
বাঁকুড়া, ৩ ডিসেম্বর (হি.স.): মঙ্গল ও বুধবার বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ আয়োজিত দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্র ‘সময়ের ভাবনায় আধুনিকতার সন্ধান’–এর আয়োজন হল। বিভাগীয় প্রধান ড. শঙ্করকুমার বিশ্বাস, এবং আলোচনাচক্রের দুই আহ্বায়ক ছিলেন ড. তিস্তা দাস ও ড. ইয়ারুনিসা খাতুন- প্রমুখের উদ্যোগে এই আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য রূপ কুমার বর্মণের গ্রন্থ Kingdom Formation in Pre-Colonial India: A Historical Study on the Formation of the Koch Kingdom c. 1540–1773 CE এর আনুষ্ঠানিক (প্রাইমাস প্রকাশনা সংস্থার সহযোগিতায়) প্রকাশ হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধ্যক্ষ জয়ন্ত কুমার সাহা, নিবন্ধক ড. সৌরভ দত্ত। আলোচক ছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকস্তরের স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষকরা।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে অধ্যাপক বর্মন তাঁর বইয়ের মূল ভাবনা ও পাঠ প্রাসঙ্গিকতা অবতরণের পাশাপাশি আলোচনাচক্রের বিষয়সূচির প্রশংসা করেন। এই অনুষ্ঠানের সভামুখ্য ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও ইতিহাসবিদ ডঃ রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি প্রাক-ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র নির্মাণ ও জাতীয়তাবাদী চিন্তার উন্মেষের ক্ষেত্রে ইতিহাস চিন্তনের প্রয়োজনীয়তা ও এই বইয়ের অবদানের বিষয়ে আলোকপাত করেন।
অধ্যাপক অলোক ঘোষ তাঁর বক্তব্যে বাংলা গদ্যসাহিত্যের বিকাশে কোচ রাজন্যবর্গের ভূমিকা ও দেশজ সংস্কৃতি সন্ধানের প্রয়াস নেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, কলা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও আশুতোষ অধ্যাপক অমিত দে দক্ষিণ এশিয়া সমাজ জীবনে ভিন্নতর আধুনিকতার উন্মেষ ও ধারাবাহিক ইতিহাস চেতনার মূল্যায়ন করতে গিয়ে অবিমিশ্র সমন্বয়বাদের দিকটির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অন্যদিকে, শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কৌস্তুভমণি সেনগুপ্ত পশ্চিমি আধুনিকতা ও দেশীয় চিন্তনের দ্বন্দ্বকে নগর–মফস্বল প্রেক্ষিতে তূলে ধরেন। আন্তর্জালিক মাধ্যমে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অস্মিতা সরকার ঔপনিবেশিক শাসনে জনস্বাস্থ্য ইতিহাস ও কলেরার বিস্তারের প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন।
বুধবার অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে আলোচনা করেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনুরাধা কয়াল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহফুজ পারভেজ। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চল্লিশ জন গবেষক তাঁদের গবেষণাপত্র পাঠ করেন।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / মৌসুমী সেনগুপ্ত