গণ্ডাছড়া (ত্রিপুরা), ৯ অক্টোবর (হি.স.) : কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত “অটল জলধারা” প্রকল্প আজ কার্যত বেপাত্তা। বর্তমান প্রযুক্তি ও ডিজিটাল যুগেও ধলাই জেলার গণ্ডাছড়া মহকুমার পাহাড়ি ও প্রত্যন্ত জনপদের মানুষ এখনও কাঁচা কুয়ো ও লুঙ্গার গর্ত খুঁড়ে অপরিশ্রুত জল পান করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলত, এইসব অঞ্চলের জনজাতি মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই নানান জলের জনিত রোগে ভুগছেন।
গণ্ডাছড়া মহকুমায় প্রায় দুই দশক ধরে এই জল সমস্যা স্থায়ী আকার ধারণ করেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। অভিযোগ, দুর্গাপূজার দশমীর দিন থেকে ষাটকার্ড, দুর্গাপুর ও হরিপুর এলাকায় তীব্র পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডি.ডব্লিউ.এস দফতর ওভার হেড ট্যাঙ্কের মাধ্যমে এই এলাকাগুলিতে পরিশ্রুত জল সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু, কয়েক মাস ধরে জল সরবরাহে কোনও নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। সপ্তাহে মাত্র দুই বা তিন দিন কর্দমাক্ত, নোংরা জল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হরিপুর গ্রামের মহিলারা জানান, দশমীর দিন থেকে তাঁরা এক ফোঁটা পরিশ্রুত জল পাচ্ছেন না। বরং জলে মোরগের চামড়া, পাখা ও মাংসের টুকরো পর্যন্ত ভাসতে দেখা গেছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার হরিপুরের শতাধিক মহিলা-পুরুষ গণ্ডাছড়ার ডি.ডব্লিউ.এস অফিসে বিক্ষোভ দেখান। প্রথমে এস.ডি.ও চেংচাগ্য মগের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর ক্ষুব্ধ মহিলারা অফিসের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ঘটনার খবর পেয়ে ডিসিএম দিলীপ দেববর্মা সিআরপিএফ ও পুলিশের দল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ডিসিএম দিলীপ দেববর্মা আশ্বাস দিলে অবশেষে মহিলারা অফিসের তালা খুলে দেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, “অটল জলধারা” প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ি জনপদে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া, কিন্তু কোটি কোটি টাকা ব্যয় হওয়া সত্ত্বেও আজও সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ