গণসংবর্ধনা সমাবেশে ভারত-বিরোধী, আওয়ামি লিগ, শেখ হাসিনা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি তারেক
ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তৰ্বৰ্তী সরকার ও জামায়াত এবং এনসিপি সহ অন্য দলগুলোর অবস্থানের দিকে হাঁটলেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর স্বদেশে পা রেখে লক্ষাধিক জনতার উপস্থিতি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান


লক্ষাধিক জনতার সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছেন তারেক রহমান


রাজধানীর পূর্বাচলে সমাবেশস্থলে আসার মুহূর্তে


ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তৰ্বৰ্তী সরকার ও জামায়াত এবং এনসিপি সহ অন্য দলগুলোর অবস্থানের দিকে হাঁটলেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর স্বদেশে পা রেখে লক্ষাধিক জনতার উপস্থিতিতে গণ-সংবর্ধনা সমাবেশে প্রদত্ত প্রথম ভাষণে ভারত-বিরোধী, এমন-কি আওয়ামি লিগ কিংবা শেখ হাসিনা সম্পৰ্কে একটি শব্দও শোনা যায়নি তারেকের মুখে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিমানবন্দরে তাঁকে হাজারো জনতা উষ্ণ স্বাগত জানিয়ে মিছিল করে নিয়ে আসেন রাজধানীর পূর্বাচলে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে। এখানে তারেক রহমানের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে আয়োজিত গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভা্ষণে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা দেশে শান্তি চাই। ১৯৭১-এ দেশের মানুষ যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে তেমন সর্বস্তরের মানুষ, সবাই মিলে এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছে। আজ বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়, তাঁরা তাঁদের গণতন্ত্রের অধিকার ফিরে পেতে চায়।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের সময় এসেছে, সকলে মিলে বাংলাদেশ গড়ার। এ দেশে পাহাড়ের, সমতলের, মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই আছে। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন নারী, পুরুষ, শিশু, যে-ই হোক না-কেন, নিরাপদে ঘর থেকে বের হলে, যেন নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে।’

ইনকিলাব মঞ্চ-এর মুখপাত্র ওসমান হাদিকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘ওসমান হাদি চেয়েছিলেন দেশের মানুষ অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক। ৭১-এ যাঁরা শহিদ হয়েছেন, ২৪-এ যারা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’

বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মই ভবিষ্যতে দেশ গড়ে তুলবে।’ গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দেশকে গড়ে তোলার ওপর জোর দেন তিনি। তিনি পর পর তিনবার বলেন, ‘আমরা দেশের শান্তি চাই।’

মার্টিন লুথার কিং-এর ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’ উক্তির উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান।’ দেশকে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তারেক বলেন, ‘এ জন্য প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। তা-হলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’

প্রদত্ত ভাষণে তারেক রহমান তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া (আশীর্বাদ) যাচ্ঞা করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক বলেন, আমার মন পড়ে রয়েছে অসুস্থ মা-র কাছে।

তারেক রহমান বলেন, ‘সন্তান হিসেবে আমার মন মায়ের বিছানার পাশে হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। কিন্তু যে মানুষগুলো এবং যার জন্য আমার মা জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।’

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এই দেশের মাটি ও মানুষকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। মায়ের সুস্থতার জন্য তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করে তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande