মৃত্যু গুয়াহাটিতে ছুরিকাহত মহিলার, গ্রেফতার অভিযুক্ত একতরফা প্রেমিক
মৃত্যু গুয়াহাটিতে ছুরিকাহত মহিলার, গ্রেফতার অভিযুক্ত একতরফা প্রেমিক
ছবিতে ক্রমশ মৌসুমী গগৈ, রাস্তায় ছুরিকাহত মৌসুমি এবং হামলাকারী ভূপেন দাস


গুয়াহাটি, ২৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন গুয়াহাটিতে ছুরিকাহত মহিলা মৌসুমী গগৈ। গ্রেফতার করা হয়েছে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী অভিযুক্ত একতরফা প্রেমিক ভূপেন দাসকে। ভূপেনকে হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে। ঘটনা আজ বৃহস্পতিবারের।

আজ সকালে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য গুয়াহাটির লাস্টগেট এলাকায় নাহরনি পথে তাঁর ভাড়া বাড়ির বাইরে রাস্তার পাশে র্যা পিডো বাইকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মৌসুমী গগৈ নামের মহিলা। প্রকাশ্য রাস্তায় তখন একটি সুইফট ডিজায়ার এসে তার কাছে গতিরোধ করে। গাড়ি থেকে এক যুবক নেমে তাকে ছুরি দিয়ে হামলা করে ফের গাড়িতে ওঠে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনা দেখে প্রত্যক্ষদর্শী এবং কিছু দূরে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী এসে ছুরিকাহত মৌসুমীকে গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ডাক্তারদের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টা বিফল করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মৌসুমী। মৌসুমীর হাত, পেট ও গলায় ছুরি বসিয়েছে হামলাকারী ভূপেন।

রাজ্যের পুলিশ-প্রধান (ডিজিপি) জ্ঞানেন্দ্ৰপ্ৰতাপ সিং জানান, ঘটনার দৃশ্য সংবলিত একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। ছুরি দিয়ে মহিলাকে হামলাকারী ভূপেন দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডিজিপি আরও জানান, ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী হাউসিং কমপ্লেক্স এলাকা গিয়ে হামলাকারী ভূপেন দাস আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। তাকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে, চিকিৎসা চলছে।

এদিকে আইজিপি ড. পার্থসারথি মহন্তের কাছে জানা গেছে, ছুরিকাঘাতে নিহত মৌসুমী গগৈ একটি দশ বছরের সন্তানের মা। মূলত তিনি ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা। বছর কয়েক আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানকে নিয়ে তিনি গুয়াহাটি চলে আসেন। এখানে একটি এনজিও-য় চাকরি নেন তিনি। চাকরির সুবাদে লাস্টগেট এলাকায় নাহরনি পথে একটি বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন মৌসুমী গগৈ।

ইত্যবসরে গত প্রায় চার বছর আগে নলবাড়ির সরিয়াহতলি গ্রামের বাসিন্দা দুই সন্তানের বাবা ক্যাব-চালক ভূপেন দাসের সঙ্গে কোনওভাবে মৌসুমীর পরিচয় হয়। সে থেকে ভূপেন দাস বার বার প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে মৌসুমীকে। মৌসুমী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও মৌসুমীকে প্রেমের জালে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করে ভূপেন। শেষ অস্ত্র হিসেবে এক সময় সে মৌসুমীকে প্ৰাণনাশের হুমকি দিতে থাকে।

অন্যদিকে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সম্প্রতি পানবাজার মহিলা থানায় কথিত প্রেমিক ভূপেন দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৌসুমী গগৈ। অভিযোগনামায় মৌসুমী নাকি লিখেছেন, তার সঙ্গে প্রেম না করলে ভূপেন তাঁকে চূড়ান্ত পরিণতির (মেরে ফেলার) হুমকি দিচ্ছিল।

এদিকে গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট অভিজিত শর্মা জানান, ‘ভূপেন কিছু অজানা পদার্থ, সম্ভবত কেরোসিন খেয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।’

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande