
কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর ( হি. স.): সালটা ১৯৪৩, ৩০ ডিসেম্বর । স্বাধীন আজাদ হিন্দ বাহিনীর ধ্বজা উঠেছিল আন্দামান- নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ারে । ১২৫ বছর অতিবাহিত হলেও , কাটেনি নেতাজি অন্তর্ধানের জট। সেই নিয়েই আজাদ হিন্দ পিপিলস মিশনের তরফে মঙ্গলবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে হলো একটি বিশেষ সাংবাদিক সম্মেলন । সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সভাপতি এবং নেতাজি গবেষক ডঃ জয়ন্ত চৌধুরী , সমাজ সেবক ডঃ গৌতম পান্ডে, রাজ্য সরকারের টিইউসিসি - র ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি আম্বিয়া হোসেন এবং সমাজ সেবক তেজেন্দ্র লাল দাস ।
সম্মেলনের শুরু হয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে । এরপর স্বাগত ভাষণে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অন্যতম বিশিষ্ট অথিতি এস পি তিওয়ারি । এদিন তিনি একটি স্মারকলিপি প্রকাশ করেন। এই স্মারকলিপিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাখা হয়েছে দশটি দাবি ।
দাবিগুলোতে জানানো হয়েছে , প্রথমত ও দ্বিতীয়ত, আজাদ হিন্দ বাহিনীর সরকার কে ভারতের প্রথম স্বাধীন সরকার এবং নেতাজিকে ভারতের স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়া হোক। তৃতীয়ত , ভারতীয় মুদ্রায় নেতাজির স্থানকে সুনিশ্চিত করা । চতুর্থত, দিল্লিতে লালকেলার কাছে নেতাজি এবং আজাদ হিন্দ বাহিনীর স্মৃতিতে সৌধ নির্মাণ। পঞ্চমত , ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং তাঁর নামের একটি সামাজিক আসন সুনিশ্চিত করা । ষষ্ঠত, তৎকালীন নেহেরু সরকারের সময় সেনাবাহিনীতে নেতাজির অবদানকে প্রত্যাহার করে তাঁর ছবিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বর্তমান ভারত সরকারের কাছে দাবি , তাঁরা যেন এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন । সপ্তমত, মুখার্জি কমিশনের তদন্তকে সম্পূর্ণ করার জন্য সরকারি উদ্যোগ নেওয়া । অষ্টমত, ২৩ জানুয়ারি দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে তোলা । নবমত, আজাদ হিন্দ বাহিনীর ইতিহাসকে বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পাঠ্যের অন্তর্ভুক্ত করা । দশমত, জয় হিন্দকে ভারতের জাতীয় সমন্ধন হিসেবে মর্যাদা প্রদান ।
বক্তব্যের দ্বিতীয় অর্ধে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংস্থার সভাপতি ডঃ জয়ন্ত চৌধুরী বক্তব্যের সপক্ষে তুলে ধরেছেন মনোজ মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট যা তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কাছে পেশ করা হয়েছিল । এছাড়াও ১৮ আগস্ট, ১৯৪৫ এ তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনার সপক্ষে যে কোনওরকম উল্লেখ্যযোগ্য প্রমাণ নেই সেই বিষয়টিও কার্যত স্পষ্ট হয় । তিনি আরও বলেন, জাপানের মন্দিরে নেতাজির নামে সংরক্ষিত চিতাভস্ম আদপেই তাঁর নয় ,সেই বিষয়টি সরকারের চোখের সামনে তুলে ধরতেই তাঁরা একত্রিত হয়েছে । এরপর বক্তব্যের রেশ টেনে সমাজ সেবক ডঃ গৌতম পান্ডে আরও বেশ কয়েকটি বিষয় যোগ করেন । তার মধ্যে রয়েছে শ্রমিক দিবস হিসেবে ১ মে- র পরিবর্তে ১ জুলাইকে স্বীকৃতি প্রদান এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিবসকে যুব দিবস হিসেবে উদযাপন করা । এরপর জয় হিন্দ ধ্বনির মধ্য দিয়ে সম্মেলনের ইতি টানা হয় ।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৃজিতা বসাক