বিভিন্ন কার্যসূচির মধ্য দিয়ে পাথারকা‌ন্দি‌তে পালিত গোকুলানন্দ গী‌তিস্বামীর জন্মবা‌র্ষিকী
পাথারকা‌ন্দি‌ (অসম), ২৬ নভেম্বর (হি.স.) : বি‌ভিন্ন কার্যসূ‌চির ম‌ধ্য দি‌য়ে আজ বুধবার পাথারকান্দিতে পালিত হয়েছে বিষ্ণু‌প্রিয়া মণিপুরি সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ চারণকবি গোকুলানন্দ গীতিস্বামীর ১২৯-তম জন্মবার্ষিকী। এদিন সকা‌লে গোকুলানন্দ গীতিস্বামী স্ম
গ‌োকুলানন্দ গীতিস্বামী স্মৃতি কমিটির পদাধিকারীগণ


পাথারকা‌ন্দি‌ (অসম), ২৬ নভেম্বর (হি.স.) : বি‌ভিন্ন কার্যসূ‌চির ম‌ধ্য দি‌য়ে আজ বুধবার পাথারকান্দিতে পালিত হয়েছে বিষ্ণু‌প্রিয়া মণিপুরি সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ চারণকবি গোকুলানন্দ গীতিস্বামীর ১২৯-তম জন্মবার্ষিকী।

এদিন সকা‌লে গোকুলানন্দ গীতিস্বামী স্মৃতিচারণ কমিটির ব্যবস্থাপনায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা‌টি পাথারকান্দির বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে। পরে পাথারকান্দির বিশ্বজিৎ সিংহের হাতে নির্মিত গোকুলানন্দ গীতিস্বামীর আবক্ষ মূর্তি পাথারকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যলয়ের পার্শ্ববর্তী মুণ্ডমালাস্থিত শ্মশানঘাট সংযোগী রাস্তার পা‌শে স্থাপন করা হয়। গোকুলানন্দের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ক‌রেন বি‌শিষ্টজ‌নেরা।

শে‌ষে অনুষ্ঠিত হয় গীতিস্বামীর জীবনী শীর্ষক এক ম‌নোজ্ঞ আলোচনা সভা। এতে বিভিন্ন বক্তা গোকুলানন্দ গীতিস্বামীর বিষয়ে বিস্তর আলোকপাত ক‌রেন। বক্তারা ব‌লেন, গোকুলানন্দজি ছিলেন বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সাহিত্যের অন্যতম দিশারী। তিনিই সর্বপ্রথম বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিদের ভেতরে জাতীয়তাবোধ ও মাতৃভাষার প্রতি চেতনা জাগ্রত করতে সক্ষম হন। গোকুলানন্দ গীতিস্বামী মূলত ছিলেন একজন চারণকবি। তাঁর সার্বিক প্রচেষ্টায় বিষ্ণু‌প্রিয়া সমা‌জে নতুন দিগ‌ন্তের সূচনা হয়।

গোকুলানন্দের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের মৌলভিবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার মাধবপুর ইউনিয়নের জবলারপার গ্রা‌মে। ‌১৮৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর জন্মগ্রহন ক‌রেন তিনি। প‌রে তি‌নি মাধবপুর নিম্ন বাংলা স্কু‌লে লেখাপড়ার পর ভারতের ত্রিপুরায় চলে আসেন। সমাজ ও রাজনীতি বিষয়ে গোকুলানন্দের জ্ঞান ও মতাদর্শ ছিল অত্যলন্ত প্রখর ও স্বচ্ছ। তাঁর র‌চিত বি‌ভিন্ন ধর্মমূলক গানের পর‌তে পর‌তে লি‌পিবদ্ধ র‌য়ে‌ছে তৎকা‌লীন সমাজ ব্যবস্থার গোঁড়ামি ও পশ্চাদপদতার নানা কথা। তাঁকে তখনকার সম‌য় অনে‌কে মন‌ভোলা বা পাগল প্রকৃ‌তির লোক ব‌লে ভাবতেন। ১৯৩৩ সালে তি‌নি নিজের জ্ঞান ও দক্ষতার দৌল‌তে পাথারকা‌ন্দির প্রতাপগড়ের রাজারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত এক মহাসভায় ‘গীতিস্বামী’ নামে সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত হন। ভক্ত‌দের কা‌ছে তি‌নি দয়ার সাগর ও নয়‌নের ম‌ণি রূ‌পে প‌রিগ‌ণিত হওয়ায় ১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে পর-পর দুবার ত্রিপুরার বিধায়কও নির্বা‌চিত হন।

অন্যয়দি‌কে গোকুলানন্দ স্মৃতি কমিটির কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর তদানীন্তন করিমগঞ্জ (বর্তমান শ্রীভূমি)–এর জেলাশাসক জন ইংতি কাথার গোকুলানন্দ গীতিস্বামী স্মৃতিচারণ কমিটির নামে উনাম কিত্তে মৌজার অন্তর্গত ৫৫ নম্বর পাট্টার ১৩ নম্বর দাগে ০ দশমিক ৫৫ একর জায়গা বরাদ্দ করেন। সেই জায়গায় আজ গোকুলানন্দ গীতিস্বামীর আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে সুনীল সিনহা, বিশ্বজিৎ সিংহ, সঞ্জু সিনহা, বিমল সিনহা সহ বিদ্যাপতি শর্ম্মা, পদ্মাবতী সিংহ, প্রতিমা সিংহ, শংকরলাল দাস, শ্যামল সিনহা, সহদেব সিনহা, ভাস্কর সিনহা প্রমুখ বহুজন উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

হিন্দুস্থান সমাচার / মনোজিৎ দাস




 

 rajesh pande