারি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ইত্যাদি তথা মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ড. বি কল্যাণ চক্রবর্তী, দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা বিভাগের প্রধান সচিব ড. কেকে দ্বিবেদী, আসিয়ান ওয়ান কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্র দেও ত্রিপাঠী, জাপান তোশিয়াকি নিশিকাওয়ার প্রফেসার পরমেশ্বর কে আইয়ার, আইআইটি গুয়াহাটির প্রফেসরগণ সহ বহু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস