পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা বিপন্ন, বৃহত্তর সনাতনী ঐক্যের আহ্বান শুভেন্দুর
দুর্গাপুর, ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : “রোহিঙ্গারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জামাই, আর বিহার-গুজরাট থেকে আসা ভারতীয়দের বলে বাহারি। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ও জাতপাতের রাজনীতিতে সনাতন সমাজকে বিভক্ত করা হচ্ছে।” — এমনই তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্
পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা বিপন্ন, বৃহত্তর সনাতনী ঐক্যের আহ্বান শুভেন্দুর


দুর্গাপুর, ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : “রোহিঙ্গারা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জামাই, আর বিহার-গুজরাট থেকে আসা ভারতীয়দের বলে বাহারি। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ও জাতপাতের রাজনীতিতে সনাতন সমাজকে বিভক্ত করা হচ্ছে।” — এমনই তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার দুর্গাপুরে ‘স্বপ্ন উড়ান’-এর জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্বোধনে এসে তিনি বৃহত্তর সনাতনী ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “১৯৫৮ সালে হিন্দুরা ছিল ৮৫ শতাংশ, ২০১১-তে কমে দাঁড়িয়েছে ৭২ শতাংশে। এই প্রবণতা চললে ২০৩১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা নেমে আসবে ৬৫ শতাংশে। মালদা-মুর্শিদাবাদের মতো পশ্চিমবঙ্গেও হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। তখন আর সংবিধান নয়, অন্য কিছু চলবে। বাংলাদেশের মতোই হিন্দুরা বিপন্ন অবস্থায় পৌঁছাবে।”

শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, “তৃণমূল সরকার তোষণের রাজনীতি করছে। তামাং, কুড়মি, লেপচা— এমন বোর্ড গঠন করে সনাতন সমাজকে বিভক্ত করছে। মুখ্যমন্ত্রী শুধু দু’টি জিনিস জানেন— তোষণ আর ভাতাভিত্তিক রাজনীতি।”

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতনবৈষম্য নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, “অষ্টম পে কমিশন কার্যকর হলে কেন্দ্রের কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন হবে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু রাজ্যের কর্মচারীরা তার অর্ধেকও পান না। তাই তাঁদের বিয়ে করতেও অসুবিধা হচ্ছে।”

বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণ নিয়ে সমালোচনার জবাবে শুভেন্দুর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ উজ্বলা সংযোগের মধ্যে ৩০ লক্ষ বিশেষ সম্প্রদায়ের মহিলা সুবিধা পেয়েছেন। আবাস যোজনা, শৌচালয় প্রকল্প বা কিষাণ সম্মান নিধি— সব ক্ষেত্রেই বিশেষ সম্প্রদায়ের পরিবাররাও উপকৃত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী ধর্ম নয়, জাতীয় উন্নয়নের রাজনীতি করেন।”

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি অভিযান প্রসঙ্গে তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “মনরেগার টাকা তুলতে গিয়ে যেভাবে খালি পায়ে পালিয়ে আসতে হয়েছিল, এবার যেন জুতো খুলে রাখতে হয় কলকাতায়ই।”

রাজ্যের দুর্নীতি প্রসঙ্গে শুভেন্দুর মন্তব্য, “১৭ পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান চুরি-দুর্নীতিতে জড়িত। ইডিকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, সুজিত বসুর বাড়ি থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা উদ্ধারের পরও কেন গ্রেফতার হয়নি? কামারহাটির পৌরসভায় তাঁর দুই শালিকা চাকরি পেয়েছেন। ফিরহাদ হাকিম ও রথিন ঘোষও এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।”

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অবস্থা টেনে তিনি বলেন, “সেখানে হিন্দুরা ৩৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৭ শতাংশ। হিন্দু মা’রা শাখা-পলা পরতে পারেন না, বৈষ্ণবরা তিলক ধারণ করতে পারেন না। পশ্চিমবঙ্গেও হিন্দুরা সেই সঙ্কটের দিকে এগোচ্ছে।”

তিনি হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পুজো পালন করতে হবে পঞ্জিকা মতে, গোরক্ষা ও গোশালা গড়তে হবে, নবপ্রজন্মকে সনাতন আচারে শিক্ষিত করতে হবে। আমি মন্ত্রীত্ব ছেড়েছি হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, তাহলেই পশ্চিমবঙ্গেও যোগী আদিত্যনাথের মতো শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।”

-----------

হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা




 

 rajesh pande