
উদয়পুর (ত্রিপুরা), ৭ অক্টোবর (হি.স.) : জনজাতি সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বর্তমান ত্রিপুরা সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে— জানালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা।
শনিবার গোমতী জেলার কিল্লা এলাকার দশরথদেব মেমোরিয়াল ইংলিশ মিডিয়াম মডেল হাই স্কুল প্রাঙ্গণে জনজাতি মহিলাদের মধ্যে রিয়া ও পাছড়া বুননের সুতা বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে তিনি জনজাতি মহিলাদের হাতে বুননের সুতা তুলে দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ” নীতিকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার সার্বিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মহিলা বিভিন্ন স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত আছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনজাতি মহিলা রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এই সরকারই রাজ্যের জনজাতি সমাজকে তাদের প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছে। আগরতলা বিমানবন্দরের নামকরণ মহারাজা বীরবিক্রম মানিক্যের নামে করা হয়েছে, বড়মুড়া পাহাড়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে হাতাইকতর, গন্ডাছড়ার নাম রাখা হয়েছে গন্ডাতুইসা, এবং গড়িয়া পুজোর সময় দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আগে মাত্র ৪টি একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল ছিল, বর্তমানে সেই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। জনজাতি বিকাশ যোজনার আওতায় ৩২৫ জন সুবিধাভোগীকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ৪০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১,০০০ টাকা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “জনজাতি সমাজের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য আমাদের গৌরবের বিষয়। এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশে রাজ্য সরকার নিরন্তর উদ্যোগ নিচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জনজাতি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা বলেন, বর্তমান সরকার জনজাতি সমাজের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও জীবিকাবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাস্তব উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আত্মনির্ভরতার পথে জনজাতি মহিলাদের এগিয়ে নিতে এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য জানান, রাজ্য সরকার জনজাতি এলাকার উন্নয়নে বাজেটের প্রায় ৩৯ শতাংশ বরাদ্দ করেছে। অনুষ্ঠানে বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিল্লা ব্লক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান বাগান হরি মলসম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দফতরের অধিকর্তা অজিত শুক্লদাস। উপস্থিত ছিলেন গোমতী জেলার জেলাশাসক রিঙ্কু লাথের, সমাজসেবী সবিতা নাগসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ