একদা কমলার জন্য বিখ্যাত ডিমা হাসাও জেলার জাটিঙ্গা, সরকারি সহায়তার আর্জি
হাফলং (অসম), ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : কমলার জন্য এক সময় বিখ্যাত ছিল ডিমা হাসাও জেলার জাটিঙ্গা। অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের অতি পরিচিত একটি গ্রাম জাটিঙ্গা। জাটিঙ্গার কমলা ছিল সুস্বাদে ভরা। জাটিঙ্গাতে কমলা উৎপাদিত হতো জৈবিক পদ্ধতিতে। জাটিঙ্
রাস্তার পাশে বিখ্যাত জাটিঙ্গার কমলার পসরা


হাফলং (অসম), ১১ ডিসেম্বর (হি.স.) : কমলার জন্য এক সময় বিখ্যাত ছিল ডিমা হাসাও জেলার জাটিঙ্গা। অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের অতি পরিচিত একটি গ্রাম জাটিঙ্গা। জাটিঙ্গার কমলা ছিল সুস্বাদে ভরা। জাটিঙ্গাতে কমলা উৎপাদিত হতো জৈবিক পদ্ধতিতে।

জাটিঙ্গা শুধু কমলার জন্যই বিখ্যাত ছিল না, দেশ-বিদেশের পরিযায়ী পাখির জন্যও বিখ্যাত জাটিঙ্গা। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে যেভাবে পরিযায়ী পাখির আগমন হ্রাস পেয়েছে, ঠিক সেভাবে কমলা উৎপাদনও কেমে গেছে জাটিঙ্গায়। এক সময় কমলা এবং আনারসের সমৃদ্ধিশালী বাগানের জন্য যদিও জাটিঙ্গা পরিচিত ছিল, বর্তমানে বিভিন্ন প্ৰত্যাহ্বান, অপৰ্যাপ্ত সরকারি সাহায্য এবং বিপণনের অভাব, পরিকাঠামো খারাপ হওয়ার পাশাপাশি কোল্ড স্টোরেজের অভাবের জন্য স্থানীয় কৃষকদের সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে।

জাটিঙ্গায় আনারস এবং কমলার চাষিরা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার জেরে এখন আর জাটিঙ্গায় তেমন কমলা উৎপাদন হয় না। এক সময় জাটিঙ্গায় উৎপাদিত কমলা রাজ্য সহ বহিঃরাজ্যে বিখ্যাত ছিল। জাটিঙ্গা থেকে কমলা বাইরে রফতানি হত।

কমলা বাগান জাটিঙ্গার কৃষকদের উপার্জনের মূল উৎস ছিল। কমলার বাগান করে অনেকেই নিজের পরিবার চালাতেন। আজ এই কৃষকরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে কমলা বাগান করা থেকে বিরত রয়েছেন। এখন জাটিঙ্গায় কমলা আগের মতো উৎপাদন না হওয়ার দরুন কৃষকরা এখন আনারস ও পানের বাগান করে পরিবার প্রতিপালন করছেন।

জাটিঙ্গার কৃষকরা জৈবিকভাবে কমলার বাগান করেন। কিন্তু সরকারি সাহায্য, সঠিক বিপণন এবং কোল্ড স্টোরেজের সুবিধার অভাবের জন্য কৃষকরা বৰ্তমানে সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। যার দরুন কৃষকদের নিজের উৎপাদিত সামগ্ৰী কম দামে বিক্ৰি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

জনৈক কৃষক এই প্রতিবেদকে বলেন, এখন আর আগের মতো জাটিঙ্গায় কমলা উৎপাদন হয় না। তার মূল কারণ হচ্ছে কমলা গাছে পোকার আক্ৰমণ। এখন কমলা বাগান করার পর দু-তিন বছর কমলা উৎপাদন হয়। তার পর কমলার বাগান নষ্ট করে দেয় পোকা। তিনি বলেন, এক সময় তাঁদের কমলা বাগানে গাড়ি গাড়ি কমলা উৎপাদন হত। এই কমলা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো। তখন উপাৰ্জন বেশি ছিল। কিন্তু এখন তেমন উপাৰ্জন হয় না। এখন যে কমলা উৎপাদন হয় তা নিজেদের খাওয়ার জন্য পৰ্যাপ্ত হয় না বলে জানিয়ে ওই কৃষক বলেন, এখন যে কমলা উৎপাদন হয় তা স্থানীয় বজারে বিক্ৰি করা হয়। এখন জেলার বাইরে রফতানি করা হয় না জাটিঙ্গার কমলা। এখন দু-তিন বছর কমলা উৎপাদন হওয়ার পর পোকার দরুন কমলা গাছ থেকে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া পোকার আক্রমণে গাছও মরে যায়। যার দরুন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তাদের।

তিনি বলেন, এখন কমলা বাগানের বাইরে পরিবার চালানোর জন্য আনারস, পান, আদা এবং হলুদের চাষ করতে হচ্ছে। ওই কৃষক ক্ষোভ প্ৰকাশ করে বলেন, কমলা করে যেভাবে তাঁদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সাহায্য তারা পাচ্ছে না।

তাঁর অভিযোগ, পোকার প্ৰকোপ থেকে রক্ষা পেতে কৃষি বিভাগ থেকে কোনও ধরনের ওষুধ ও দেওয়া হয় না। যার ফলে কমলা বাগান করে জাটিঙ্গার কৃষকরা এখন তেমন সফল হতে পারছেন না। তাই বিকল্প হিসেবে পান, আনারস, আদা, হলুদের চাষ করতে হচ্ছে তাঁদের, জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই কৃষক।

হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব




 

 rajesh pande