(রাউন্ড আপ) দুর্গাপুরের জনসভায় এবং কৃষ্ণনগরে রোড শো থেকে তৃণমূলের দুর্নীতি ও তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ অমিত শাহের
দুর্গাপুর /কৃষ্ণনগর ৬ মে (হি. স.) : মাননীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী এবং ভারতীয় জনতা প
(রাউন্ড আপ) দুর্গাপুরের জনসভায় এবং কৃষ্ণনগরে রোড শো থেকে তৃণমূলের দুর্নীতি ও তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ অমিত শাহের


দুর্গাপুর /কৃষ্ণনগর ৬ মে (হি. স.) : মাননীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী এবং ভারতীয় জনতা পার্টির বরিষ্ঠ নেতা শ্রী অমিত শাহ সোমবার পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি ও তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন। এর আগে তিনি কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির রাজমাতা ও বিজেপি প্রার্থী শ্রীমতি অমৃতা রায়ের সমর্থনে সদর হাসপাতাল মোড় থেকে এভি হাইস্কুল মোড় পর্যন্ত একটি জাকজমকপূর্ণ রোড শো করেন। রোডশোতে জনসাধারণের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। দুর্গাপুরের জনসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল এবং দুর্গাপুরের প্রার্থী শ্রী দিলীপ ঘোষ এবং অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী বলেছেন, জনসাধারণ যখন শ্রী দিলীপ ঘোষের নামের পাশে পদ্ম ফুলের বোতাম টিপবেন, তখন জনগণের প্রতিটি ভোট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করতে সহায়তা করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী করার অর্থ ভারতের অর্থনীতিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করা, দেশে সন্ত্রাসবাদ ও নকশালবাদের অবসান এবং তিন কোটি মহিলা লাখপতি দিদি বানানো। যশস্বী প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি গত ১০ বছরে কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের জীবনে আলো এনেছেন। কংগ্রেস এবং টিএমসি ৭০ বছর ধরে জন্য রাম মন্দির নির্মাণ ঝুলিয়ে রেখেছিল কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি ভগবান শ্রী রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপো নিজেদের ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে ভগবান রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট ব্যাংক হল অনুপ্রবেশকারী। ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে যারা ভগবান শ্রী রামকে বয়কট করেছেন তাঁদের দুর্গাপুরবাসী ভোট দেবেন না।

শ্রী শাহ বলেছেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, কাশ্মীরের সাথে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির কোনও সম্পর্ক নেই। তবে সত্য হল দুর্গাপুর সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি সন্তান কাশ্মীরের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। কমিউনিস্ট, টিএমসি এবং কংগ্রেস একসাথে ৭০ বছর ধরে ৩৭০ ধারা বজায় রেখেছিল এবং এই কারণে কাশ্মীর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল সন্ত্রাস, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট এই ধারাটি চিরতরে বাতিল করেছিলেন। সংসদে ৩৭০ ধারা অপসারণের বিলের বিরোধিতা করতে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন ৩৭০ ধারা অপসারণের ফলে সমগ্র ভারতে রক্ত বন্যা বয়ে যাবে, কিন্তু এখন এই ধারা অপসারণের ৫ বছর পরেও উপত্যকায় একটি পাথর নিক্ষেপ করার সাহস হয়নি কারও। তিনি বলেন, ইউপিএ সরকারের আমলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সন্ত্রাসীরা প্রায়ই দিন দেশে হামলা করত এবং ভোটব্যাঙ্কের ভয়ে ইউপিএ সরকার কিছুই করতে পারেনি। কিন্তু যশস্বী প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ দিনের মধ্যে সার্জিকাল স্ট্রাইক ও বিমান হামলা চালিয়ে উরি ও পুলওয়ামাযর জবাব দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছেন, ১২ কোটি টয়লেট তৈরি করেছেন, ৪ কোটি বাড়ি তৈরি করেছেন, ১০ কোটি মানুষকে গ্যাস সিলিন্ডার এবং ১৪ কোটি মানুষের বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দিয়েছেন। বর্ধমান-দুর্গাপুর একটি শিল্পাঞ্চল ছিল, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুন্ডারা এখানকার পরিবেশ ও উন্নয়নকে ধ্বংস করে দিয়েছে, কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হলে এখানে বন্ধ থাকা শিল্পগুলি আবার চালু করবে বিজেপি। টিএমসি গুজব ছড়াচ্ছে যে বিজেপি স্টিল প্ল্যান্টের কাজ বন্ধ করবে, কিন্তু সত্য হল যে বিজেপি ইস্পাত এবং ইউরিয়া প্ল্যান্ট উভয়েই বিনিয়োগ করবে এবং সেগুলি প্রসারিত করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত এখন ইস্পাত উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছেছে। টিএমসি পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিক সংগঠনগুলি দখল করেছে এবং টিএমসি গুন্ডা দরিদ্র শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে এবং তাদের কষ্টার্জিত অর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপোকে দেয়, তবে বিজেপি সরকার এই গুন্ডাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং তাদের শাস্তি দেবে।

শ্রী শাহ বলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে হারাতে গত ১৫ দিন ধরে এখানে প্রচার চালাচ্ছেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫ দিন কেন, ৫ বছর প্রচার করেও দুর্গাপুরে জিততে পারবেন না। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর দলের সন্ত্রাসের জন্য এখানকার শিল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ইন্ডি জোটের দুর্নীতিগ্রস্ত দলগুলো একজোট হয়ে দেশে ১২ লক্ষ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে ৩৫০ কোটি টাকা এবং ৩০ কোটি টাকার নগদ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ২৩ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ২৫ পয়সা দুর্নীতিরও কোনো অভিযোগ নেই। নিজের ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে সীমান্ত অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশে মদত দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জিত হওয়া উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য সিএএ-র বিরোধিতা করছেন। কিন্তু বিজেপি প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আসা হিন্দু এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবেই। অভিষেক ব্যানার্জির গুন্ডারা পশ্চিমবঙ্গে গরু পাচার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাঁদেন। পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি ও নির্বাচনী হিংসা খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। বোমা বিস্ফোরণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটারদের ভয় দেখাতে চান. কিন্তু নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুন্ডাদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায়মন্ত্রী বলেন যে সন্দেশখালিতে টিএমসি নেতারা শত শত নারীর ওপর নির্যাতন করেছে। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি সেই অত্যাচারী শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করায় উদ্যোগী নয়। হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার সঠিকভাবে মামলার তদন্ত করছে না। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জা হওয়া উচিত যখন তার সামনেই শত শত নারীদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। বিজেপি সরকার সন্দেশখালির প্রতিটি অপরাধীকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ যখন বিজেপিকে ১৮টি আসন দিয়েছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশকে সুরক্ষিত করেছিলেন এবং সেই কারণেই বিজেপি এবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩০টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তিনি উপস্থিত জনগণ এর কাছে আবেদন জানান, বিজেপি প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এবং দেশে আবার মোদী সরকার গঠন করতে এবং ৪০০টিরও বেশি আসনে বিজেপিকে জয়ী করার।

হিন্দুস্থান সমাচার / রাকেশ / সৌম্যজিত / সোনালি




 

 rajesh pande