কাদারোড যৌনপল্লীতে এসআইআর আতঙ্ক, দিশেহারা যৌনকর্মীরা
দুর্গাপুর, ১৮ নভেম্বর (হি.স.) : জন্মভিটে ছেড়েছেন বহু বছর। ঘরের ঠিকানা, বাবা-মায়ের পরিচয় সবই আজ দূর অতীত। তাই এসআইআর এনুমারেশন ফর্ম হাতে আসতেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে যাওয়ার ভয় গ্রাস করেছে দুর্গাপুর ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাদারোড
কাদারোড যৌনপল্লীতে এসআইআর আতঙ্ক, দিশেহারা যৌনকর্মীরা


দুর্গাপুর, ১৮ নভেম্বর (হি.স.) : জন্মভিটে ছেড়েছেন বহু বছর। ঘরের ঠিকানা, বাবা-মায়ের পরিচয় সবই আজ দূর অতীত। তাই এসআইআর এনুমারেশন ফর্ম হাতে আসতেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে যাওয়ার ভয় গ্রাস করেছে দুর্গাপুর ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাদারোড যৌনপল্লীর বাসিন্দাদের। অনেকে আতঙ্কে ঘরও ছেড়ে পালিয়েছেন। যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি ও নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়েছে ‘দুর্বার’ সংগঠন।

পেটের দায়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু বছর আগে এই পল্লীতে এসে ঠাঁই নিয়েছিলেন তাঁরা। কেউ অসম, কেউবা বহু কাল আগে বাংলাদেশ থেকে।প্রায় ৭০ বছর আগে এখানে তৈরি হয় যৌনপল্লী। বর্তমানে প্রায় ৮০০ যৌনকর্মী এখানে বসবাস করেন। ১৯৯৬-৯৭ সালে দুর্বার সংগঠন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে শুরু করে।

যৌনকর্মীদের ওপর এবার নেমে এসেছে এসআইআর প্রক্রিয়ার নতুন চাপ। বিএলও এনুমারেশন ফর্ম বিলি করেছেন ঠিকই, কিন্তু অধিকাংশেরই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা বা সেই সময়কার পারিবারিক নথি নেই। কারণ, বাড়িঘর, বাবা-মা, সেই সময়ের ঠিকানা সবই হারিয়ে গেছে সময়ের সঙ্গে। অনেকেই চার-দশক ধরে এখানেই বসবাস করছেন। ফলে তাঁদের প্রশ্ন “নথি না থাকলে কি ভোটাধিকারটাই হারাতে হবে? ” আর যদি নাম বাদ পড়ে, তবে তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যতই বা কী?

দুর্বার দুর্গাপুর শাখার ডিরেক্টর নীলকমল মিশ্র বলেন, “এনুমারেশন ফর্ম দেওয়া হলেও সমস্যার মূলে রয়েছে ২০০২-এর আগের নথি। অধিকাংশ যৌনকর্মীর নিজের পরিবার বা জন্মস্থানের সঙ্গে বহু আগেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বাবা-মা কোন বুথে ভোট দিতেন তা বলাও অসম্ভব। আধার রয়েছে ঠিকই, কিন্তু অতীতের নথি নেই। ফলে ভয় তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। অনেকে আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।”

যৌনপল্লীর বাসিন্দাদের একটাই দাবি “আমাদের ভোটাধিকার যেন না হারায়, এবং সমাজে আমাদের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।”

-----

হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা




 

 rajesh pande