
আগরতলা, ২৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আগামীকাল তাঁর শবদেহ বেঙ্গালুরু থেকে আগরতলায় আনা হবে। প্রয়াণের শোকে আজ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনদিন রাজ্যজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে সরকার। এই সময়কালে সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। আগামীকাল রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। রাজ্য সরকার আজ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে।
ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববন্ধু সেনের মৃত্যুর খবরে আমি বেদনাহত। বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে ত্রিপুরার উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর প্রয়াসের জন্যে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই দুঃখের সময়ে তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। ওঁ শান্তি।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখ করেছেন ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেনের প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর এই অকালপ্রয়াণ রাজ্যবাসীর জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও অনুগামীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
পরমকরুণাময় ঈশ্বরের নিকট বিদেহী আত্মার সদ্গতি কামনা করি এবং প্রার্থনা করি তাঁর পরিবার যেন এই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে পারেন।
বিশ্ববন্ধু সেনের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিশ্ববন্ধু সেন ছিলেন সংসদীয় গণতন্ত্র ও বিধানসভার মর্যাদা রক্ষায় এক নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রয়াণে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।” শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও তিনি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন শুক্রবার সকালে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন এবং গত কয়েক মাস ধরে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে রাজ্যজুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিশ্ববন্ধু সেন রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেছিলেন কংগ্রেসের হাত ধরে। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০১৮ সালের ২১ জুন ত্রিপুরা বিধানসভার একাদশতম অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে চারবারের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বিশ্ববন্ধু সেন প্রশাসনিক দক্ষতা, শান্ত স্বভাব এবং সংসদীয় ঐতিহ্য রক্ষায় তাঁর দৃঢ় ভূমিকার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন।
তাঁর মৃত্যু ত্রিপুরার রাজনৈতিক অঙ্গন ও আইনসভা কার্যক্রমে এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ