২৬-এর ৩১ ডিসেম্বরে খুলে যাবে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোর ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক : মন্ত্রী কৌশিক
হাফলং (অসম), ২২ নভেম্বর (হি.স.) : শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের হারাঙ্গাজাও থেকে নিরিমবাংলো পর্যন্ত দুই লেন সড়ক আগামী ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলে দেওয়া হবে, জানিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য, গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক, খনি ও খনিজ সম্পদ দফতরের মন্ত্রী কৌ
রাজ্যসভার সদস্য কণাদ পুরকায়স্থ, দুই বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম ও নিহাররঞ্জন দাসদের সঙ্গে মন্ত্রী কৌশিক রায়


হারাঙ্গাজাও-জাটিঙ্গা এলাকা পরিদর্শন মন্ত্রী কৌশিক রায়ের। রয়েছেন রাজ্যসভার সদস্য কণাদ পুরকায়স্থ।


হাফলং (অসম), ২২ নভেম্বর (হি.স.) : শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের হারাঙ্গাজাও থেকে নিরিমবাংলো পর্যন্ত দুই লেন সড়ক আগামী ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর খুলে দেওয়া হবে, জানিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য, গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক, খনি ও খনিজ সম্পদ দফতরের মন্ত্রী কৌশিক রায়।

আজ শনিবার রাজ্যসভার সদস্য কণাদ পুরকায়স্থদের সঙ্গে নিয়ে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের হারাঙ্গাজাও থেকে জাটিঙ্গা পর্যন্ত এলাকা পরিদর্শন করে চলমান কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন মন্ত্রী কৌশিক। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (নাহাই)-এর আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছেন।

পরিদর্শন শেষ করে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের উদ্যোগে হাফলং আবর্ত ভবনে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সড়ক যোগাযোগ, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং জনসাধারণের সুবিধার মূল বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মসৃণ পরিবহণ নিশ্চিত করতে চলমান কাজগুলি সময়মতো সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন মন্ত্রী রায়।

পর্যালোচনা সভায় ছিলেন রাজ্যসভার সদস্য কণাদ পুরকায়স্থ, দুই বিধায়ক উধারবন্দের মিহিরকান্তি সোম ও ধলাইয়ের নীহারঞ্জন দাস, উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য দনপাইনন থাওসেন, পার্বত্য পরিষদের প্রধানসচিব পার্থসারথি জহরি ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক মুনীন্দ্রনাথ নাগাতে, পুলিশ সুপার রিপুঞ্জয় কাকাতি সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।

সভার পর মন্ত্রী কৌশিক রায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি হারাঙ্গাজাও থেকে নিরিমবাংলো পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার অংশ দুই লেন সড়ক জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৭-৮ কিলোমিটার অংশ আংশিকভাবে চার লেনের এবং আংশিকভাবে দুই লেনের থাকবে। এখন পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ ৮৫.৩ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হারাঙ্গাজাও থেকে নিরিমবাংলো পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ১,৬৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্নের শিলচর-সৌরাষ্ট্র ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোরের ১৯৯৯ সালে শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রী বিসি খান্ডারি এবং তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিং। তার পর ২০০৪ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০০৮ সালে শিলচর থেকে বালাছড়া পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার অংশের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও বন ও পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্রের গ্যাঁড়াকলে আটকে পড়েছিল বালাছড়া থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার অংশের কাজ।

তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হওয়ার পর ২০১৭ সালে ওই অংশে বন ও পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র মেলার পর বালাছড়া থেকে হারাঙ্গাজাও ২৩ কিলোমিটার অংশের সড়ক নির্মাণের জন্য ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বর্তমানে বালাছড়া থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পূৰ্ণ হয়ে গেছে। তবে ভূমিধসের ফলে সড়কের কিছু অংশ নষ্ট হয়েছে। ওই অংশগুলি মেরামতের কাজ চলছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সে সময় হারাঙ্গাজাও থেকে জাটিঙ্গা, জাটিঙ্গা থেকে মাহুর, মাহুর থেকে নিরিমবাংলো পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ হলেও ভূধসের জেরে ওই অংশগুলির রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুনরায় কেন্দ্রীয় সরকার ওই অংশের রাস্তা নির্মাণের জন্য ১,৬৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে।

বর্তমানে হারাঙ্গাজাও থেকে নিরিমবাংলো অংশে কাজ প্রায় সম্পূৰ্ণ হয়েছে এবং ৩১ জানুয়ারি (২০২৬) ওই অংশের দুই লেন সড়ক খুলে দেওয়া হবে জনসাধারণের জন্য। এছাড়া আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে চারলেন সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী কৌশিক রায়।

আজকের বৈঠকে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিক সমাজের উদ্বেগও মন্ত্রী শুনেছেন। শুনে মন্ত্রী জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা এগিয়ে আসার সাথে সাথে প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করতে।

হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব




 

 rajesh pande