প্ৰধানমন্ত্ৰী মোদীর বদৌলতে অসমে এসেছে শান্তি ও উন্নয়নের জোয়ার : নাড্ডা
কোকরাঝাড় / দুধনৈ (অসম), ১৮ এপ্রিল (হি.স.) : প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্র মোদীর বদৌলতে অসমে এসেছে স্থায়
JP Nadda in Assam


JP Nadda in Assam


কোকরাঝাড় / দুধনৈ (অসম), ১৮ এপ্রিল (হি.স.) : প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্র মোদীর বদৌলতে অসমে এসেছে স্থায়ী শান্তি ও উন্নয়নের জোয়ার। আজ কোকরাঝাড় এবং ওদালগুড়ি-দরঙের নির্বাচনী সমাবেশে বলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা।

অসমের কোকরাঝাড়, ওদালগুড়ি এবং দুধনৈয়ে অনুষ্ঠিত বিশাল বিশাল সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদীর নেতৃত্বে অসম সহ গোটা ভারতের অভূতপূৰ্ব উন্নয়ন হচ্ছে। ইন্ডি জোটকে দুৰ্নীতিগ্রস্তের জোট আখ্যা দিয়ে তিনি এই জোটের শরিক সব দলকে পরিবারবাদী বলে তীব্ৰ আক্ৰমণ করেন।

নাড্ডা বলেন, জনতার উৎসাহ ও উদ্যম দেখে আমি নিশ্চিত, আসন্ন নিৰ্বাচনে নরেন্দ্ৰ মোদীকে তৃতীয়বারের মতো প্ৰধানমন্ত্ৰীর আসনে বসাতে অসমের জনগণ ভারতীয় জনতা পাৰ্টি ও মিত্রজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নরেন্দ্ৰ মোদীজি দেশের রাজনীতির চরিত্ৰ ও সংজ্ঞা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আগে অসমে উন্নয়ন স্থবির ছিল। কিছুদিন আগ-পর্যন্ত কোকরাঝাড় সাম্প্ৰদায়িক সংঘৰ্ষ, আন্দোলন ও বোমার জন্য পরিচিত ছিল। কংগ্ৰেস সরকার মূক দৰ্শক হিসেবে সব কিছু দেখছিল। ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের ঝগড়া-বিবাদ-মারপিট সংঘটিত হতো। কিন্তু প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদীর সবল নেতৃত্বে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী অমিত শাহের নিৰ্দেশনায় ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি বড়ো শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এই চুক্তির পর এক দশক জুড়ে আন্দোলনের অবসান ঘটে। ১,৬১৫ জন উগ্রপন্থী আত্মসমৰ্পণ করেছেন।

বিটিআর-প্রধান প্ৰমোদ বড়ো ওই আন্দোলনে সক্ৰিয় ভূমিকা গ্ৰহণ করেছিলেন। অবশেষে তিনিই কোকরাঝাড়ে শান্তি প্ৰতিষ্ঠা করতে গুরুত্বপূৰ্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আজ সমগ্ৰ অসমে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সুশাসন এসেছে। জনসাধারণকে সবল করে তোলা হয়েছে। মোদী সরকার মানে সক্ৰিয়, সক্ষম এবং দায়বদ্ধ সরকার।

বিজেপির জাতীয় সভাপতি নাড্ডা বলেন, প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্ৰীয় সরকার বড়োল্যান্ডের উন্নয়নের জন্য ১,৫০০ কোটি টাকা আবণ্টন করেছে। ভারতীয় জনতা পাৰ্টি নেতৃত্বাধীন সরকার বড়োল্যান্ডকে সন্তোষ এবং ডুরান্ড ট্ৰফি দেওয়া কাজ করেছে।

তিনি বলেন, আজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭০ শতাংশ এলাকা সশস্ত্ৰ বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) আইন (আফসপা)-এর আওতা থেকে মুক্ত হয়েছে। কংগ্ৰেসকে লক্ষ্য করে জেপি নাড্ডা বলেন, কংগ্ৰেস উত্তর-পূর্বাঞ্চলতে সবসময় অবহেলা করেছে। কংগ্ৰেসের শাসনকালে উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির উন্নয়ন সর্বক্ষেত্রে বাধাগ্ৰস্ত ছিল। প্ৰধানমন্ত্ৰী মোদী প্ৰায় ৭০ বার উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি সফর করে এই অঞ্চলকে মূলস্রোতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কাজ করেছেন। এছাড়া গত দশ বছরে কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰীরা মোট ৬৮০ বার উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি সফর করেছেন।

প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষ্মী হিসেবে গণ্য করেন। যার মূল স্তম্ভ হচ্ছে শান্তি, বিদ্যুৎ, সৌর, পৰ্যটন, সংযোগ, সংস্কৃতি, ক্ৰীড়া এবং কৃষি। বিজেপি সরকারের আমলে উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে সংগঠিত হামলার সংখ্যা ৬০ শতাংশ কমে শান্তির বাতাবরণ গড়ে উঠেছে, বলেন নাড্ডা।

জগতপ্রকাশ বলেন, অরুণাচল প্ৰদেশ এবং অসমের মধ্যে বিদ্যমান সীমা বিবাদেরও সমাধান করেছে বিজেপি সরকার। এখানেই শেষ নয়, উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলের উন্নয়নে কেন্দ্ৰীয় সরকার ৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্ৰধানমন্ত্ৰীর বিশ্বাস, উত্তরপূর্বের বিকাশ ছাড়া সমগ্ৰ দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

বিজেপির সর্বভারতী সভাপতি বলেন, পূৰ্ববর্তী সরকারগুলি ভারতকে একটি দোদুল্যমান অৰ্থনীতির দেশে পরিণত করেছিল। আজ প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদীর নেতৃত্বে করোনার মতো ভয়াবহ অতিমারি এবং ইউক্ৰেইন যুদ্ধের সময়ও ভারত একটি শক্তিশালী অৰ্থনীতি দেশ হিসেবে আত্মপ্ৰকাশ করেছে। পূৰ্ববর্তী সরকারগুলির অধীনে ভারত বিশ্বের মধ্যে ১১ নম্বর বৃহত্তম অৰ্থনীতি ছিল। আজ বিজেপির আমলে ব্ৰিটেনকে পেছনে ফেলে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অৰ্থনীতির দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়ছে।

নাড্ডা বলেন, বিজেপির শাসনামলে ভারতের বৈদেশিক মুদ্ৰার ভাণ্ডার স্ফীত হয়েছে। ইলেক্ট্ৰনিক উৎপাদন তিনগুণ বেড়েছে। অটোমোবাইল খণ্ডেও জাপানকে পেছনে ফেলে ভারত আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অটোমোবাইল উদ্যোগ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। মোবাইল খণ্ডে অগ্ৰগতি লাভ করার সমান্তরালভাবে স্টিল ক্ষেত্ৰেও বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে ভারত। ভারত আজ ওষুধের ক্ষেত্ৰেও বিশ্বের স্বাস্থ্যকেন্দ্ৰ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পাৰ্টি এবং প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদীর প্ৰাধান্য গ্রাম, দুখি, বঞ্চিত, নিপীড়িত, শোষিত, কৃষক, মহিলা এবং যুবক-যুবতী। আজ প্ৰধানমন্ত্ৰী মোদীর নেতৃত্বে ৩-৫ কোটি টাকা করে একেকটি পঞ্চায়তকে দেওয়া হচ্ছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী আবস যোজনার অধীনে মোদী সরকার দেশে ৪ কোটি স্থায়ী ঘরের ব্যবস্থা করেছে। আগামী ৫ বছরে ৩ কোটি ঘর নিৰ্মাণ হবে। প্ৰধানমন্ত্ৰী কিষাণ সমন নিধি মাধ্যমে ১১ কোটি ৭৮ লক্ষের বেশি কৃষককে প্ৰতি মাসে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অসমে ১২ লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করেছেন। জল জীবন মিশনের মাদ্যমে ১১ কোটি মানুষ নলের জল পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার সুবিধাভোগী কোকরাঝাড়ের।

ওদালগুড়িতে উজ্জ্বলার মাধ্যমে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ রান্নার গ্যাস সংযোগ লাভ করেছেন। মোদী সরকার স্বচ্ছ ভারত যোজনার অধীনে শৌচাগা নিৰ্মাণ করে মহিলাদের সম্মান দেওয়ার কাজ করেছে। কোকরাঝাড়ে ৪ লক্ষ ২০ হাজার বোনকে সম্মান দিয়েছে মোদী সরকার। আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে ১১ কোটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা পৰ্যন্ত স্বাস্থ্য বিমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিজেপি সংকল্প পত্ৰে ঘোষণা করেছে, দেশের ৭০-ঊর্ধ্ব প্ৰত্যেক বৃদ্ধকে আয়ুষ্মান ভারতের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিমা প্ৰদান করা হবে। আজ ভারতীয় জনতা পাৰ্টি সরকারের অধীনে অসম দক্ষিণ এশিয়ার সৰ্ববৃহৎ ক্যানসার কেয়ার সেন্টার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে দীর্ঘ বগিবিল সেতু। অমৃত ভারত-এর অধীনে ৫০টি রেলওয়ে স্টেশনের সংস্কার করা হয়েছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী গ্ৰামীণ সড়ক যোজনার অধীনে ৭ লক্ষ ৬০ কোটি কিলোমিটার রাস্তা নিৰ্মাণ করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৭০ হাজার গ্রামকে পাকা রাস্তার সঙ্গে সংযোগ করার কাজ হয়েছে।

বলেন, প্ৰধানমন্ত্ৰী গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে ৮০ কোটি লোককে ৫ কেজি গম বা চাল এবং ১ কেজি ডাল সরবরাহ করা হচ্ছে। প্ৰধানমন্ত্ৰী মোদীর নেতৃত্বে অসমে উন্নয়নের নতুন মাত্ৰা প্ৰতিষ্ঠিত হয়েছে।

তাই এবারের নির্বাচনে ৪০০ পারের ডাক দিয়ে বিজেপি এবং শরিক দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন জগতপ্রকাশ নাড্ডা।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ / অরবিন্দ




 

 rajesh pande