
আগরতলা, ২৪ নভেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরায় শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নেই বর্তমান সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। যোগ্য মানবসম্পদের অভাব যাতে না হয় সেদিকেও সমান নজর দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে ডাই-ইন-হারনেস সহ বিভিন্ন দফতরে মোট ২০ হাজার ১৮১ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা দফতরেই ৬ হাজার ৯৯৮ জনকে পি.জি.টি., জি.টি. এবং ইউ.জি.টি. হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার আগরতলায় মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের অধীনে ১০২ জন ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার এবং ৫৫ জন স্পেশাল এডুকেটরদের হাতে নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। প্রতীকীভাবে কয়েকজনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে এবং যোগ্যতা থাকলে রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই চাকরি পাওয়া সম্ভব। তাঁর কথায়, “ক্লাস রুমকে মন্দির হিসেবে মনে করে প্রস্তুতি নিয়ে পড়াতে হবে। নিজেদের সবসময় আপডেট রাখতে হবে, তবেই ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনন্য উদাহরণ হতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগেই জাতীয় শিক্ষানীতি দেশে চালু হয়েছে, যার লক্ষ্য ভারতীয় সংস্কৃতির ভিত্তিতে ঐতিহ্যময় শিক্ষার নবজাগরণ। রাজ্যে ‘নিপুণ ত্রিপুরা’, ‘সি.এম. সাথ', ‘মিশন মুকুল’, ‘সহর্ষ’, ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি ও ৮৪টি বিদ্যালয়কে পিএম-শ্রীতে রূপান্তর, ‘সি.এম. কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা’ প্রভৃতি প্রকল্পে শিক্ষা অবকাঠামো ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে।
বর্তমানে ত্রিপুরায় ৩টি এম.বি.বি.এস কলেজ, নার্সিং কলেজ, এএনএম ও জিএনএম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কৃষি, ফিসারি, ভেটেরিনারি কলেজ, ট্রিপল আইটি, ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, এনআইটি সহ একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিজনেস সামিটে ৮টি রাজ্যের সঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ চুক্তি হয়েছে। তার মধ্যে ত্রিপুরার অংশ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের অধিকর্তা এন.সি. শর্মা জানান, স্পেশাল এডুকেটরদের বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং সেখানে দিব্যাঙ্গ শিক্ষার্থীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যে বর্তমানে ৩৫০০ জনের মতো দৃষ্টিহীন ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে—এ কথা উল্লেখ করে বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার জানান, তাদের কল্যাণে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বুনিয়াদি শিক্ষা দফতরের অধিকর্তা রাজীব দত্ত, এসসিইআরটি-এর অধিকর্তা এল ডালং সহ দফগরের বহু আধিকারিক, নিয়োগপ্রাপক ও অভিভাবকরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ