আপডেট...আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পদচারণা
।। রাজীব দে ।। ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর (হি.স.) : বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপসহীন নেত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা ছিলেন অপারাজেয় নেত্রী। দেশের সংসদীয় নির্বাচনে কখনও পরাজিত হননি ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএন
বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া (ফাইল ফটো)


।। রাজীব দে ।।

ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর (হি.স.) : বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপসহীন নেত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা ছিলেন অপারাজেয় নেত্রী। দেশের সংসদীয় নির্বাচনে কখনও পরাজিত হননি ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।

আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় প্রয়াত হয়েছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে খালেদা ছিলেন তৃতীয়। দুই সন্তান তারেক রহমান পিনো (বিএনপি-র ভাইস চেয়ারপার্সন) এব প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো।

গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে পদার্পণ করে ৪১ বছর পার করেছেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালের ৩০ মে তাঁর স্বামী জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর সংকটে পড়ে দল বিএনপি। জিয়াউরের অবর্তমানে ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি গৃহবধূ থেকে দলে যোগদান করেন খালেদা। ১৯৮৩ সালের মার্চ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন তিনি। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তৃতা পেশ করেন খালেদা। ১৯৮৪ সালের ১০ মে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন জননেত্ৰী খালেদা জিয়া।

গত প্রায় চার দশক ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনে খালেদা জিয়া অন্যতম জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রতিবারই পাঁচটি আসনে প্রার্থী ছিলেন। সবগুলো আসনে তিনি জয়লাভ করেছেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতে জয়ী হন।

তাঁর সম্পর্কে বিএনপি-র চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খানের কাছে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ১৯৮৩ সালে সাত-দলীয় জোট গঠন করে জেনারেল এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম শুরু করে। এরশাদের স্বৈরশাসনকে দেশকে বাঁচাতে দীর্ঘ সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে নিষেধাজ্ঞামূলক আইনের দ্বারা তার স্বাধীন গতিবিধিকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। তবুই কোনও আপস করেননি খালেদা।

প্রায় ৪১ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বহুবার সংকটের মুখে পড়েছেন বেগম জিয়া। ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি। আর দুর্নীতির মামলায় দু-বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি খালেদা। সবশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনও বয়কট করে বিএনপি। অর্থাৎ ২০১৪ সাল থেকে নির্বাচনের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদীয় নির্বাচনে তার তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল।

খালেদা জিয়া ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় দফার দায়িত্বকাল ছিল একমাস।

বিএনপি-র চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির আরও জানান, ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি বিজয়ী হয়। ওই বছরই বেগম জিয়া পঞ্চম সংসদে প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর নেতৃত্বে সংবিধানে দ্বাদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতি থেকে সংসদীয় গণতান্ত্রিক সরকার পদ্ধতিতে প্রবর্তিত হয়।

১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের পর এক মাসের জন্য ষষ্ঠ সংসদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের পর ওই বছর সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যায় খালেদা জিয়ার দল বিএনপি, তিনি হন প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা।

১৯৯৯ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি, গোলাম আজমের (একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত) নেতৃত্বাধীন জামায়াতে ইসলামী ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের সমন্বয়ে গঠিত চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর বিরোধী দলীয় নেতা হন খালেদা জিয়া।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande