
কলকাতা, ৯ ডিসেম্বর (হি.স.): কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার ভারতীয় ভাষা পরিবার বিষয়ক দু’দিনের সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধন হয়। এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছে আইএসআইয়ের লিঙ্গুইস্টিক রিসার্চ ইউনিট, কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের ভারতীয় ভাষা সমিতির তত্ত্বাবধানে। উদ্দেশ্য, ভাষাবিদ, শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং নীতি বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে দু’টি বিশেষ গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করা। এই গ্রন্থ দুটি হল, 'ভারতীয় ভাষা পরিবার: আ নিউ ফ্রেমওয়ার্ক ইন লিঙ্গুইস্টিক্স' এবং 'কলেক্টেড স্টাডিজ অন ভারতীয় ভাষা পরিবার: পার্সপেক্টিভ্স অ্যান্ড হরাইজন্স'। এই দুটি গ্রন্থে উপনিবেশিক ভাষাবৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগের বাইরে এসে ভারতীয় ভাষাগুলির নিহিত সাদৃশ্য এবং সাংস্কৃতিক ও ভাষাতাত্ত্বিক ঐক্যের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইএসআই কলকাতার ডিন অফ স্টাডিজ প্রফেসর বিশ্বব্রত প্রধান। তাঁর মূল ভাষণে তিনি ভাষাতাত্ত্বিক বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের মূল ভাবনার ব্যাখ্যা করেন এবং ভারতের মতো বহুভাষিক দেশে এমন উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। আইএসআইয়ের অধিকর্তা ডঃ সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই সিম্পোজিয়ামের অন্যতম লক্ষ্য আঞ্চলিক ভাষায় বিজ্ঞানশিক্ষার জন্য দেশীয় পরিভাষার একটি বিস্তৃত শব্দকোষ প্রস্তুত করা। এতে উচ্চশিক্ষায় প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং পাশাপাশি, আমাদের সমৃদ্ধ ভাষার ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা সহকারে এগিয়ে চলা সম্ভব হবে। তিনি বলেন যে, আইএসআইয়ের প্রতীকচিহ্নও একই মূল্যবোধ ধারণ করে। আলোচনাসভায় উপস্থিত প্রফেসর শৈলেন্দ্র কে. সিংহ (এনইএইচইউ, শিলং), প্রফেসর এস. অরুণমোজি (হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং খ্যাতনামা জৈবপ্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক বরপ্রসাদ কল্লার মত বিশিষ্ট বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বৌদ্ধিক স্বরাজ বা উপনিবেশমুক্ত দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব তুলে ধরেন। সভায় উপস্থিত সকলে একমত হন যে, ভারতের সাংস্কৃতিক সমন্বয় ভাষাগুলির মধ্যে কোনও শ্রেণীবিভাজন বা উচ্চ-নীচের ধারণা গড়ে উঠতে দেয় না।
১৯৩১ সালে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডক্টর পি সি মহলানবিসের প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট বর্তমানে দেশের এক অন্যতম প্রধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এখানে গণিত, পরিসংখ্যান, তাত্ত্বিক কম্পিউটার বিজ্ঞান, তথ্যবিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা পরিচালিত হয়। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতরের সহযোগিতায় ভারতীয় পরিসংখ্যান পরিষেবার নতুন আধিকারিকদেরও এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো|
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ