(রাউন্ড আপ) দামোহে আয়োজিত বিশাল জনসভা থেকে রাজ্যের প্রতিটি আসনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজেপি সরকার গঠনের আহ্বান মোদীর
দামোহ, ১৯ এপ্রিল (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের দামোহে আয়
(রাউন্ড আপ) দামোহে আয়োজিত বিশাল জনসভা থেকে রাজ্যের প্রতিটি আসনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজেপি সরকার গঠনের আহ্বান মোদীর


দামোহ, ১৯ এপ্রিল (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের দামোহে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন এবং মধ্যপ্রদেশের জনগণকে এবার রাজ্যের প্রতিটি আসনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি এবং খাজুরাহো লোকসভা প্রার্থী শ্রী বিষ্ণু দত্ত শর্মা এবং দামোহ লোকসভা প্রার্থী শ্রী রাহুল লোধি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নেতারা অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি গত ১০ বছরে বিজেপি সরকারের উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তিগুলি তুলে ধরেন এবং আবারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে দেশে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার গঠনের এবং ইন্ডি জোট এবং কংগ্রেসকে সনাতন বিরোধী ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে তীব্র নিশানা করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন শুধু সাংসদ নির্বাচনের জন্য নয়, দেশের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য। আগামী ৫ বছরে ভারতকে বিশ্বের একটি বড় শক্তিতে পরিণত করতেই এই নির্বাচন। বিশ্বে যখন যুদ্ধের পরিবেশ, তখন ভারতে একটি শক্তিশালী সরকারকে যুদ্ধের নিরিখে কাজ করতে হবে। একমাত্র নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারই এই কাজ করতে পারে। বিগত ১০ বছরে দেশ দেখেছে একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে। করোনার সময় সমগ্র বিশ্বে হাহাকার ছিল, কিন্তু দেশের শক্তিশালী বিজেপি সরকার সারা বিশ্ব থেকে ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। বিজেপি সরকার কোটি কোটি ভারতীয়কে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছে এবং তাদের করোনা থেকে রক্ষা করার জন্য ভ্যাকসিনের ডোজও দিয়েছে। দেশে এখন এমন একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সরকার আছে, যা কাউকে ভয় করে না, কারও সামনে মাথা নত করে না। দেশ সর্বাগ্রে নীতিতে কাজ করে ভারতীয় জনতা পার্টি, দেশের স্বার্থে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মোদী বলেন, এখন বিশ্বের অনেক দেশের অবস্থা খারাপ, অনেক দেশ দেউলিয়া হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। সন্ত্রাসের যোগানদাতা ভারতের প্রতিবেশী দেশ এখন আটা সরবরাহের জন্য আকুল। এমন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে, ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্রুত বিকাশ করছে। এখন ভারত বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে, যার জন্য প্রত্যেক ভারতীয় গর্বিত। দেশের মানুষের ভোটের কারণেই এসব হয়েছে। মোদী সরকারের স্লোগান ফের শোনা যাচ্ছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টরকে কয়েক দশক ধরে দুর্বল করে রেখেছে। কংগ্রেস সরকার সেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্র কেনার সময় নিজেদের সুবিধার দিকে আরও মনোযোগ দিয়েছে। এই লোকেজন নিজেদের সমস্ত শক্তি দিয়ে দেশের বায়ুসেনাকে দুর্বল করার এবং রাফাল বিমান থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছিল। এখন দেশে কংগ্রেসের সরকার থাকলে ভারতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমান আকাশের উচ্চতা ছুঁতে পারত না। বিজেপি সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্বনির্ভর ও ক্ষমতায়িত করেছে। বর্তমানে ভারত এমন একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে যা অন্যান্য দেশে অস্ত্র রফতানি করে। গত বছরে ভারত অন্যান্য দেশের কাছে ২১ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র বিক্রি করেছে। ভারতও ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র রফতানির দিকে এগোচ্ছে। কিছু সময়ের মধ্যেই ব্রহ্মোস মিসাইলের প্রথম চালান যাচ্ছে ফিলিপিন্সে। এ জন্য আমি সকল দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই।

শ্রী মোদী বলেছেন, ২০১৪ সালের আগে সারা দেশে হতাশার পরিবেশ ছিল। ২০১৪ সালে মোদী দেশবাসীর মধ্যে একটি আশা হিসাবে এসেছিলেন, যাকে সমগ্র দেশ আশীর্বাদ করেছিল। ২০১৯ সালে মোদী দেশে আস্থা এনেছিল, কিন্তু এখন মোদী দেশে গ্যারান্টি নিয়ে এসেছে। মোদীর গ্যারান্টি মানে গ্যারান্টি পূরণের নিশ্চয়তা। মোদীর গ্যারান্টি দেশের দরিদ্র, কৃষক, যুবক এবং মা-বোনেরা সহ প্রতিটি সুবিধাভোগী শতভাগ সুবিধা পাবে। গত ১০ বছরে মধ্যপ্রদেশের ৪০ লক্ষেরও বেশি পরিবার স্থায়ী বাড়ি পেয়েছে। বিজেপি সংকল্প নিয়েছে, আগামী বছরগুলিতে ৩ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। মোদীর গ্যারান্টি হল মোদী সরকার আগামী ৫ বছরে এই সমস্ত সুবিধা প্রদান করবে এমন সমস্ত ব্যক্তিদের যারা এখনও গ্যাস সংযোগ, পাইপের জল এবং স্থায়ী বাড়ি পাননি। বিজেপি কর্মীরা যখন এটা জনগণকে বলেন, তখন তাদের কাছে সেই কর্মীই হবে মোদী। আমার কাছে দেশের মানুষ ও দলের কর্মীরা মোদী। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন যাদবও স্থায়ী বাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখেননি এবং জনগণকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, প্রতিটি পরিবারের জন্য রেশন এবং চিকিত্সা গুরুত্বপূর্ণ। তাই মোদী আগামী আরও পাঁচ বছরের জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যাতে দরিদ্র ও শিশুরা ক্ষুধার্ত না থাকে। মোদী আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে ৭০ বছরের বেশি প্রত্যেক বয়স্ক ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিত্সা পরিষেবা দেওয়ার কথা বলেছেন। প্রতিটি ঘরে জলের সংযোগ এবং প্রতিটি চাষের জমিতে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বিজেপি। বুন্দেলখণ্ডের জল সমস্যা মেটাতে সম্পূর্ণভাবে চেষ্টা করছেন মোদী সরকার। পঞ্চম নগর প্রকল্পের সেচের চাহিদা মেটাতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে কেন বেতওয়া লিংক ক্যানেলের কাজ দ্রুত শেষ করছে বিজেপি সরকার। বিজেপি সরকারের আমলে মধ্যপ্রদেশে হর ঘর জল প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৭০ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সূর্যঘর প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুত থেকে উপার্জনের নিশ্চয়তাও দিয়েছেন মোদী। যাদের গ্যারান্টি দেওয়ার মতো কিছু নেই তাদের গ্যারান্টি হয়েছেন মোদী। আগের সরকারের আমলে বঞ্চিত মানুষ, দরিদ্র, দলিত, জনজাতি সম্প্রদায়ের যুবকরা কোনও ব্যবসা করতে পারত না, কারণ তাদের ব্যাংকে বন্ধক রাখার মতো কিছু ছিল না। কিন্তু মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে মোদী এই যুবকদের লক্ষ কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। বিজেপি সংকল্প পত্রে মুদ্রা ঋণের পরিমান ১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি সরকারের স্বনিধি প্রকল্পের মাধ্যমে ঠেলাওয়ালা, ফুটপাথের দোকানিরা ব্যাঙ্ক থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে এবং এখন গ্রামের বিক্রেতাদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

শ্রী মোদী বলেন যে, বিজেপি বিকশিত ভারত গড়তে নারী শক্তিকে আরও শক্তিশালী করছে। দেশের মহিলারা উজ্জ্বলা যোজনা, জন ধন যোজনা সোহো সমস্ত প্রকল্পর সুবিধা পেয়েছে। আগে দেশে মহিলাদের নামে কোনও সম্পত্তি ছিল না, কিন্তু মোদী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে মহিলাদের নামে কোনও সম্পত্তি নিবন্ধিত করেছেন। গত ১০ বছরে, ১০ কোটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যোগদান করেছে। এখন পর্যন্ত এক কোটি মহিলা লাখপতি দিদি হয়েছেন।মোদী আরও তিন কোটি মহিলাকে লাখপতি দিদি করার গ্যারান্টি দিয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্ডি জোটকে আক্রমণ করে বলেন, দেশের মানুষই হলেন মোদীর পরিবার। কিন্তু মোদীর গ্যারান্টি পরিবারতান্ত্রিক ও দুর্নীতিবাজ নেতাদের অস্থির করে তুলছে। ইন্ডি জোটের লোকেরা প্রতিদিন মোদীকে হুমকি দিচ্ছে, কিন্তু মোদী এই হুমকিতে আগেও ভয় পাননি এবং এখনও ভয় পান না। বুন্দেলখণ্ড রামরাজ্যের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত। ভগবান রাম ওরছায় রাজা হিসেবে উপবিষ্ট। বুন্দেলখণ্ডের মানুষ দেখছে কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটের নেতারা কীভাবে আমাদের বিশ্বাসকে অপমান করে। বিরোধী নেতারা সনাতন ধর্মকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার সঙ্গে তুলনা করেন এবং ভগবান শ্রী রামের যারা পূজা করে তাদের ভণ্ড বলে। এরা অযোধ্যার রাম মন্দিরেরও বিরোধিতা করে। ইন্ডি জোটের নেতারা ভোট ব্যাংকের রাজনীতির জন্য রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবসের আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অথচ বাবরি মসজিদের হয়ে কয়েক দশক ধরে আদালতে লড়াই করা আনসারি পরিবার রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল। বিজেপি-এনডিএ জোটকে জনগণের দেওয়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে বিজেপির সরকার গঠনের পাশাপাশি একটি বিকশিত ভারতের স্বপ্নও পূরণ করবে।

হিন্দুস্থান সমাচার / সোনালি/ রাকেশ/ সৌম্যজিৎ




 

 rajesh pande