এবারেও নজর কাড়বে মেদিনীপুরের মল্লিক বাড়ির পুজো
পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : রাজবাড়ির নামেই এলাকার নাম মল্লিকচক। রাজবাড়ির বাইরে আজও আছে
এবারেও নজর কাড়বে মেদিনীপুরের মল্লিক বাড়ির পুজো


পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : রাজবাড়ির নামেই এলাকার নাম মল্লিকচক। রাজবাড়ির বাইরে আজও আছে প্রাচীন রাসমঞ্চ, সারি সারি শিব মন্দির। তবে দুর্গা দুলান বাড়ির অন্দরেই। এখানেই হয় দেবী আরাধনা। মল্লিক বাড়ির সেই পুজো এবারেও নজর কাড়বে।

মেদিনীপুর মানে রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিপ্লব, ইতিহাস আর প্রাচীন পুজো। এমনই পুজো মেদিনীপুর শহরের মল্লিক বাড়ির দুর্গা পুজো। কথিত আছে, এই পুজো সাড়ে তিনশো বছরেরও বেশি প্রাচীন। বর্গী ও ব্রিটিশদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতেই না কি প্রচলন হয়েছিল দেবী আরাধনার।

মল্লিক বাড়িতে পুজো শুরু হয় মহালয়া থেকেই। অথচ তখনও প্রতিমা থাকে অসম্পূর্ণ। ধীরে ধীরে তৈরি হয় দেবী প্রতিমা। প্রাচীন রীতি মেনে এভাবেই হয় আরাধনা। বাড়িতে পুজো হয় গোস্বামী মতে।তাঁদের মল্লিক পদবীটিও ছিল আসলে উপাধি। শোনা যায়, বর্গী এবং ব্রিটিশহানায় মল্লিক বাড়ির পূর্ব পুরুষরা বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেছিলেন।

কবে প্রচলন হয়েছিল এই পুজোর, তা নিয়ে না না মত প্রচলিত পরিবারেই। সঠিক ইতিহাস জানা নেই কারওরই। তবে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বর্গী হানা এবং ব্রিটিশদের আক্রমণ থেকে বাঁচতেই দেবী আরাধনা শুরু হয়েছিল।

অবিভক্ত মেদিনীপুরে বাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করেছিলেন জন্মেঞ্জয় মল্লিক। সেই থেকেই মেদিনীপুরে তাঁদের বাড়ি। আগে কামান দেগে শুরু হত সন্ধিপুজোর সময় দেবী আরাধনা। এই কামান দাগার শব্দ শুনেই না কি মেদিনীপুরের অন্যান্য মণ্ডপে শুরু হত সন্ধিপুজো। এখানে দেবী একচালার। ডাকের সাজের প্রতিমা। মহিষাসুর নিধনের পর দেবীর ‘শান্তিরূপ’- এর এখানে আরাধনা হয়। পুজো করেন ৯ জন পুরোহিত।

বেনারস থেকে পুরোহিত এনে প্রথম দেবী আরাধনা করা হয়েছিল। প্রতিদিনের নৈবেদ্যে থাকে ২০ মণ চাল সহ ফল, সবজি ও মিষ্টি। কুমারী পুজো, চণ্ডীপাঠ, কীর্তন, কৃষ্ণযাত্রার আসরে সব মিলিয়ে জমজমাট থাকে মল্লিক বাড়ি। তবে কমেছে জৌলুস।দশমীর পরে হয় কুলদেবতা কৃষ্ণের আরাধনা। তারপরেই রীতি কনকাঞ্জলির। প্রতিমা নিরঞ্জনে যান বেহারাদের কাঁধে। আগে বিসর্জন যাত্রায় ছিল, হাতি-ঘোড়া-পালকি, ৪০ বেহারা, সন্ধিপুজোর সময় ওড়ানো হতো নীলকন্ঠ পাখি। তবে সেসব আর নেই কিছুই। তবে আজও হয় কবি গানের লড়াই।

হিন্দুস্থান সমাচার/ অশোক


 rajesh pande