আপডেট...অরুণাচলে দশ হাজার ফুট গভীর খাদে শ্ৰমিকবাহী ট্রাক, ২১ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা, উদ্ধার ১৯ জনের মৃতদেহ
ইটানগর, ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : অরুণাচল প্ৰদেশের আঞ্জাও জেলার অন্তর্গত ভারত-চীন সীমান্তের কাছে উচ্চ-উচ্চতায় (হাই-অল্টিটিউড) অবস্থিত হায়ুলিয়াং-চাগলাগাম সরু পাহাড়ি রাস্তা থেকে শ্ৰমিকবাহী একটি ট্রাক প্রায় ১০ হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে অসমের ২১ জন শ্রম
হায়ুলিয়াং-চাগলাগাম সরু পাহাড়ি রাস্তায় সংঘটিত দুৰ্ঘটনায় জীবিত শ্ৰমিক


ইটানগর, ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : অরুণাচল প্ৰদেশের আঞ্জাও জেলার অন্তর্গত ভারত-চীন সীমান্তের কাছে উচ্চ-উচ্চতায় (হাই-অল্টিটিউড) অবস্থিত হায়ুলিয়াং-চাগলাগাম সরু পাহাড়ি রাস্তা থেকে শ্ৰমিকবাহী একটি ট্রাক প্রায় ১০ হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে অসমের ২১ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী অসমের তিনসুকিয়া জেলার অন্তর্গত গেলাপুখুরি চা বাগানের বাসিন্দা। ইতিমধ্যে ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনসুকিয়া জেলা প্রশাসন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্জাও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কে রয়েছে।

আনজাও-এর ডেপুটি কমিশনার (জেলাশাসক) মিলো কোজিন দুর্ঘটনার নিশ্চিত করে বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভারত-চীন সীমান্তের কাছে উচ্চ-উচ্চতায় অবস্থিত হায়ুলিয়াং-চাগলাগাম সরু পাহাড়ি রাস্তা থেকে পিছলে ঢাল বেয়ে প্রায় দশ হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে যায় শ্রমিকবাহী একটি ট্রাক। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ট্রাকে ছিলেন ২২ জন শ্রমিক। তাঁরা অরুণাচল প্রদেশের পার্শ্ববর্তী অসমের তিনসুকিয়া জেলার বাসিন্দা।

জেলাশাসক বলেন, এঁরা সকলে ভারত-চীন সীমান্ত অঞ্চলে রাস্তা ও অন্যান্য নির্মাণকাজে নিযুক্ত ছিলেন। আজ সকালে তাঁরা অরুণাচল প্রদেশের পার্শ্ববর্তী অসমের তিনসুকিয়া জেলার ছাতে (পোড়াঘর) যাওয়ার সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে।

তিনি জানান, ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর টিম। ভূখণ্ডটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। তাছাড়া অত্যন্ত প্রতিকূল আবহাওয়া। উচ্চ-উচ্চতায় পাহাড়ি এলাকা, ঘন কুয়াশায় ঘেরা, নরম ও পাথর-বালি মিশ্রিত মাটির দরুন চলমান উদ্ধার অভিযানকে জটিল করে তুলেছে। তাছাড়া উদ্ধারের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও নেই। তাই সম্পূর্ণ উদ্ধারকার্যে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে ইতিমধ্যে ১৯টি মৃতদেহ গিরিখাতের গভীর থেকে উদ্ধার করেছেন এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর জওয়ানরা। একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, জানান জেলাশাসক।

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আধিকারিকগণ (ডিডিএমও) ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানের তদারকি করছেন। ডিডিএমওরা জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান চলছে। সব কয়টি মৃতদেহ উদ্ধারের পর আনুষ্ঠানিক শনাক্তকরণের জন্য আসাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন হবে। সব মৃতদেহ উদ্ধারের পর, শনাক্তকরণ এবং ময়নাতদন্তের জন্য তিনসুকিয়ায় (অসম) পাঠানো হবে, জানান জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আধিকারিকগণ।

১৯ জন মৃত শ্রমিকের একটি প্রাথমিক তালিকা নথিভুক্ত করেছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৰ্তৃপক্ষ। উদ্ধারকৃত শ্রমিকদের গুধেশ্বর দীপ (২৩), রাহুল কুমার (২৫), সমীর দীপ (২২), অর্জুন কুমার (২৮), পঙ্কজ মানকি (২০), অজয় মানকি (৩০), আবজয় কুমার (২৬), অভয় ধুরিয়া (২৪), রোহিত মানকি (২০), ধীরেন্দ্র কুমার (২২), আদর তাঁতি (২৪), ধীরেন চারিয়া (২৮), রঞ্জন নাগ (২১), দীপ গোয়ালা (২৮), রামসেলোক বুনা (২৬), সমীরন নাগ (২৬), বিনয় কুমার (২৬), করণ কুমার (২৬) এবং জুনাশ মুণ্ডা (২০) বলে শনাক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, মৰ্মান্তিক দুর্ঘটনার পর অসমের তিনসুকিয়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে শোকের বন্যা বইছে। তিনসুকিয়া জেলা প্রশাসন ভুক্তভোগী পরিবারগুলিকে সহায়তা করতে এবং চ্যালেঞ্জিং উদ্ধার অভিযান পর্যবেক্ষণের জন্য আঞ্জাও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় করছে বলে জানা গেছে।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande