শুক্রবার অসমের পাঁচ আসনে দ্বিতীয় দফার ভোট, গন্তব্যে ভোটকর্মীগণ, ময়দানে ৬১ জন প্রার্থী
গুয়াহাটি, ২৫ এপ্রিল (হি.স.) : আগামীকাল শুক্রবার ২৬ এপ্রিল অসমে পাঁচ আসনে দ্বিতীয় দফার রাজনৈতিক যুদ্ধ
Polling teams and EVMs dispatched for 2nd phase of voting


Polling teams and EVMs dispatched for 2nd phase of voting


গুয়াহাটি, ২৫ এপ্রিল (হি.স.) : আগামীকাল শুক্রবার ২৬ এপ্রিল অসমে পাঁচ আসনে দ্বিতীয় দফার রাজনৈতিক যুদ্ধ। আজ ভোট-সামগ্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন ভোটকর্মীরা। আগামীকাল ভোট হবে তফশিলি জাতি সংরক্ষিত শিলচর, করিমগঞ্জ (সাধারণ), নগাঁও (সাধারণ), তফশিলি জনজাতি সংরক্ষিত ডিফু এবং ওদালগুড়ি-দরং আসনে।

অসমে দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচনের ময়দানে বিভিন্ন দলের ৬১ জন প্রার্থী প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে শিলচরে আটজন প্রার্থী রয়েছেন ভোটযুদ্ধে। বিজেপির পরিমল শুক্লবৈদ্য, কংগ্রেসের সূর্যকান্ত সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের রাধেশ্যাম বিশ্বাসের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা শিলচর আসনে।

করিমগঞ্জ আসনে সর্বাধিক ২৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জন নিৰ্দলীয় এবং ডিফু (এসটি)-তে মাত্র পাঁচজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। করিমগঞ্জে বর্তমান বিজেপি সাংসদ কৃপানাথ মালা, কংগ্রেসের হাফিজ রশিদ চৌধুরী এবং এআইইউডিএফ-এর সাহাবুল আলম চৌধুরীর মধ্যে ত্রিকোণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ডিফু (এসটি) আসনে বিজেপির অমরসিং তিসো এবং কংগ্রেসের জয়রাম ইংলেংয়ের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

নগাঁওয়ে মোট ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে কংগ্রেসের বর্তমান সাংসদ প্রদ্যুৎ বরদলৈ, বিজেপির সুরেশ বরা এবং এআইইউডিএফ-এর আমিনুল ইসলামের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। লড়াই হবে ত্রিকোণ।

দরং-ওদালগুড়িতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১১ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে বিজেপির বর্তমান সাংসদ দিলীপ শইকিয়া এবং কংগ্রেস প্রার্থী মাধব রাজবংশীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, করিমগঞ্জ এবং নগাঁওয়ের মতো নির্বাচনী এলাকায় ধর্মীয় জনসংখ্যার প্রভাব অতীতের নির্বাচনের মতো ফলাফল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাঁদের মতে, বাঙালি অধ্যুষিত করিমগঞ্জে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৬৫ শতাংশ। তাই ওই আসনে এক জটিল রাজনৈতিক সমীকরণের রূপরেখা তৈরি হয়েছে। করিমগঞ্জ আসন এতদিন তফশিলি জাতি সংরক্ষিত ছিল। তাই ওই আসনে ১৯৯২ সাল থেকে একাধিকবার বিজেপির সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। গতবার ২০১৯-এর নির্বাচনে হিন্দু এবং অন্যান্য ভোটারদের সমর্থনে বিজেপি প্ৰাৰ্থী কৃপানাথ মালা জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

কিন্তু এবার করিমগঞ্জ আসন সাধারণ ক্যাটাগরিতে এসে যাওয়ায় কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে বিজেপি প্রার্থীকে।

শিলচর বাঙালি ভোটারদের ঘাঁটি। বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের সাক্ষী শিলচর আসন৷ ঐতিহ্যগতভাবে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হলেও বিজেপির ক্রমবর্ধমান প্রভাব এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ওই কেন্দ্ৰে বার-কয়েক বিজেপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। শিলচর আসন এবার তফশিলি জাতি সংরক্ষিত করা হয়েছে।

আরেকটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা নগাঁও। রাজ্যের বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যার প্রতিফলন নগাঁও নিৰ্বাচনী ক্ষেত্ৰে। অসমিয়াভাষী অধ্যুষিত নগাঁওয়ে মুসলিম জনসংখ্যা কম নয়। তাই এবার মুসলিমদের সমর্থন একত্রিত করতে বিজেপির প্রচেষ্টা তীব্রতর হয়েছে। এবার কংগ্রেসের বর্তমান সাংসদ প্রদ্যুৎ বরদলৈ, বিজেপির সুরেশ বরা রয়েছেন ভোটের ময়দানে। কিন্তু এবার এআইইউডিএফ-এর আমিনুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চল আসায় লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

ডিফু আসন তফশিলি জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত একটি নির্বাচনী এলাকা। উপজাতি সম্প্রদায় অধ্যুষিত ওই কেন্দ্রে বিজেপি, কংগ্রেস এবং এএসডিসির আধিপত্য রয়েছে।

দরং-ওদালগুড়ি আসন বড়ো, কোচ-রাজবংশী, বাঙালি (হিন্দু ও মুসলমান) জনগোষ্ঠীর সংমিশ্রণে সমৃদ্ধ। ওই আসনে শরিক ইউপিপিএলকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস এবং বিপিএফ-এর মধ্যে বহুমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। প্রতিটি দলই তাদের জয়ের সম্ভাবনাকে মজবুত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ




 

 rajesh pande