দুর্গাপুর, ২২ অক্টোবর (হি. স.) :- নির্যাতিতার সহপাঠী বিজড়া গ্রামের মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যেত। সেই সূত্রেই বাকিদের সঙ্গে পূর্ব পরিচিত। ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। সহপাঠীই ঘটনার 'মাস্টার মাইন্ড'। বুধবার দুর্গাপুরকান্ড প্রসঙ্গে এমনই বিস্ফোরক দাবী করল নির্যাতিতার আইনজীবি পার্থ ঘোষ। একইসঙ্গে সহপাঠীসহ সকল অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট বিচারকের সামনে খতিয়ে দেখার আবেদন করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর রাতে কলেজ থেকে খাবার খেতে বেরিয়ে গনধর্ষণের শিকার হয় ওড়িশার এক ডাক্তারি পড়ুয়া। এখনও পর্যন্ত মোট ছ' জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনায় ধৃতদের নাম শেখ নাসিরউদ্দীন, সেখ সফিকুল, সেখ রিয়াজউদ্দীন, ফিরদৌস সেখ ও অপু বাউরি। সকলের বাড়ি দুর্গাপুর বিজড়া গ্রামে। এছাড়া নির্যাতিতার সহপাঠী ওয়াসিফ আলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে ধৃতদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃত রিয়াজউদ্দীন ও সেখ সফিকুলকে আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি করানো হয়। বুধবার পুনরায় ধৃতদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন খারিজ করে দেন। এবং টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে
আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। যদিও পুলিশের দাবি, দুর্গাপুরের ঘটনা 'গণধর্ষণ নয়, এটি ধর্ষণ, একজনেরই কাজ।'
এদিন নির্যাতিতার আইনজীবি পার্থ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক দাবী করে বলেন, পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী ছয় জনই দোষী। ঘটনার মাস্টারমাইন্ড নির্যাতিতার সহপাঠী। সেই বাকিদের শনাক্ত করেছে। মেয়েটিকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে নিয়ে গিয়েছিল। গোটা ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং সহপাঠী ছেলেটির মাধ্যম দিয়ে হয়েছে। তিনি আরও দাবী করে বলেন, মেয়েটির সহপাঠী ওয়াসিফ আলি বিজড়া গ্রামের মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তে যেত। সেখানেই বাকি অভিযুক্তদের সঙ্গে পরিচয়। সহপাঠীর সঙ্গে বাকিদের অনেক আগে থেকে যোগাযোগ ছিল। তাই সকলের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত করা হোক। জানা গেছে, মেয়েটির মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নির্যাতিতার সহপাঠীর হোস্টেলরুম থেকে বেশ কিছু অব্যাবহৃত কন্ডোম বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত সহপাঠীর উকিল প্রজ্ঞাদীপ্ত রায় বলেন, দুজনের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে। কোনোভাবেই দোষী নয় ওয়াসিফ আলি। ছেলেটি মেধাবী, তার পড়াশোনা যাতে চালিয়ে যেতে পারে তার আবেদনও করা হয়েছে।
এদিন সরকারপক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, যা সত্যি, সেটাই মেয়েটি বয়ানে লিখেছে। ধৃতরা প্রত্যেকে বিভিন্নভাবে ঘটনায় জড়িত। যারা যেভাবে যুক্ত সেটা মামলায় আসছে। তদন্তকারীরা দ্রুত চার্জশিট দেওয়ার চেষ্টা করছে। ঘটনার দিন ঘুটঘুটে অন্ধকার ছিল, কিভাবে টিআই প্যারেডে শনাক্ত করবে নির্যাতিতা। যদি অন্ধকার প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবি বিভাসবাবু বলেন, অন্ধকার হলেও, একাধিক অভিযুক্তের হাতে মোবাইল ফোন ছিল। ওই মোবাইল ফোনে শক্তিশালি টর্চলাইট থাকে। তিনি আরও বলেন,
তদন্তের স্বার্থে আমরা ধর্ষণের আগে চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে সহপাঠীর কথোপকথনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বিচারকের সামনে তুলে ধরার আর্জি জানানো হয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা