কাঁকসা, গোপালপুরে গৃহস্থের হেঁসেলে মিলছে নলবাহিত রান্নার গ্যাস, মুখ্যমন্ত্রী জানেনই না! কটাক্ষ বিজেপির
দুর্গাপুর, ৪ এপ্রিল (হি. স.) : পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা, গোপালপুরে গৃহস্থের হেঁসেলে মিলছে নলবাহিত রা
কাঁকসা, গোপালপুরে গৃহস্থের হেঁসেলে মিলছে নলবাহিত রান্নার গ্যাস, মুখ্যমন্ত্রী জানেনই না! কটাক্ষ বিজেপির


দুর্গাপুর, ৪ এপ্রিল (হি. স.) : পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা, গোপালপুরে গৃহস্থের হেঁসেলে মিলছে নলবাহিত রান্নার গ্যাস। অথচ খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই জানেন না! মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়েছে শিল্পাঞ্চলজুড়ে। কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে ফারাক্কার জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীর গ্যারেন্টিকে কটাক্ষ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, বাড়ি বাড়ি নলবাহিত গ্যাস পৌঁছে যাচ্ছে। রাজ্যের কাজ হলে আমি জানতাম না! আমরা দেখতেই পারলাম না! কতবড় মিথ্যা বলছে মোদী। তাঁর বক্তব্যে রীতিমতো জল্পনা ছড়িয়েছে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর, কাঁকসা, পানাগড়ে। উল্লেখ্য, প্রধান মন্ত্রী উর্জা গঙ্গা প্রকল্পের গৃহস্তের বাড়ী বাড়ী জ্বালানি গ্যাস পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়। এরাজ্যের বিভিন্ন গার্হস্থ্য ও শিল্প উদ্যোগে পরিবেশ-বান্ধব প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের অভিপ্রায়ে, গেইল ইন্ডিয়া বিহারের ডোবি থেকে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের সঙ্গে সংযোগকারী ৩৪৮ কিলোমিটার পাইপলাইনের কাজ সম্পূর্ণ করেছে। যার মোট ব্যয় ২,৪৩৩ কোটি টাকা। রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান জেলার

কাঁকসা ব্লকে তৃণমূল পরিচালিত তিনটি পঞ্চায়েত গোপালপুর ,কাঁকসা ও ত্রিলোকচন্দ্রপুর ,এলাকায় বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জ্বালানি গ্যাস ব্যাবহার শুরু হয়ে গেছে। দুর্গাপুর শিল্পশহর লাগোয়া কাঁকসার গোপালপুর গ্রাম। গ্রামের পাশেই দেদার কলকারখানা। বছর দুয়েক আগে কাঁকসা শিল্পাঞ্চলের গোপালপুর গ্রামকে পরিবেশবান্ধব মডেল গ্রাম তৈরী উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারজন্য গ্রামে বাড়ী বাড়ী গ্যাস পাইপলাইনের কাজ জোরকদমের শুরু করে আইওজিল। এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েতের গোপালপুর, বাঁদরা, বামুনাড়া, উত্তরপাড়া সহ ৭ টি মৌজার প্রায় ৭৫ শতাংশ বাড়ীতে পাইপ লাইন পাতার কাজ শেষ হয়েছে। জানা গেছে, গ্রামেই গ্যাস সংস্থার অফিস করা হয়েছে। বাড়ির দাগ নং সহ জমির বৈধ কাগজের নথী সহ আবেদন করতে হবে। নুন্যতম সংযোগ রাশি জমা দিতে হবে। সেই মতো বাড়িতে মিটার যুক্ত গ্যাস সংযোগ করা হবে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। যদিও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় প্রথম গ্রাম পরীক্ষামূলক বাড়ি বাড়ি গ্যাস সংযোগ কাজ শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রায় ১৫০ পরিবার নলবাহিত জ্বালানি গ্যাস ব্যাবহার করছে। গোপালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুনিতা চট্টরাজও নিয়েছেন নলবাহিত গ্যাস সংযোগ। তিনি জানান, প্রায় ৮ মাস ধরে নলবাহিত গ্যাসে রান্না করছি। বুকিংয়ের ঝামেলা নেই। সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়া আসার ঝামেলা নেই। নলবাহিত গ্যাস ব্যাবহারে অনেক সাশ্রয় হচ্ছে এখন।

গোপালপুর পঞ্চাায়েত প্রাক্তন প্রধান তথা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি জয়জিৎ মন্ডল জানান, পরিবেশবান্ধব মডেল গ্রাম তৈরী করার জন্য ওই সময় একগুচ্ছ প্রকল্প করা হয়। বাড়ি বাড়ি গ্যাস সংযোগের পাইপ পাতার কাজ প্রায় ৭৫ শতাংশ শেষ। অনেকে নলবাহিত গ্যাস ব্যাবহার করছে। পাইপ মাধ্যমে জ্বালানি গ্যাসে সিলিন্ডারের তুলনায় অনেকটাই গ্যাসের খরচে সাশ্রয় হবে। গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের প্রাক্তন (বন ও ভুমি) কর্মাধ্যক্ষ কাঞ্চন লায়েক জানান, আমাদের বাড়িতে প্রায় ৯' মাস ধরে নলবাহিত গ্যাস ব্যাবহার হচ্ছে। ২৫ শতাংশ খরচ সাশ্রয় হচ্ছে। বুকিং করা, সিলিন্ডার পাওয়া, বাড়িতে পৌঁছানোর দুঃশ্চিন্তা এখন আর নেই। কাঁকসা ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেঞ্জিত ঘোষ জানান, আমাদের পঞ্চায়েতের ইজ্জতগঞ্জ মৌজায় ২০০ পরিবারে নলবাহিত গ্যাস পৌঁছে গেছে। প্রয়াগপুর মৌজায় প্রায় ২৫০ পরিবারে পাইপলাইন পাতার কাজ হয়ে গেছে। গ্রাম পানাগড়ে জমি জটিলতায় পাইপলাইনের কাজে কিছু সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও কাঁকসা পঞ্চায়েত এলাকায় নলবাহিত গ্যাস দেওয়া বেশ কিছু পাড়ায় শুরু হয়েছে। এমনকি শিল্পশহর দুর্গাপুর বিধাননগর ও সেইল কো-অপারেটিভ এলাকায় গ্যাস পাইপলাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছে।

আর প্রাশ্ন এখানে রাজ্যে একটা জেলার একটা ব্লকে প্রায় দুহাজার পরিবারে নলবাহিত গ্যাস পৌঁছে গেছে। অথচ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই জানেন না। বিজেপি বিধায়ক লক্ষন ঘড়ুই কটাক্ষ করে বলেন, এত বড় প্রকল্পের কাজ উনি যদি না জানেন, তাহলে দুর্ভাগ্য পশ্চিমবঙ্গবাসীর। আর যদি জনমুখী এই উন্নয়ন কেন্দ্র সরকারের সুনাম হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করছেন না। তাহলে রাজ্যবাসী এবার লোকসভা ভোটে জবাব দিয়ে দেবে।

হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব




 

 rajesh pande