বিহারে এনডিএ বিপুল জনসমর্থন পাওয়ায় ইন্ডি জোটের লোকেরা অস্থির হয়ে পড়েছে, দারভাঙ্গার জনসভা থেকে মোদী
পাটনা, ৪ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার বিহারের দারভাঙ্গায় আয়োজিত এক
বিহারে এনডিএ বিপুল জনসমর্থন পাওয়ায় ইন্ডি জোটের লোকেরা অস্থির হয়ে পড়েছে, দারভাঙ্গার জনসভা থেকে মোদী


পাটনা, ৪ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার বিহারের দারভাঙ্গায় আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, আরজেডি-র সনাতন বিরোধী চরিত্র এবং পরিবারতান্ত্রীক রাজনীতিকে তীব্রভাবে নিশানা করেন এবং বিজেপির আমলে করা অভূতপূর্ব উন্নয়নমূলক কাজের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী চৌবে, জানজারপুর লোকসভার প্রার্থী শ্রী রামপ্রীত মন্ডল, দরভাঙ্গার প্রার্থী শ্রী গোপাল ঠাকুর, সমস্তিপুরের প্রার্থী শ্রীমতি শাম্ভবী চৌধুরী এবং মধুবনীর প্রার্থী শ্রী অশোক কুমার যাদব এবং অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীজি বলেন যে ৫০০ বছর পর দেশবাসীর অপেক্ষার অবসান হয়েছে, ভগবান শ্রী রামের বিশাল মন্দির তৈরি হয়েছে। ৫০০ বছর ধরে আমাদের পূর্বপুরুষরা হাল ছেড়ে না দিয়ে সংগ্রাম করেছেন, আত্মত্যাগ করেছেন এবং লড়াই চালিয়ে গেছেন। আমাদের পূর্বপুরুষরা জানতেন যে একদিন দেশের কোনো না কোনো সন্তান ৫০০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটাবে এবং একটি বিশাল শ্রী রাম মন্দির তৈরি করবে। অযোধ্যায় রাম লালার প্রাণ-প্রতিষ্ঠার সময় মোদী বলেছিলেন যে ভারত আগামী ১০০০ বছরের ভবিষ্যত লিখবে। ১০০০ বছর আগে, যখন ভারতে পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করা শুরু হয়েছিল, তখন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে ভারত হাজার বছর ধরে দাসত্বে আটকে থাকবে। বিশ্বকে দিশা দেখানো বিহারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যাতে সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু ভারতের ভাগ্য আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই সময়টি একবিংশ শতকে এসেছে যখন ভারত আবার তার সমস্ত শিকল ভেঙে উঠে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ্বে ভারতের প্রভাব একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আজ চাঁদে পৌঁছেছে ভারত।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীজি বলেছেন যে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে, ভারত বিশ্বের ১১ তম র্যা ঙ্কের অর্থনীতি ছিল কিন্তু মাত্র ১০ বছরে, ভারত বিশ্বের তৃতীয় র্যা ঙ্কের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। করোনা মহামারীর সময় ভারত দেখিয়েছে ভারতের সম্ভাবনা কতটুকু। ভারত সংকট থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বকে পথও দেখিয়েছে। সেই সংকটের সময়ে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের ইন্ডি জোট সরকার ষড়যন্ত্র করে বিহারের জনগণকে তাদের রাজ্য থেকে বের করে দিয়েছিল। বিহারের যুবক ও কন্যারা মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে কখনই ক্ষমা করবে না এবং এই নির্বাচনে এর মূল্য দিতে হবে। এই নির্বাচনে, মোদী আগামী ৫ বছরের উন্নয়নের একটি রোড ম্যাপ দিয়েছেন এবং ২৫ বছরের একটি লক্ষ্য দেশের সামনে রেখেছেন। দিল্লিতে যেমন যুবরাজ আছে, তেমনি পাটনায়ও যুবরাজ আছে। একজন যুবরাজ শৈশব থেকেই সমগ্র দেশকে নিজের সম্পত্তি এবং অন্য যুবরাজ সমগ্র বিহারকে নিজের সম্পত্তি বলে মনে করেছেন। এই দুই যুবরাজের রিপোর্ট কার্ড একই রকম। তাদের রিপোর্ট কার্ডে কেলেঙ্কারি আর অনিয়ন্ত্রিত আইনশৃঙ্খলা ছাড়া কিছুই নেই। আগে বিহারে অপহরণের শিল্প চলত, বড় বড় কেলেঙ্কারির মাধ্যমে বিহারের রাজকোষ লুট হতো। মেয়েরা সন্ধ্যেবেলা বাড়ি থেকে বেড়োতে ভয় পেত, চাকরি দেওয়ার আগে জমি রেজিস্ট্রি করতে হতো। আজ শ্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ সরকার বিহারের উন্নয়নের জন্য দিনরাত কাজ করছে। এনডিএ সরকারের অনুপ্রেরণা হলেন কর্পুরী ঠাকুরজি, যাঁকে সরকার সম্প্রতি ভারতরত্ন দেওয়ার সৌভাগ্য পেয়েছিল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীজি বলেছেন, গত ১০ বছরে, বিজেপি বিহারে ৪০ লক্ষ দরিদ্রকে স্থায়ী বাড়ি দিয়েছে, প্রায় ১.২৫ কোটি গ্যাস কানেকশন দিয়েছে এবং বিনামূল্যে রেশন ও চিকিৎসা দিয়েছে। এছাড়াও বিজেপি ৭০ বছরের বেশি বয়সী প্রতিটি শ্রেণীর বয়স্কদের প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান যোজনার আওতায় আনার সংকল্প করেছে। যারা বিজেপির প্রকল্পের সুবিধা পাননি তারা মোদীর তৃতীয় মেয়াদে এই সমস্ত সুবিধা পাবেন এবং এটিই মোদীর গ্যারান্টি। আগামী পাঁচ বছরে ৩ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করতে চলেছে বিজেপি। দারভাঙ্গা বিমানবন্দর, রেলস্টেশন এবং আধুনিক রাস্তা সহ প্রতিটি বিভাগে কাজ করা হচ্ছে এবং দারভাঙ্গা এইমস-এর প্রতিবন্ধকতাগুলিও সরানো হচ্ছে। শিল্প তখনই বিনিয়োগ করে যখন উন্নয়নের ভীত মজবুত হয়। দারভাঙ্গায় আইটি পার্ক তৈরি করা হয়েছিল যা কর্মসংস্থান তৈরি করেছিল। রাস্তা ভালো হওয়ায় মিথিলা থেকে আম, লিচুর রপ্তানি দ্রুত বাড়বে। বিজেপি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বিহারের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ৪২ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে এবং ফলস্বরূপ দারভাঙ্গা এবং মধুবনীর ১১ লক্ষ মহিলা এতে উপকৃত হয়েছেন। মহিলাদের এই সুখই মোদীকে কঠোর পরিশ্রম করার সাহস জোগায়।

শ্রী মোদী বলছেন, বাবা সাহেব ধর্ম ভিত্তিক সংরক্ষণের বিরোধী ছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুরও একই ধারণা ছিল, কিন্তু এখন যখন তফসিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীগুলি কংগ্রেসের প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে, তখন কংগ্রেস পন্ডিত নেহেরুর ভাবাবেগকে উপেক্ষা করে সংবিধানকে ভেঙে দিয়ে তাদের রিজার্ভেশন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং ধর্মের ভিত্তিতে একটি বিশেষ শ্রেণীকে রিজার্ভেশন দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কংগ্রেসের এই ষড়যন্ত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটছে আরজেডিও। ২০০৭ সালে, লালু প্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এসসি, এসটি এবং ওবিসি থেকে সংরক্ষণ কেড়ে নেওয়া এবং নির্দিষ্ট শ্রেণিতে কোটা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। ধর্মের ভিত্তিতে রিজার্ভেশন দিলে যাদব, কুর্মি, পাসওয়ান ও মুসাহার সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। সংরক্ষণ ইস্যুতে দেওয়া চ্যালেঞ্জে কংগ্রেস এখনও সাড়া দেয়নি। কংগ্রেস কি লিখিতভাবে দিতে পারবে যে ইন্ডি জোট এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের সংরক্ষণ কেড়ে নেবে না এবং ধর্মের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীকে দেবে না, ধর্মের ভিত্তিতে সংবিধানের সাথে খেলবে না? ১২ দিন ধরে এই চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে পারেনি কংগ্রেস। যতদিন মোদী থাকবেন, ততদিন দলিত ও অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ নিয়ে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কংগ্রেস এবং আরজেডি তাদের উদ্দেশ্য উন্মোচিত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন আরজেডি গণনা শুরু করেছে সেনাবাহিনীতে কে হিন্দু আর কে মুসলিম। ইন্ডি জোট সমাজকে বিভক্ত করতে এবং দেশের ঐক্য ভাঙার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারে। ভারত মাতাকে রক্ষা করার জন্য বুকে গুলি নেওয়া একজন ভারতীয় এবং আরজেডি নেতারা সেই বীরকে হিন্দু-মুসলমানের দৃষ্টিতে দেখে। আবদুল হামিদকে কি মনে রাখা হয়েছে কারণ তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন? এই লোকেরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং তারাই সেনাপ্রধানকে অকথ্য কথা বলে। দেশ জানে কার নির্দেশে এসব হচ্ছে এবং কাকে খুশি করার চেষ্টা চলছে। সামাজিক ন্যায়বিচারের আড়ালে আরজেডির নিছক তোষণের ইতিহাস রয়েছে। গোধরা ঘটনার তদন্তের সময়, তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব ব্যানার্জি কমিশন গঠন করেছিলেন এবং ৬০ জন কর সেবককে যারা পুড়িয়েছিল তাদের খালাস দেওয়ার সুপারিশ করে একটি রিপোর্ট পেশ করেছিলেন, কিন্তু আদালত সেই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে এবং সমস্ত দোষীদের সাজা দেয়। গোটা বিশ্ব জানত যে করসেবকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল কিন্তু তারপর একটি ভুয়ো তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে করসেবকদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জনগণ বিহারকে লন্ঠন যুগে ফিরে যেতে দেবে না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে কংগ্রেস সরকারি সম্পত্তির উপর উত্তরাধিকার কর আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই আইনের মাধ্যমে কংগ্রেস আসলে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য সারাজীবনের জন্য করা সঞ্চয়ের উপর কর আরোপ করে আপনার কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নিতে চায়। কংগ্রেস উত্তরাধিকার কর আরোপের ফতোয়া এনেছে কিন্তু দেশের মানুষ এই লুটপাট কিছুতেই মেনে নেয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্থানীয় এনডিএ প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজয়ী করে দেশে আবারও মোদী সরকার গঠনের জন্য সমাবেশে উপস্থিত জনতার কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি




 

 rajesh pande