দুর্গাপুর, ১৩ নভেম্বর (হি.স.) : শারদ উৎসব মিটতেই অগ্নিমূল্য সবজি বাজার। আলু, পেঁয়াজ, রসুনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। আকাশ ছোঁয়া সবজির দামে ছ্যাঁকা লাগছে মধ্যবিত্তের। নিম্নচাপে মাঠে লোকসানে জর্জরিত চাষি। দাম নিয়ন্ত্রনে নজরদারি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বুধবার দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে হানা দিল পশ্চিম বর্ধমান জেলা টাস্ক ফোর্স। মাছের বাজারে হাতেনাতে ধরা পড়ল ওজনে কারচুপি। দফায় দফায় নিম্নচাপ। তার দরুণ বন্যা পরিস্থিতিতে নষ্ট হয়েছে মাঠ ভর্তি সবজি। শারদ উৎসব মিটতেই অগ্নিমূল্য বাজারে নাভিশ্বাস দশা মধ্যবিত্তের। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর, পানাগড়, বুদবুদ, অন্ডাল বাজারে আকাশছোঁয়া শাক সবজি। তাতেই হাতে ছ্যাকা লাগছে গ্রামবাংলার সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির। আলু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা থেকে টমেটো, আদা থেকে, ফুলকপি, বাঁধাকপি পটল ঝিঙে আকাশ ছোঁয়া দামে পকেটে টান পড়ছে মধ্যবিত্তের। কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করায় আলু, পেঁয়াজের দাম লাগামছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বর মাসের দ্বীতিয় সপ্তাহে ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা পিস, ঝিঙে কেজি প্রতি ৬০ টাকা, করলা কেজি প্রতি ৮০ টাকা, পটল কেজি প্রতি ৬০-৭০ টাকা, কুমড়ো-কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা, লাও ৫০-৬০ টাকা পিস। বেগুন ১২০-১৪০ টাকা কেজি। আবার পুজোর আগে যেসব শাকের (কলমি, লালশাক, পুনকা শাক) বান্ডিল ছিল ৫ -৮ টাকা এক লাফে ওইসব শাকের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা বান্ডিল। আশ্চর্যজনক বিষয়, সরষে শাকের বান্ডিল ৪-৫ টি চারা নিয়ে এক বান্ডিল দাম বিকোচ্ছে ২০ টাকায়। আবার মুলো অন্যান্য বছর এই সময় যেখানে ২০ - ২৫ টাকা কেজি থাকে। এখন মুলোর দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি। বাজারের দাম আগুন হলেও চাষিরা লোকসানে জর্জরিত। দাম পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। বাজারে এবারে দামের দিকে নজর কেঁড়েছ আলু। যা এরাজ্যে চাষ হয়। বাজারে আলু বিকোচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের। ৭৫-৮০ টাকায় বিকোচ্ছে পেঁয়াজ। আর এই পেঁয়াজের ঝাঁজে বাজারে গিয়ে নাকাল মধ্যবিত্ত। খুচরো বাজারে কাঁচালঙ্কা কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকার দরজায় ও রসুন কেজি প্রতি ৪০০ টাকা দরজায় পৌঁছেছে। দামোদর তীরবর্তী মানাচরের চাষিদের দাবি, টানা বৃষ্টিতে সবজি সব নষ্ট হয়েছে। নতুন সবজি উঠতে এখনও সপ্তাহ খানেক লাগবে। বাজারে যেসব সবজি রয়েছে, সবই বাইরের থেকে আমদানি করা। আমাদের দাবি কৃষ্ণমণ্ডলীতে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে সবজি ক্রয়-বিক্রিয়ের ব্যাবস্থা করুক সরকার। তার সঙ্গে স্থানীয় আড়তগুলোর বৈধতা নিয়ে অভিযান করুক সরকার। তাতে চাষিরা দাম যেমন পাবে, তেমনই বাজার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। গত ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দুয়ারে সরকারের পর এবার দুয়ারে টাটকা সবজির স্টল করে রাজ্য সরকার। কলকাতা থেকে রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান, শিলিগুড়ি ও কলকাতার তিনটি হাবে দেড়শ সুফল বাংলার পয়েন্টের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার একটি হাব রয়েছে কাঁকসায়। একই সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জন্য ৮ টি ভ্রাম্যমান সুফল বাংলার গাড়িও উদ্বোধন করেন তিনি।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা কৃষি বিপনন দফতর সূত্রে গেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জন্য ৮ টি ভ্রাম্যমান সুফল বাংলার গাড়ি রয়েছে। দুর্গাপুরে ২২ টি ও আসানসোলে ৩ টি সহ জেলায় মোট ২৫ টি সুফল বাংলার পয়েন্টের করা হয়। সপ্তাহে ২-৩ দিন সুফল বাংলার ভ্রামমান্য গাড়ি টাটকা সবজি নিয়ে শহরের নির্দিষ্ট করা ওই পয়েন্টে পৌঁছে যাবে। সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত থাকবে সুফল বাংলার গাড়ি। পয়েন্টে ঢোকার সময় বাসিন্দাদের জানান দিতে সাইরেন বাজিয়ে যাবে। থাকবে মাইকিংয়ের ব্যাবস্থা। এছাড়াও গাড়িতে থাকবে কম্পিউটারাইজি ওজন ও বিলিংয়ের ব্যাবস্থা। অভিযোগ লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির বাজারে উধাও সুফলবাংলার ভ্রাম্যমাণ গাড়ি।
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা