মোদী সম্পর্কে রাহুলের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বাংলার বিদ্বজনেরা
অশোক সেনগুপ্ত কলকাতা, ৪ মে (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী
মোদী সম্পর্কে রাহুলের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বাংলার বিদ্বজনেরা


অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ৪ মে (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অবমাননাকর মন্তব্যে আহত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত বিদ্বজনদের একাংশ। তাঁরা প্রকাশ্যেই তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘'নরেন্দ্র মোদী কখনও পাকিস্তানের কথা বলবেন, কখনও আবার সমুদ্রের নীচে গিয়ে নাটক করবেন। সমুদ্রের নীচে গিয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ভাবছিলেন, এখানে কিছু যেন না হয়ে যায়। রাজনীতিকে রসিকতায় পরিণত করেছেন।’'

রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র সুদীপ্ত গুহ এ প্রসঙ্গে এই প্রতিবেদককে বলেন, “নরেন্দ্র মোদী গত ১০ বছরে ভারতকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, তাতে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যেমন কোনও তুলনা চলেনা, তেমনই ভারতের রাজনীতিতে কোনও তুলনা চলেনা নরেন্দ্র মোদী ও রাহুলের। ভারত পাকিস্তানকে এবং মোদীজি রাহুলকে গুরুত্বও দেননা। যদিও ওঁরা যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেন সঙ্গত কারণেই।

নেহরু এবং গান্ধী প্রথম থেকেই হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। স্বাধীনতার পর সোমনাথ মন্দির পুনর্গঠনের প্রস্তাবে সায় ছিল না নেহরুর। ইন্দিরা গান্ধীকে পুরীর মন্দিরে পুরোহিতরা ঢুকতে দেননি। শাহবানু মামলা এবং রামমন্দিরের ব্যাপারে রাজীব গান্ধীর ভূমিকার কথা সবাই জানেন। তারই ধারাবাহিকতায় রাহুলের এই মন্তব্য ওঁদের একটা হতাশার বহিপ্রকাশমাত্র।”

রাজ্য বিজেপি-র অপর মুখপাত্র তথা একটি সুপরিচিত কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ পঙ্কজ রায় রাহুলের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই প্রতিবেদককে বলেন, “শ্রীকৃষ্ণের রাজধানী ছিল দ্বারকা। সে কারণে তিনি দ্বারকাশীষ বা দ্বারকেশ্বর নামেও পরিচিত। ভাগবৎ পুরাণে প্রাচীন রাজ্য হিসাবে দ্বারকার উল্লেখ আছে। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ বছরের এই জনপদ গজনীর সুলতান মামুদ ১৪৭৩-এ ধ্বংশ করে দেন। এর আগে অষ্টাদশ শতকে আদি শঙ্করাচার্য সনাতন ধর্মের বন্ধনের জন্য যে চার ধামের কথা বলেছিলেন, তার অন্যতম ছিল দ্বারকা। সেই দ্বারকায় প্রধানমন্ত্রী পুজো দিতে গিয়েছেন, এটা তো ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের বিষয় হতে পারে না! এই মনোভাব একদিকে সংবিধান-বিরোধী, অন্যদিকে কোনও শিক্ষিত পরিমণ্ডলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। প্রধানমন্ত্রীর কি ধর্মাচারণের অধিকার নেই?”

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সুপরিচিত অধ্যাপক অসীম ঘোষ এই প্রতিবেদককে বলেন, “ইতিহাসের অনেক চরিত্রের সত্যতা নিয়েই মানুষের সন্দেহ আছে। কিন্তু মানুষের বিশ্বাসকে অবজ্ঞা করবেন কীভাবে? প্রভু যীশুর ‘রেজারেকশন’ বা হজরত মহম্মদের বাণীকেও কি আমরা

উপেক্ষা করতে পারি? আক্রমণের সহজ লক্ষ্য কি কেবলই রাম, কৃষ্ণ, দ্বারকা? মানুষের বিশ্বাসকে এভাবে আঘাত দেওয়ার অধিকার রাহুল গান্ধী কেন, কারোরই নেই!”

প্রসঙ্গত, দ্বারকায় শ্রীকৃষ্ণের রাজধানী যেখানে ছিল বলে বিশ্বাস হিন্দুদের, কিছুদিন আগে সেখানে সমুদ্রের নীচে পুজো দিতে যান মোদী। সেই পুজো নিয়ে এর আগেও কটাক্ষ করেছেন রাহুল। এবার মহারাষ্ট্রের পুণেতে এক জনসভায় ফের এই পুজো নিয়ে মোদীকে ব্যঙ্গ করলেন রাহুল। তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ গেরুয়া শিবির। রাহুলের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ উঠেছে।

গত ১৯ এপ্রিল নরেন্দ্র মোদী নিজে এ ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “প্রত্নতাত্ত্বিকরা সমুদ্রে দ্বারকা খুঁজে পেয়েছেন। আমি জলের নিচে গিয়ে দ্বারকায় পুজো করেছি। কিন্তু কংগ্রেসের ‘শাহজাদা’ বলছেন সমুদ্রে প্রার্থনা করার মতো কিছু নেই। এই লোকেরা আমাদের সংস্কৃতি, হাজার বছরের পুরনো আমাদের বিশ্বাসকে শুধুমাত্র তাদের ভোট ব্যাঙ্কের জন্য উড়িয়ে দিয়েছে”।

হিন্দুস্থান সমাচার/ অশোক




 

 rajesh pande