উত্তরপূর্ব তথা ভারতের উন্নয়নে অবদান রাখতে মূল স্রোতে ফিরে আসতে উগ্রপন্থীদের প্রতি আহ্বান অমিত শাহের
২০২৫ সালের মধ্যে উত্তরপূর্বীয় রাজ্যগুলির সমস্ত রাজধানী সড়ক, রেল ও আকাশপথে সংযুক্ত হবে, মিজোরামে বলে
Peace_established_Mizoram_unprecedented example of the victory of India-s democracy - Amit Shah


২০২৫ সালের মধ্যে উত্তরপূর্বীয় রাজ্যগুলির সমস্ত রাজধানী সড়ক, রেল ও আকাশপথে সংযুক্ত হবে, মিজোরামে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আইজল, ১ এপ্রিল (হি.স.) : উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা ভারতের উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রাখতে মূল স্রোতে ফিরে আসতে সমস্ত উগ্রপন্থীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একদিনের সফরে আজ শনিবার মিজোরামের রাজধানী আইজলে এসে ভার্চুয়ালি ২,৪১৫ কোটি টাকার বিভিন্ন প্ৰকল্পের শিলান্যাস এবং আসাম রাইফেলস ব্যাটালিয়ন কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করে আয়োজিত সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আসাম রাইফেলস ময়দানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ বলেন, মিজোরামের ৩৬-তম স্থাপনা বর্ষ চলছে। ছোট্ট এই রাজ্যের উন্নয়ন অত্যন্ত দ্রতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এজন্য তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মিজোরামে আজ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা ভারতের শক্তিশালী গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব উদাহরণ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এক সময় সহিংসতার আধিপত্য ছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে গত নয় বছরে মোদীজির প্রচেষ্টায় গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সংযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের অন্যান্য অংশের সমস্তরে উন্নয়ন হয়েছে, বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত নয় বছরে বিভিন্ন উগ্রপন্থী সংগঠনের ৮,০০০ হাজারের বেশি সক্রিয় ক্যাডার আত্মসমৰ্পণ করেছেন। ২০১৪ সালের তুলনায় এই অঞ্চলে হিংসাত্মক ঘটনা কমেছে ৬৭ শতাংশ, নিরাপত্তাকৰ্মীর মৃত্যু কমেছে ৬০ শতাংশ এবং সন্ত্ৰাসজনিত সহিংসতায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু ৮৩ শতাংশ কমেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির ফলে অঞ্চলের অধিকাংশ অঞ্চলে শান্তি ফিরে এসেছে। ফলস্বরূপ সশস্ত্ৰ বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) আইনের অধীনে ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে চিহ্নিত এলাকার সংখ্যা কমেছে প্ৰায় ৭০ শতাংশ।

এছাড়া অমিত শাহ বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে উত্তরপূর্বীয় আট রাজ্যের সমস্ত রাজধানী সড়ক, রেল ও আকাশপথে সংযুক্ত হয়ে যাবে। এর জন্য ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। তিনি আরও বলেন, আজ ১,২০০ কোটি টাকার চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলির কাজ শেষ হওয়ার পর রাজ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি হবে।

অশান্তকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত মিজোরামের যাত্রা সম্পর্কে বলতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যে রূপান্তরের ঘটনা বলিষ্ঠ গণতন্ত্রের প্রমাণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি দ্রুত উন্নয়নের পথে, বিশেষ করে সংযোগ এবং পরিকাঠামোগত দিকে, বলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী পু জোরামথাঙ্গার নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের কাজকর্মের প্রশংসা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত পাঁচ বছরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খতিয়ান তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ ছয়টির মধ্যে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটির শিলান্যাস করেছেন। এর মধ্যে উদ্বোধন করেছেন আইজল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পূর্বে জোখাওসাঙে আসাম রাইফেলস সদর দফতর কমপ্লেক্সের। আসাম রাইফেলস-এর কমপ্লেক্সটি মায়ানমারের সাথে মিজোরামের ৫১০ কিলোমিটার সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত। আইজলে দুটি ঘাঁটি যথাক্রমে জোদিন এবং খাটলায় আসাম রাইফেলসের ঘাঁটি রয়েছে। জোডিনের ব্যাটালিয়ন সদর দফতর জোখাওসাঙে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

এছাড়া, প্ৰায় ৭৮১.৮৫ কোটি টাকার জোরিনপুই-লংমাসু ৫০২এ জাতীয় সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, আইজল বাইপাস নির্মাণ (প্যাকেজ ১), ৩২৯.৭০ কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, ৭২০.৭২ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে আইজল বাইপাস (প্যাকেজ ৩) এবং এবং ১৯৩ লক্ষ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে লালডেঙ্গা কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পশ্চিম ফাইলেং থেকে মারপাড়া পর্যন্ত ৭১ কোটি টাকা মূল্যের রাস্তার আপগ্রেডেশন ও উন্নতি এবং ২.৭০ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে আইজলে গুদাম/বাণিজ্যিক কেন্দ্রের আজ শিলান্যাস করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

আজকের গোটা অনুষ্ঠানে অন্য বহু সাধারণ এ বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে ভাষণ দিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী পু জোরামথাঙ্গা। ছিলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী টাউনলুইয়া, অন্য মন্ত্রি ও বিধায়কগণ।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ / অরবিন্দ




 

 rajesh pande