গুয়াহাটি, ২৫ মে (হি.স.) : ব্রিটেনস্ গট ট্যালেন্টের ফাইনাল রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে অসমের শিশুকন্যা আট বছরের বিনীতা ছেত্রী। সেমিফাইনালে তার অসাধারণ পারফর্মেন্স দিয়ে বিচারকদের মন জয় করে ফাইনাল রাউন্ডের ছাড়পত্র অর্জন করেছে বিনীতা।
তার অসাধারণ নৃত্যকলা, অনবদ্য কৌশল, মাধ্যাকর্ষণ-অবাধ্য ফ্লিপ এবং বৈদ্যুতিক শক্তির সাথে মিশে রাতারাতি তাকে একজন সেনসেশনে পরিণত করেছে। বিচারক সাইমন কাওয়েল, আমান্ডা হোল্ডেন, ব্রুনো টোনিওলি এবং আলেশা ডিক্সন তার অসাধারণ নৃত্যকলা দেখে বিস্মিত হয়ে যান। বিচারক মণ্ডলী এবং দর্শক, উভয়কে মুগ্ধ করে অসাধারণ নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে বিনিতা গ্র্যান্ড ফিনালেতে তার স্থান নিশ্চিত করেছে। পরিবেশনার পর সে তার অনুষ্ঠানের অফিশিয়াল হ্যান্ডেল থেকে শেয়ারকৃত ভিডিওয় আনন্দ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
বিনীতা লিখেছে, ‘আমি খুবই উত্তেজিত এবং খুশি। আগামী সপ্তাহে ফিনালেতে শীঘ্রই দেখা হবে। এটি একটি উন্মাদনার মুহূর্ত - এটি একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।’
রাজস্থানের জয়পুরের মাই ওয়ান স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা কারবি আংলঙের বোকাজান মহকুমার অন্তৰ্গত অমরাজানের মেয়ে বিনীতার বিশ্ব মঞ্চে যাত্রার আনন্দে মাতোয়ারা তার গৃহ জেলা সহ রাজ্য। ভক্তরা তার দক্ষতা, মঞ্চে উপস্থিতি এবং নম্রতার প্রশংসা করছেন।
ব্রিটেন থেকে মোবাইল ফোনে হিন্দুস্থান সমাচারের সঙ্গে বিনীতার বাবা অমর ছেত্রীর বার্তালাপ হয়েছে। তিনি জানান, ‘মেয়ের বয়স যখন আড়াই বা তিন, তখন থেকে নাচের প্রতি সহজাত আগ্রহ ছিল তার। আমরা লক্ষ্য করলাম, সে নির্ভুলতার সঙ্গে নৃত্যের প্রতিটি স্টেপ, মুদ্রা, এককথায় নৃত্যের সব কলাকৌশল প্রদর্শন করছে। সংগীতের সঙ্গে শরীরের সংযোগ স্থাপন, আবেগ প্রকাশ, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বিশেষভাবে ব্যবহার করছে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম তার প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেওয়া দরকার। তবে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগে সে ইউটিউব ভিডিও থেকে কোরিওগ্রাফি অনুকরণ করত।’
অসমের বোকাজানে একটি ছোট ব্রয়লার খামারের মালিক অমর ছেত্রী প্রশিক্ষণের জন্য বিনীতাকে গুয়াহাটিতে পাঠানোর সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তা শুনে বিনীতার মাসি অনিতা দেবীর পরামৰ্শে তাকে নিয়ে জয়পুরে চলে যান বাবা। সেখানে মাসি অমৃতা দেবী বিখ্যাত নৃত্য-প্রশিক্ষক হার্দিক রাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হার্দিক রাওয়াতের কাছে বিনীতা নিরলস অনুশীলন এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে তার দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে।
এ সব জানিয়ে বাবা অমর ছেত্রী বলেন, ‘বিনীতার মাসি অমৃতা দেবী এবং হার্দিক রাওয়াত স্যার তাকে ব্রিটেনস্ গট ট্যালেন্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন। হার্দিক স্যার তার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেছিলেন এবং আজ আমরা সেই বিশ্বাসের ফলাফল দেখতে পাচ্ছি। তবে বিনীতার এই সাফল্যের সব কৃতিত্বের দাবিদার তার মাসি অমৃতা।’
এখন বিনীতার কাছে ব্রিটেনস্ গট ট্যালেন্ট হলো তার ‘স্বপ্নের মঞ্চ’, কারণ, বিচারক এবং দর্শকদের সামনে সে তার প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত, বলেন বাবা অমর ছেত্রী।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস