
কমলপুর (ত্রিপুরা), ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : ছয়দিন অশান্ত থাকার পর অবশেষে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে ধলাই জেলার ল কমলপুর মহকুমার শান্তিরবাজার এলাকা। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে জাতি-জনজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পুলিশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এক গুরুত্বপূর্ণ শান্তি বৈঠক।
বৈঠকে গত ২৩ অক্টোবর বিকেলে সিভিল সোসাইটির ডাকা বনধ চলাকালীন যে তাণ্ডব ও অশান্তি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন।
এদিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, গত ছয়দিন ধরে ২৪ ঘণ্টা বলবৎ থাকা ১৬৩ ধারা আংশিক শিথিল করা হবে। এখন থেকে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৬৩ ধারা কার্যকর থাকবে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এলে ১৬৩ ধারা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হবে।
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত এবং বাজারে স্বাভাবিক বিকিকিনি ও চলাচল শুরু হয়েছে। জাতি ও জনজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপ্রাসা নাগরিক সমাজের ডাকা ২৪ ঘণ্টার বনধ চলাকালীন শান্তিরবাজারে উপজাতি ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ বাজারে দোকান বন্ধের নির্দেশ অমান্য করায় ত্রিপ্রাসা নাগরিক সমাজের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক ব্যবসায়ীদের হুমকি দেন। প্রতিরোধ গড়ে উঠতেই দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, পরে পাথরবৃষ্টি শুরু হয়। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন জনতা কেরোসিনভর্তি বোতল নিক্ষেপ করে এবং একটি পার্ক করা লরিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বেশ কয়েকটি দোকানেও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালানো হয়। ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে দোকানে।
শান্তি রক্ষায় বিশাল পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল। হামলার ঘটনায় সালেমা ব্লকের বিডিও অভিজিৎ মজুমদার, ইঞ্জিনিয়ার অনিমেষ সাহা এবং এসডিপিও সমুদ্র দেববর্মা সহ অনেকে হন। তারপর ওইদিন রাতেই ধলাই জেলা শাসক কমলপুর মহকুমায় ১৬৩ ধারা জারি কেরন।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ