গুয়াহাটি, ১৩ মে (হি.স.) : অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় রাজ্য ভিত্তিক রবীন্দ্র সংগীত ও রবীন্দ্রনৃত্য প্রতিযোগিতার সফল সমাপ্তি হয়েছে। গুয়াহাটির শ্রীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্রে আয়োজিত ১০ এবং ১১ মে অনুষ্ঠিত ফাইনাল রাউন্ড প্রতিযোগিতায় রাজ্যের ২০টি সেন্টার থেকে মোট ৩৬০ ষাট জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। সেখান থেকে মোট ২১ জন স্থান লাভ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার পর্ষদের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এ খবর দিয়ে জানানো হয়েছে, প্রতিযোগিতায় রবীন্দ্র সংগীতের 'ক' বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে কলমৌজো মার, দ্বিতীয় পুরস্কার আয়ুষ্মান ভট্টাচার্য, তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে বিনাশ্রী দাস।
'খ' বিভাগে প্রথম পুরস্কার সংস্কৃত চক্রবর্তী, দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেছে নীহারিকা বর্মণ। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে অলোকানন্দ ভুইয়াঁ। 'গ' বিভাগে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে নম্রতা ভট্টাচার্য ও গৌরব সিনহা, দ্বিতীয় পুরস্কার জয়িতা চক্রবর্তী, তৃতীয় পুরস্কার দীক্ষিত মহন্ত।
এছাড়া রবীন্দ্র নৃত্যের ' ক ' বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে প্রিয়াংশী দাস, দ্বিতীয় পুরস্কার তনুশ্রী পাল, তৃতীয় পুরস্কার সোনাক্ষী পালিত। 'খ' বিভাগে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে রাজনন্দিনী দেব ও সুজল ভট্টাচার্য, দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে অন্বেষা চক্রবর্তী এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে রাজনন্দিনী দত্ত।
'গ' বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে সূর্য সাহা, দ্বিতীয় পুরস্কার নন্দিতা দে এবং যৌথভাবে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে জিশা দে ও রক্তিম চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪-তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাজ্যের ২০টি শহরে গত ১২ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অডিশন নেওয়া হয়েছিল। ২০টি সেন্টারে মোট ৮০ জন বিচারক ৫,২৫৩ জন প্রতিযোগী থেকে ৩৬০ জনকে বাছাই করে গুয়াহাটির ফাইনাল রাউন্ডে যাওয়ার ছাড়পত্র প্রদান করেন। দুদিনের ফাইনাল রাউন্ডে ৩৬০ জন প্রতিযোগী থেকে বিচারক মণ্ডলী ২১ জনকে চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত করেন।
সোমবার মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ১২ মে অর্থাৎ সোমবার রাতের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। ফলস্বরূপ রবিবার রাতেই শ্রীমন্ত শংকরদেব কলাক্ষেত্রের মাধবদেব ইন্টারন্যাশনাল অডিটোরিয়াম এবং ড. বাণীকান্ত কাকতি অডিটোরিয়ামে অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ প্রতিযোগীদের হাতে শংসাপত্র, ট্রফি এবং নগদ অর্থ পুরস্কার হিসেবে তুলে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
সংগীত ও নৃত্যে পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে 'ক' বিভাগে প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ৫ হাজার টাকা। 'খ' বিভাগে প্রথম পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১২ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা। 'গ' বিভাগে প্রথম পুরস্কার ২১ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১৮ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা।
রবিবারের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন অসম সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন তথা হোজাইর প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, ডেপুটি চেয়ারপার্সন সুশান্ত বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিতা সেন প্রমুখ।
অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন শিলাদিত্য দেব বলেন, 'বিশ্বকবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এত বড় আয়োজন দেশের কোথাও আছে বলে মনে হয় না। তবে তৃতীয় রাজ্য ভিত্তিক রবীন্দ্র সংগীত ও রবীন্দ্রনৃত্য প্রতিযোগিতায় অনেক বেশি সাড়া পাওয়া গেছে বিভিন্ন জাতি-জনগোষ্ঠীর সমান্তরাল অংশগ্রহণ এই আয়োজনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। প্রতিটি ঘরে কবিগুরুর বার্তা বিলিয়ে দিতেই মূলত এই আয়োজন। যেখানে রয়েছে সম্প্রীতি ও সমন্বয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী জুন মাসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসমীয়া সৃষ্টি নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরিকল্পনার কথা জানান চেয়ারপার্সন দেব। যেখানে শুধু রবীন্দ্র সংগীত ও রবীন্দ্রনৃত্যের অসমীয়া অনুবাদের ওপর গোটা অনুষ্ঠান হবে। তিনি রাজ্যজুড়ে আয়োজিত সংগীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগী, অভিভাবক তথা সেন্টার ভিত্তিক সকল আয়োজকদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব