সাব্রুম (ত্রিপুরা), ২৩ জুলাই (হি.স.) : দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাব্রুম মহকুমার অন্তর্গত বেতাগা টিটএএডিসি ভিলেজে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। মৃতার নাম সমিতা ত্রিপুরা (৪১), স্বামী জন কুমার ত্রিপুরা। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধরে নেওয়া হলেও, পরিবারের তরফ থেকে স্পষ্ট অভিযোগ তোলা হয়েছে যে এটি একটি পরিকল্পিত খুন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে সমিতা ত্রিপুরাকে বিষপান অবস্থায় প্রথমে মনু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শান্তিরবাজার দক্ষিণ জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। এরপরেও অবস্থার আরও অবনতি হলে রাতে কলাছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে রাত তিনটা নাগাদ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এরপরই সমিতার মৃতদেহ সৎকারের জন্য বেতাগা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু রাতে মৃতার ভাই দয়া প্রসন্ন ত্রিপুরা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গ্রামে পৌঁছলে ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। মৃতদেহ দেখেই তারা চমকে উঠেন। সমিতার পিঠ ও কানের পিছনে জমাট রক্তের দাগ দেখে পরিবারের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং বিষপানের নাটক সাজিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তাঁরা মৃতদেহ সৎকারে বাধা দেয় এবং তৎক্ষণাৎ সাব্রুম থানায় খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ রাতেই মৃতদেহ সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে ময়নাতদন্তের জন্য। বর্তমানে মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সাব্রুম হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মৃতার ভাই দয়া প্রসন্ন ত্রিপুরা বলেন,
আমার বোন আত্মহত্যা করেনি। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই। প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, দয়া করে ন্যায়বিচার দিন।
ঘটনার পর থেকে বেতাগা গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই মৃত্যুর পেছনে আদৌ গৃহবধূর মানসিক অবসাদ, পারিবারিক অশান্তি নাকি অন্য কোনও ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে, তা খোলসা হবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ