

ঢাকায় শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা
।। রাজীব দে ।।
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর (হি.স.) : ১৯৭১ সালের স্মরণে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবসের এই দিনটিকে ভারত শ্রদ্ধাভরে স্মৃতিচারণ করে, এই দিনটি ভারত ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক, যা কখনও মুছে ফেলা যাবে না, বক্তা বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা।
আজ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার সামরিক জাদুঘর মাল্টিপারপাস হল-এ ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ আয়োজিত শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনাসভা। অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত অতিথি সহ সকলেই দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী মিসেস ভার্মা।
শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবসের আলোচনাসভায় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও শিশুদের চিত্রাঙ্কন উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক, দূরদর্শী ও পারস্পরিক কল্যাণমূলক একটি সম্পর্ক চায়, যেখানে দুই দেশের জনগণই প্রধান অংশীদার। আস্থা প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, উভয় পক্ষই অতীতের যৌথ ত্যাগের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ভবিষ্যতের জন্য আমাদের নতুন আকাঙ্ক্ষার দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হয়ে আমাদের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে ও আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নির্মাণ করবে।
শহিদ বুদ্ধিজীবি দিবস অনুষ্ঠান উদযাপনে বাংলাদেশের শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনায় উভয় দেশের অভিন্ন সাংস্কৃতিক বন্ধন ও শৈল্পিক সমৃদ্ধিকে উপস্থাপন করে একটি হৃদয়স্পর্শী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন হয়। অনুষ্ঠানে গোটা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধাগণ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববৃন্দ, শিশুরা, তরুণ প্রজন্ম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। আগত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেস্ট প্রদান উপহার ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন স্কুলের শিশুদের সার্টিফিকেট ও পুরুস্কার বিতরণ করা হয়।
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস একটি ঐতিহাসিক স্মরণোৎসবের চেয়েও বেশি কিছু, এটি দুই প্রতিবেশী দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও পারস্পরিক সহমর্মিতার মূর্ত প্রতীক। বুদ্ধিজীবী দিবস উদ্যাপন হলো যৌথ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ভারত ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অংশীদারত্বের প্রতি এক নবায়িত অঙ্গীকার। অনুষ্ঠানটি বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল বারক আলভির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আশরাফুল ইসলাম।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ফকরুল আলম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা শাহিন সামাদ এবং শহিদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা। অনুষ্ঠানে নালন্দা বিদ্যালয়, অরণি বিদ্যালয়, তক্ষশিলা বিদ্যালয়, টাননটোন আর্ট স্কুল ও কার্ড আর্ট অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস