বাঁকুড়া, ৯ অক্টোবর (হি.স.) : হাতির হানা থেকে ফসল রক্ষায় প্রাচীন প্রথা মেনে গভীর বিশ্বাসে চলছে বাঁকুড়ায় গজলক্ষ্মীর পুজো। বাঁকুড়ার গ্রামাঞ্চলে কৃষকরাদেবীর আরাধনায় ব্যস্ত। অন্যদিকে প্রতিরাতে হাতির দল তছনছ করছে বিঘার পর বিঘা জমির ধান ও সবজি। এতে চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
চলতি মরশুমে টানা বৃষ্টিতে এক দফা ক্ষতির পর ঋণ করে ফসল ফলিয়েছিলেন কৃষকরা। কিন্তু হাতির দাপটে সেই ফসলও নষ্ট হচ্ছে। বাঁকুড়ার উত্তর বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বড়জোড়া এলাকায় মোট ৬৬টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে সাহারজোড়ায় ৫৮টি, রাধুরবাইদে ১টি এবং চক পাত্রসায়রে ৭টি। খাবারের সন্ধানে রাতে এই হাতির দল ঢুকে পড়ছে চাষের জমি ও লোকালয়ে, ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। শিল্প শহর বড়জোড়ার মতই জঙ্গলমহল এলাকার সারেঙ্গা হাতির দলের তান্ডবে অতিষ্ঠ মানুষ। বিগত বুধ ও বৃহস্পতিবার চাষীদের বিক্ষোভে সরব হতে দেখা যায়। মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়–এর দিক থেকে প্রায় ২৫টি হাতির দল কাড়ভাঙ্গা ও কয়মা হয়ে সারেঙ্গা দক্ষিণ বন বিভাগের হাতিবাড়ি, সারুলিয়া, বামনিশোল ও বেলডাঙ্গা এলাকায় প্রবেশ করে। ধান, করলা, ঝিঙে, কুমড়ো-সহ নানান ফসল নষ্ট করেছে তারা। চাষিদের অভিযোগ, বনদফতর নির্লিপ্ত। ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাত্র ৫০০ টাকা দেওয়া হয়, তাও পেতে কয়েক দিন ঘুরতে হয় দফতরে।
সারেঙ্গা পঞ্চায়েতের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ শেখর রাউত জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সমস্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বনদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে হাতিদের অন্যত্র সরানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, জেলার গোপবাঁদী গ্রামে কোজাগরী পূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী গজলক্ষ্মী পুজো। প্রায় ২৫০ বছর ধরে চলে আসা এই পুজো পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, গজলক্ষ্মীর আরাধনা করলে হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল ও গ্রাম রক্ষা পায়।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট