
কলকাতা, ২৬ নভেম্বর (হি.স.): রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেদের অপদার্থতা ঢাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গের অসহায় মানুষদের অর্থ দিয়ে কিনে নেওয়া চেষ্টা করেন। বুধবার এই অভিযোগ করেন বিজেপি-র সংস্কৃতি শাখার আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষ।
বারাসতে চোখ চুরির সাম্প্রতিক বিতর্কের বিষয়ে রুদ্রনীল সাংবাদিকদের বলেন, রাজ্যে কোনো তৃণমূলী ক্রিমিনাল বা অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা যখন কোনো সর্বনাশ হয়ে যায় তখন তিনি টাকা দিয়ে সেই সমস্ত কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে বারাসাতে এক মৃত ব্যক্তির চোখ চুরি করা হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে প্রীতম বাবুর মৃতদেহ যখন হাসপাতালে এসে পৌঁছায় তখন তাঁর চোখ ঠিক ছিল, কিন্তু হাসপাতালে মর্গ থেকে তাঁর চোখ চুরি হয়ে যায়।
চাকরি, রেশন, কয়লা সহ নানাবিধ চুরির পর তৃণমূলের চোখ চুরির ঘটনা এখন আমাদের সামনে। বিফল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নানা উদাহরণ তুলে ধরে রুদ্রনীল বলেন, প্রীতমবাবুর দিদি জানিয়েছেন হাসপাতালের ফ্রীজিং ব্যবস্থা খারাপ। মর্গে দেহ রাখার জন্য বরফ কিনে দিতে হয়েছিল বাড়ির লোককে।
রাজ্যের এরকম অনেক হাসপাতালসহ মুর্শিদাবাদ কিংবা মালদার হাসপাতালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত সেখানে লাশের স্তুপ জমে রয়েছে। বারবার অঙ্গ পাচার চক্রের ঘটনা সামনে আসছে। তিনি হাবড়া, বারাসাত অঞ্চলে এর আগে কিডনি পাচার চক্রের উল্লেখ করেন। সেখানে একজন তৃণমূল নেতার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাও সামনে আনেন।
সেই সঙ্গে তিনি জানান মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান ড. তপন জানা অঙ্গ পাচারের সঙ্গে যুক্ত।
এছাড়াও তিনি বলেন দিন কয়েক আগে বারাসাত হাসপাতালে এক নাবালিকাকে হেনস্থা করা হয়। সেই বিষয়ে পকসোতে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই সংক্রান্ত বিষয় এবং হাসপাতালে অব্যবস্থার কারণে তিনি কয়েকজন বিজেপি কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে দেখা করতে যান সুপারের সঙ্গে। তিনি ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ তুলে ধরে দেখান সেখানে সুপার বেশ খোশ গল্প করেছিলেন।
রুদ্রনীল বলেন, ২০১৬ সাল থেকে একই চেয়ারে বসে থাকা এই সুব্রত মন্ডল বাবু স্বাস্থ্য দফতরের ব্যর্থতা আন্তরিকতা দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর অভিনয়, কবিতার প্রশংসা করেন। প্রশংসার পরেই তাঁর নামে অভিযোগ করা হয় থানায়। অভিযোগ করা হয়, তিনি নাকি সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন, হুমকি দিয়েছেন। তারপর ২১ তারিখ রাতারাতি বদলি করে দেওয়া হয় সুপারকে। তারপরই এই চোখ চুরির ঘটনা সামনে আসে।
রুদ্রনীল বলেন, বাম আমলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির যে দুর্নীতি শুরু হয়েছিল তা শিল্পে পরিণত করেছে আজকের এই তৃণমূল সরকার। মানুষের করের টাকায় চলা সরকারি হাসপাতালে আমরা যখন জনমানুষের অসুবিধা তুলে ধরার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে বৈঠক করতে যাই সেটা দেখে এই তৃণমূলের দালালরা আতঙ্কিত হয় এবং ভুয়ো এফআইআর করায়।
চাল চুরি, ভোট চুরি, ভোটাধিকার চুরি, চাকরি চুরির পরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরির ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে চূড়ান্ত বিফল প্রমাণ করে। তিনি বলেন প্রত্যেকটি বিধানসভার প্রত্যেকটি অলি গলি পরিচালনা করছে শাসকদলের দুর্বৃত্তরা।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত