
আগরতলা, ২০ ডিসেম্বর (হি.স.) : “থানা হলো ন্যায়বিচারের প্রথম দরজা”— মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থানার ভূমিকা আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে শনিবার আগরতলায় প্রজ্ঞা ভবনে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, বিভিন্ন বিভাগের আইজি, জেলার এসপি, মহকুমা স্তরের পুলিশ আধিকারিক, ওসি এবং থানা স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অতীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে থানার আধিকারিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেন না। ফলে জনগণ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতেন। তবে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর পুলিশকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে এবং আইন রক্ষায় তারা যথাযথভাবে কাজ করছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন,
“পুলিশের পোশাক তাঁদের অলঙ্কার। এই মর্যাদা রক্ষা করাই দায়িত্ব।”
তিনি থানার ওসিদের দৈনন্দিন কাজের মূল্যায়ন জোরদার করার পাশাপাশি চার্জশিট প্রদান, মামলার অগ্রগতি, পিপি–পুলিশ সমন্বয় বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে পুলিশের নিজস্ব সমস্যা, থানাগুলির অবকাঠামো, শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখা, ও আইন প্রয়োগের গতিশীলতা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভ্রান্তি ছড়ানো বা আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দেন তিনি। প্রয়াস কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে আরও আইনি সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সারা দেশে প্রশংসিত। অপরাধের হার, মহিলা নির্যাতন, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ এবং সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সাজার হার বেড়েছে বহুগুণে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে বলেও স্পষ্ট বার্তা দেন তিনি। শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ত্রিপুরায় শান্তির বাতাবরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই শান্তি নষ্টের কোনও অপচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।”
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ