রাজামুন্দ্রি এবং আনাকাপল্লে আয়োজিত জনসভায় থেকে ওয়াইএসআরসিপি এবং কংগ্রেসকে তীব্র নিশানা মোদীর
অমরাবতী, ৬ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, সোমবার অন্ধ্র প্রদেশের রাজামুন্দ্
রাজামুন্দ্রি এবং আনাকাপল্লে আয়োজিত জনসভায় থেকে ওয়াইএসআরসিপি এবং কংগ্রেসের তীব্র নিশানা মোদীর


অমরাবতী, ৬ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, সোমবার অন্ধ্র প্রদেশের রাজামুন্দ্রি এবং আনাকাপল্লে আয়োজিত বিশাল জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, ওয়াইএসআরসিপি এবং কংগ্রেসের সনাতন-বিরোধী চরিত্র এবং দুর্নীতির রাজনীতিকে তীব্রভাবে নিশানা করেন। এই অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বিজেপি রাজ্য সভাপতি শ্রীমতি দগ্গুবতী পুরন্দ্রেশ্বরী, টিডিপি সভাপতি শ্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, জনসেনা পার্টির প্রধান এবং পিঠাপুরমের প্রার্থী শ্রী পবন কল্যাণ এবং অন্যান্য নেতারা।

শ্রী মোদী বলেছিলেন যে ১৩ মে, আপনি আপনার ভোট দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি নতুন অধ্যায় শুরু করবেন। লোকসভা নির্বাচনে শুধু এনডিএই সরকার গঠন করবে না, অন্ধ্র বিধানসভায়ও আগামী ৫ বছরের জন্য এনডিএ চূড়ান্ত হবে। বিকশিত অন্ধ্রপ্রদেশ বিকশতি ভারতের দিকে একটি বিশাল পদক্ষেপ হবে। বর্তমানে গোটা দেশে যে সমস্ত বিধানসভা নির্বাচন চলছে তাতে এনডিএ সরকার গঠিত হবে। এই নির্বাচনে একদিকে কংগ্রেস দল এবং অন্যদিকে ওয়াইএসআর কংগ্রেস রয়েছে, যদিওকংগ্রেস নেতারা ফলাফলের আগেই এখানে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষ ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে। ওয়াইএসআর কংগ্রেস অন্ধ্রপ্রদেশে পুরো ৫ বছর সুযোগ পেয়েছে, তারা এই ৫ বছর নষ্ট করেছে এবং পুরো অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এখানে যখন চন্দ্রবাবুর সরকার ছিল, তখন এই রাজ্য উন্নয়নের উচ্চতার শিখরে ছিল, কিন্তু ওয়াইএসআর কংগ্রেস এখানে উন্নয়নের ট্রেন লাইনচ্যুত করেছে। জনস্বার্থে কাজ না করে এই সরকার অন্ধ্রপ্রদেশকে বিপুল ঋণে ডুবিয়ে দিয়েছে। তাই দেশ হোক বা রাজ্য, এই সময়ে উন্নয়নের একটাই নিশ্চয়তা আর সেটা হল এনডিএ। এখন ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানো প্রথম দেশ হয়ে উঠেছে ভারত। আগে জনগণ নেতার কাছে হিসাব চাইত, কিন্তু মোদী হিসাব দেন এবং জনগণ তা অনুমোদন করে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অন্ধ্রপ্রদেশ যুব এবং তরুণ প্রতিভার রাজ্য। সারা বিশ্ব প্রযুক্তিতে আপনাদের দক্ষতাকে স্বীকৃতি দেয়। এখন যখন দেশ দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে, তখন অন্ধ্রের জন্যও দ্রুত অগ্রগতি হওয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এখানকার রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই আশা করা বৃথা। উন্নয়নের নামে এখানে শূন্য কাজ, শতভাগ দুর্নীতি হয়েছে। এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলিকে ব্যাহত করে জনগণের স্বার্থকে বেলাইন করা হয়েছে, তাই যখন রাজ্য এবং কেন্দ্রে এনডিএ-র ডাবল ইঞ্জিন সরকার থাকবে, তখন সমস্ত ঝুলে থাকা কাজগুলি সম্পন্ন হবে। কংগ্রেসের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। কংগ্রেস যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল, তখন দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির কারণে ভারতকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোট ক্ষুব্ধ এবং প্রতিদিন ইডি-ইডি করে চিৎকার করে চলেছে। কেন তারা এমন করছে আজকে দেশ টিভিতে উত্তর দেখছে। ঝাড়খণ্ডে, ইডি নোটের পাহাড় খুঁড়েছে। কংগ্রেসের এক মন্ত্রীর একান্ত সচিবের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে নোটের পাহাড়। কংগ্রেসের লোকজন তাদের চাকরের বাড়িকে কালো টাকার গুদামে পরিণত করেছিল এবং এটি প্রথমবার নয়, এর আগেও কংগ্রেস সাংসদের কাছে নোটের বড় পাহাড় পাওয়া গিয়েছিল।

এখন আমি দেশের সামনে আরেকটি ঘটনা বলব, কেন এমন হচ্ছে যে যাদের কাছ থেকে নোটের পাহাড় পাওয়া যাচ্ছে তারা কংগ্রেসের প্রথম পরিবারের নিকটস্থ। এটা কি সম্ভব যে বাজেয়াপ্ত করা টাকা সরবরাহের জন্য অন্য কোথাও রাখা হয়েছিল? এটা কি সম্ভব যে কংগ্রেসের প্রথম পরিবার সারা দেশে একই রকম কালো টাকার গুদাম তৈরি করেছে? দেশ অবশ্যই কংগ্রেসের শেহজাদের কাছ থেকে এটি জানতে চায়। মোদী যখন তাদের কালো টাকা ধরে, তখন এই লোকজন মোদীকে গালি দেয়, কিন্তু মোদী গালি নিয়ে নয়, গরিবদের নিয়ে চিন্তিত। বর্তমানে ইডি শুধুমাত্র ১ ২৫ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে, যখন সামগ্রিকভাবে দেখা হবে তখন কয়েক লক্ষ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ যারা লুটের শিকার তাদের টাকা কিভাবে ফেরত দেওয়া যায় সে বিষয়ে আইনি মতামত চাচ্ছি। এর আগেও, মোদী সঠিক প্রাপকদের ১৭ হাজার কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। এটাই মোদীর গ্যারান্টি যে কোনও দরিদ্রের অধিকার লঙ্ঘন হবে না।

শ্রী মোদী বলেছেন, এখন ভারত সংস্কার, সম্পাদন এবং রূপান্তরের মন্ত্রে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দ্রুত বিকাশ করছে। আপনাদের একটি সঠিক ভোট সমস্যাকে সম্ভাবনায় পরিণত করেছে। আজ সারা বিশ্বের ভারতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের মানুষকেও কংগ্রেস এবং ওয়াইএসআরসিপির নেতিবাচকতা থেকে দূরে থাকতে হবে এবং বিজেপি-এনডিএ-তে যোগ দিতে হবে। আনাকাপল্লে থেকে আনন্দপুরম পর্যন্ত একটি ৬ লেনের হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে, রায়পুর-বিশাখাপত্তনম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত, অন্ধ্রপ্রদেশে ৪ হাজার কিলোমিটার হাইওয়ে ছিল, যা এখন ৯ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। কেন্দ্রের এনডিএ সরকার অন্ধ্রপ্রদেশের তরুণদের জন্য কাজ করছে। রাজ্যে আইআইআইটি, আইআইটি, আইএসইআর এবং আইএইএম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তরুণদের জন্য পেট্রোলিয়াম ইউনিভার্সিটি এবং গ্রিন এনার্জি পার্কেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নাক্কাপল্লীতে একটি বাল্ক ড্রাগ পার্ক চালু করার জন্য ১,০০০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যাতে রাজ্যে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওয়াইএসআরসিপি মদে নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, কিন্তু রাজ্য সরকার নিজেই মদ ব্যবসা এবং দুর্নীতিতে জড়িত। অন্ধ্রপ্রদেশে একটি বড় মদের সিন্ডিকেট চলছে। এখন রাজ্য সরকার চালাচ্ছে বালি মাফিয়া এবং মদ মাফিয়ারা। ওয়াইএসআরসিপি সরকার দুর্নীতিতে পূর্ণ গতিতে রয়েছে, কিন্তু রাজ্যের উন্নয়ন কাজ আটকে আছে। ওয়াইএসআরসিপি অন্ধ্রপ্রদেশে তিনটি রাজধানী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু একটিও করতে পারেনি। এসব লোক রাজধানীর নামে ব্যাপক লুটপাটে লিপ্ত এবং সরকারের কোষাগার আগেই ফাঁকা। ওয়াইএসআরসিপি এবং কংগ্রেস কেবল দুর্নীতিই পরিচালনা করতে পারে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যখন জনসাধারণের সেবা করার কোনও উদ্দেশ্য থাকে না, তখন ফলাফল অর্জিত হয় না। পোলাভারম প্রকল্প স্থগিত করে, ওয়াইএসআরসিপি অন্ধ্রপ্রদেশের লাইফলাইন কেটে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, কিন্তু ওয়াইএসআরসিপি এটি সম্পূর্ণ হতে দিতে চায় না। অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষকরা চিন্তিত, কৃষকরা ধানের ন্যায্য দামও পাচ্ছেন না। ৪ জুনের পর অন্ধ্রপ্রদেশের সব সমস্যার সমাধান করবে এনডিএ সরকার।

শ্রী মোদী বলেন যে এনডিএ-র কাছে বিকশিত ভারত গঠনেরই অংশ বিকশিত অন্ধ্রপ্রদেশ। তাই গত ১০ বছরে আমরা অন্ধ্রপ্রদেশে দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। এখন অমরাবতী-বিজয়ওয়াড়া সড়ক প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে হায়দরাবাদের সংযোগকারী সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডরের মতোই বিশাখাপত্তনম-চেন্নাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোরেরও কাজ চলছে। চেন্নাই থেকে কলকাতা হাইওয়ে হোক বা রাজামুন্দ্রি বিমানবন্দর হোক বা বিশাখাপত্তনমের উত্তর-দক্ষিণ উপকূল রেলওয়ে জোন হোক সব উন্নয়ন প্রকল্পই এই সমস্ত অঞ্চলের চেহারা বদলে দেবে। এখানে জাতীয় সড়কের কাজ শেষ হলে ফিশিং হারবার এবং কাকিনাড়া বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ সুগম হবে। এতে সি-ফুড এর ব্যবসা বাড়বে এবং জেলেরা লাভবান হবেন। বিজেপি মানেই উন্নয়ন, কিন্তু ওয়াই এস আর সি পি মানেই দুর্নীতি। কেন্দ্রীয় সরকার বিশাখাপত্তনমে একটি রাজ্য রেলওয়ে কেন্দ্র করার অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু রাজ্য সরকার এর জন্য জমি দিচ্ছে না। এমনকি রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্ধেক ঘরের কাজও শেষ হয়নি। গরিবদের জন্য মোদীর কাজ করা নিয়েও ওয়াই এস আর সি পি-র সমস্যা রয়েছে। তাদের একটাই এজেন্ডা, যেখানে দুর্নীতি হবে না, সেখানে কাজও করা হবে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাবার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিজের হাতে নিয়েছে, কিন্তু তাঁর শুরু করা প্রকল্পগুলি শেষ করতে পারেননি। সরকারের কৃষক বিরোধী নীতির কারণে রাজ্যের চিনিকলগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। মোদী সরকার ইথানল মিশ্রণের মাধ্যমে আখ চাষীদের ৮০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা দিয়েছে। বিজেপি সংকল্প পত্রে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের বীমা কভারেজ বৃদ্ধি এবং তাদের আয় বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিয়েছে। কংগ্রেস এবং ওয়াইএসআরসিপি তাদের তোষণের রাজনীতির জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের সংস্কৃতির ক্ষতি করেছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের অনুষ্ঠানে পর্যন্ত যোগদান করেনি কংগ্রেস। এনডিএ সরকার অন্ধ্রপ্রদেশের সংস্কৃতির এই ক্ষতি করা বন্ধ করবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ১৩ মে অন্ধ্রপ্রদেশের জনগণকে রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য ভোট দিতে হবে। এবার অন্ধ্রপ্রদেশের জনগণের কাছেও মোদীর গ্যারান্টি আছে, চন্দ্রবাবু জির নেতৃত্ব এবং পবন কল্যাণ জির আশ্বাস রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি অন্ধ্রপ্রদেশের সমস্ত লোকসভা এবং বিধানসভার এনডিএ প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়ী করার আবেদন জানিয়েছেন।

হিন্দুস্থান সমাচার / রাকেশ / সৌম্যজিৎ / সোনালি




 

 rajesh pande