
কোচবিহার, ৫ নভেম্বর (হি. স.) : রাস উৎসবে সেজে উঠেছে কোচবিহারের মদনমোহনবাড়ি। রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে এদিন গোটা মদনমোহনবাড়ি সাজিয়ে তোলা হয়। বুধবার সারাদিন উপোস থেকে মাথায় পাগড়ি পরে রাজার বেশে পুজোয় বসেন জেলাশাসক রাজু মিশ্র।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই জেলাশাসকের দায়িত্ব পেয়ে কোচবিহারে এসেছেন রাজু মিশ্র। এখানে আসার পর রাস উৎসবের পুজো করার দায়িত্ব তাঁর কাছে অন্যতম প্রাপ্তি বলে জানালেন তিনি। বললেন, ‘মদনমোহন কোচবিহারের কুলদেবতা। এই পুজো করার সুযোগ আমার কাছে সৌভাগ্যের। প্রত্যেকে যাতে ভালো থাকে সেই প্রার্থনা করেছি।’
সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার পর ভক্তদের জন্য মন্দিরের প্রবেশ পথ খোলা হলেও মন্দিরের বাইরে লাইন দেখা গিয়েছিল দুপুর থেকেই। সেই লাইন জেনকিন্স স্কুলের মোড় পেরিয়ে হাসপাতাল চৌপথির দিকে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। দিনহাটা থেকে আসা বাসন্তী বর্মনের কথায়, ‘মেলা যতদিনই থাকুক না কেন রাস পূর্ণিমার দিনই রাসচক্র ঘোরাবো বলে ঠিক করেছি। তাই দুপুর থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। রাস ঘোরাতে পেরেছি রাতের বেলা।’ বুধবার সন্ধ্যায় বংশ পরম্পরায় মৈথিলী ব্রাহ্মণ রাকেশ পাণ্ডে পসার ভাঙেন। একটি পাতিলে গঙ্গা জল, দুধ, তিল সহ নানা সামগ্রী রাখা হয়। সাতবার প্রদক্ষিণ করে সেটি মাটিতে ফেলে ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর মদনমোহনবাড়ির মাঠে পুজো ও যজ্ঞ হয়। পুজো করেন পুরোহিত খগপতি মিশ্র। দীর্ঘক্ষণ পুজো চলার পর তিথি মেনে জেলাশাসক প্রথমে রাসচক্র ঘোরান। এরপর সেখানে থাকা অতিথিরা রাসচক্র ঘুরিয়ে আশীর্বাদ নেন। রাজ আমলে স্বয়ং মহারাজারা প্রথমে এই রাসচক্র ঘোরাতেন। এখন দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে জেলাশাসক এই দায়িত্বভার পালন করেন।
রাসচক্র রাস ঘোরানোর সময় মন্দির চত্বরে বহু মানুষ উপস্থিত থাকায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভিড় সামলাতে পুলিশকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। উদ্বোধনী পর্বে মন্ত্রী উদয়ন গুহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মন, সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পুলিশ সুপার সন্দীপ কাররা সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তবে অতিথি বরণের সময় সরকারি আধিকারিকদের আগে ও জনপ্রতিনিধিদের পরে বরণ করা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন উদয়ন গুহ। ‘প্রটোকল’ না মানায় দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য তথা সদর মহকুমা শাসক গোবিন্দ নন্দীর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় মন্ত্রীকে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি