
বাঁকুড়া, ২৯ ডিসেম্বর (হি.স.): রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা না হলেও রাজনৈতিক মহলে প্রস্তুতির তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই আবহে বছরের শেষ লগ্নে মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় জনসভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই জনসভা কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রস্তুতির সূচনা।
বর্তমানে রাজ্যজুড়ে এসআইআর শুনানি চলছে। এর পাশাপাশি বিএলও-র আত্মহত্যার ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের রাণিবাঁধ এলাকায় এক বিএলও-র আত্মহত্যার ঘটনা রাজনৈতিক মহলে বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের কী বার্তা দেন, সে দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
এদিকে জেলার শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে বিজেপি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, শ্রমিক মহলেও বিজেপির প্রভাব বাড়ছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। বড়জোড়া এলাকায় জনসভার মাধ্যমে শিল্প ও শ্রমিক মহলে সংগঠন আরও মজবুত করাই তৃণমূলের লক্ষ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার ১২টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৮টিতে জয়লাভ করে। পরবর্তীকালে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এবং কোটুলপুরের বিধায়ক হরকলি প্রতিহারী তৃণমূলে যোগ দেন। এই প্রেক্ষাপটে দলনেত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা।
মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল বড়জোড়ার বীরসিংহ ময়দানে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, বিধায়ক অলোক মুখার্জি, মহিলা নেত্রী অলকা সেন মজুমদার-সহ জেলা নেতৃত্ব। ১২০ ফুট চওড়া মঞ্চ, ব্যারিকেড, ভিআইপি বক্স এবং সাংবাদিকদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা-সহ যাবতীয় ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা করা হয়েছে।
সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী জানান, মঙ্গলবারের জনসভায় প্রায় এক লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এজন্য প্রায় ৮০০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকেও কর্মী-সমর্থকরা জনসভায় যোগ দেবেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের জনসভা মানেই কার্যত অঘোষিত হরতালের চিত্র—এমন অভিযোগ তুলছেন নিত্যযাত্রীরা। বাস ও অন্যান্য যানবাহনের বড় অংশ দলীয় কর্মীদের পরিবহণে ব্যবহৃত হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির আশঙ্কাও বাড়ছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট