(রাউন্ড আপ) আমরোহায় আয়োজিত বিশাল জনসভা থেকে উত্তর প্রদেশের জনগণকে ৪ জুন ৪০০ পার করার আহ্বান মোদীর
আমরোহা, ১৯ এপ্রিল (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের আমরোহায়
(রাউন্ড আপ) আমরোহায় আয়োজিত বিশাল জনসভা থেকে উত্তরপ্রদেশের জনগণকে ৪ জুন ৪০০ পার করার আহ্বান মোদীর


আমরোহা, ১৯ এপ্রিল (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের আমরোহায় আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন এবং উত্তরপ্রদেশের জনগণকে রাজ্যের প্রতিটি আসনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এনডিএকে বিজয়ী করার সাথে ৪ জুন ৪০০ পার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিন অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী শ্রী যশবন্ত সিং সাইনি এবং আমরোহা লোকসভার প্রার্থী শ্রী কানওয়ার সিং তানওয়ার এবং অন্যান্য বরিষ্ঠ নেতারা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি রাজ্যে দুর্নীতি, পরিবারন্ত্র এবং তোষণের রাজনীতি করার জন্য কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টির জোটকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রয়াসে বিজেপি সরকার আমরোহার ঢোলকে জিআই ট্যাগ দিয়ে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরোহার ঢোলের তাল ধ্বনিত হয় বহুদূর। জনগণের উচ্ছ্বাস দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, এখন আমরোহার একটিই ধ্বনি, পদ্মে ছাপ এবং একটিই প্রতিধ্বনি- 'আবারও বিজেপি সরকার'। আমরোহা শুধু ঢোলক বাজায় না, সমগ্র বিশ্বে ভারতের জয়ধ্বনি বাজায়। ক্রিকেট বিশ্বকাপে মহম্মদ শামি যে চমক দেখিয়েছেন তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। খেলাধুলায় তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য বিজেপি সরকার তাকে অর্জুন পুরস্কার দিয়েছে। উত্তর প্রদেশ সরকার আমরোহার যুবকদের জন্য একটি স্টেডিয়ামও তৈরি করছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন দেশের ভবিষ্যতের নির্বাচন, এই নির্বাচনে জনগণের প্রতিটি ভোট ভারতের ভাগ্য নিশ্চিত করতে চলেছে।

মোদী বলেছেন, বিজেপি সরকার গ্রামীণ ও দরিদ্রদের উন্নয়নের জন্য বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু ইন্ডি জোটের নেতারা পুরো শক্তি নিয়ে গ্রামগুলিকে পিছিয়ে রাখতে ব্যয় করছে। এই মানসিকতা থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমরোহা ও পশ্চিম উত্তর প্রদেশের। দিল্লি-এনসিআরের এত কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও আমরোহা এর থেকে কোনও সুবিধা পায়নি। ইন্ডি জোট দলগুলির শাসনকালে উত্তর প্রদেশ পিছিয়ে পড়ার জন্য পরিচিত ছিল, কিন্তু এখন উত্তর প্রদেশ এক্সপ্রেসওয়ের রাজ্য হিসাবে পরিচিত।

এখন উত্তর প্রদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। আমরোহা এবং গজরৌলার রেল স্টেশনগুলিকে আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে এবং বন্দে ভারত-এর মতো ট্রেনগুলি প্রতিটি রুটে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। আমরোহাতেও গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে। এখানকার শিল্পগুলি এই সমস্ত যোগাযোগ কাজের দ্বারা উপকৃত হচ্ছে। বিজেপি সরকার দেশে টেক্সটাইল শিল্পের প্রচারের জন্য একটি টেক্সটাইল পার্ক তৈরি করছে, আমরোহার পোশাক শিল্পও এর থেকে উপকৃত হবে এবং আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বিজেপি সরকার আমরোহাতে একটি অঙ্গীকার পার্ক এবং শিল্প পার্কও তৈরি করছে যা ক্ষুদ্র শিল্পকে সাহায্য করবে। আমরোহার মানুষও বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা এবং মুদ্রা যোজনার সুবিধা পাচ্ছে। মোদী সরকার গত ১০ বছরে যে কাজ করেছে তা কেবল একটি ট্রেলার, উত্তর প্রদেশ এবং দেশকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের সরকারগুলি শুধু সামাজিক ন্যায়বিচারের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। জ্যোতিবা ফুলে, বাবা সাহেব আম্বেদকর এবং চৌধুরী চরণ সিংয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য মোদী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। তিন তালাকের বিরুদ্ধে আইন এনে মুসলিম বোনদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করেছে বিজেপি সরকার। বিজেপি সরকার প্রতিটি বাড়িতে জল, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ করে মহিলাদের জীবন সহজ করেছে। দেশের গরিবদের বহু প্রজন্ম বিদ্যুৎ, জল ও ঘর ছাড়াই পার করেছে, কিন্তু গরিবের ছেলে মোদী দিনরাত পরিশ্রম করেছেন এই সমস্যা থেকে গরিবদের বের করে আনতে। বিজেপি সরকার গত ১০ বছরে গরিবদের জন্য যে ৪ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করেছে, তার মধ্যে বেশিরভাগ সুবিধাভোগী এসসি, এসটি এবং ওবিসি। ভারতীয় জনতা পার্টি নিজস্ব সংকল্প পত্রে দেশে আরও ৩ কোটি পাকা বাড়ি তৈরির ঘোষণা করেছে।

মোদী বলেছেন, তৃতীয় বিজেপি সরকারে, যারা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের সুবিধা পাননি, তারা সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় বঞ্চিত মানুষজনকে সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, আমরোহা সহ সমগ্র পশ্চিম উত্তর প্রদেশ নিজস্ব কৃষকদের জন্যও পরিচিত। কংগ্রেস, এসপি এবং বিএসপি সরকারগুলি এই অঞ্চলের কৃষকদের সমস্যার কোনও সমাধান করেনি, তবে বিজেপি সরকার কৃষকদের সমস্যা কমাতে দিনরাত কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির আওতায় আমরোহার কৃষকদের মধ্যে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার সুবিধা বিতরণ করা হয়েছে। আমেরিকায় যে ইউরিয়ার ব্যাগের দাম ৩০০০ টাকা, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কৃষকদের ৩০০ টাকার কম দামে সরবরাহ করছে। বিজেপির রাজ্য সরকার আখের দাম বাড়িয়েছে। আমরোহার আখ চাষিরা কখনই ভুলতে পারে না যে তাদের আগে অর্থ প্রদানের জন্য কতটা হয়রানি করা হয়েছিল, কিন্তু এখন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের অধীনে আখ কেনার পাশাপাশি রেকর্ড অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। এসপি সরকারের আমলে আমরোহার আখ চাষিদের বছরে গড়ে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হত, কিন্তু এখন বিজেপি সরকারের অধীনে প্রতি বছর এখানে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। এক সময়ে, উত্তর প্রদেশের চিনিকলগুলি দ্রুত বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু বিজেপি সরকার হাসানপুর মিলের ক্ষমতা দ্বিগুণ করার জন্য কাজ করছে এবং আমরোহাতে একটি ইথানল প্ল্যান্টও স্থাপন করেছে। বিজেপি সরকার আম বিক্রি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্যও কাজ করছে। আম প্রক্রিয়াকরণের জন্য ম্যাঙ্গো প্যাক প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসপি ও কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন যে, উত্তর প্রদেশে দুই যুবরাজের শুটিং চলছে, কিন্তু জনগণ ইতিমধ্যেই এই দুই যুবরাজের সিনেমাকে ফ্লপ বানিয়ে দিয়েছে। প্রতিবারই এসপি এবং কংগ্রেসের নেতারা তোষণের কথা বলে উত্তর প্রদেশের জনগণের কাছে ভোট চাইতে যায়। এসপি সরকার পবিত্র টিগরি মেলায় বাধা সৃষ্টি করত। আর আমরোহার কংগ্রেস প্রার্থীর তো ভারত মাতা কি জয় বলাতেও আপত্তি। যার ভারত মাতা কি জয় বলতে আপত্তি, তার ভারতের পার্লামেন্টে যাওয়া শোভা পায় না। নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার জন্য এসপি এবং কংগ্রেস অযোধ্যায় রামলালার অধিষ্ঠানের অনুষ্ঠানও প্রত্যাখ্যান করেছিল। শুধু আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেই সন্তুষ্ট হয়নি, নিজেদের ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করতে রামমন্দির এবং সনাতন ধর্মকে কটাক্ষও করে এরা। আজ যখন গোটা দেশ রামের নাম করছে, তখন সমাজবাদী পার্টির লোকেরা প্রকাশ্যে রামভক্তদের কটাক্ষ করছে। ইন্ডি জোটের নেতারা সনাতন ধর্মকে ঘৃণা করে।

মোদী বলেন যে, কয়েকদিন আগে তিনি যখন দ্বারকায় গিয়েছিলেন এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মত অনুযায়ী সমুদ্রের নীচে থাকা আদি দ্বারকায় ভক্তির সঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা করেছিলেন, তা নিয়েও কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে কংগ্রেস নেতারা আমাদের হাজার বছরের পুরনো আস্থা ও বিশ্বাসকে এভাবেই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। যে নেতারা নিজেদেরকে যদুবংশী বলে প্রচার করে তারাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকাকে অপমান করা দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। তোষণের এই খেলা উত্তর প্রদেশকে দাঙ্গার আগুনে পুড়িয়েছে। উত্তর প্রদেশের মানুষ সেই দিনগুলো ভুলতে পারবে না। উত্তর প্রদেশে সেসময় প্রতিদিন দাঙ্গা হতো, লোকেদের পালিয়ে যেতে হতো। মহিলারাও নিরাপদ ছিল না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ উত্তর প্রদেশকে অপরাধীদের হাত থেকে মুক্ত করেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে ৪০০ পার করার স্লোগানটি বাস্তবায়িত করার জন্য কোন রাজ্যে কত আসন বাড়বে। তিনি বলেন যে, ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ মাত্র ২ বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাত বছরে শ্রী যোগী আদিত্যনাথ সুশাসন, আইনশৃঙ্খলা এবং উন্নয়নের অর্থ বুঝিয়ে দিয়েছেন এরাজ্যে। সেই কারণেই উত্তর প্রদেশে শ্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে বিজেপি ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে। ২৬ এপ্রিল স্থানীয় প্রার্থী শ্রী কানওয়ার সিং তানওয়ারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়ী করে দেশে আবারও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোদী সরকার গঠন করার জন্য জনগণের কাছে আবেদন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।

হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি/ রাকেশ/ সৌম্যজিৎ




 

 rajesh pande